এক দিকে ২৪টি রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন কোকরাঝাড়ে স্থায়ী শান্তির সন্ধানে মিলিত হল, অন্য দিকে, মুম্বই অবধি ছড়িয়ে পড়ল অসমের সংঘর্ষের আগুন। এই পরিস্থিতিতে তরুণ গগৈ সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি অসমের সংঘর্ষ নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিলেন। ডাকলেন সর্বদলীয় বৈঠক। এই সঙ্গেই সিবিআইয়ের দুই তদন্তকারীর এক জন সংখ্যালঘু হওয়ায় তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে।
আজ কোকরাঝাড়ের পূর্তভবনের অতিথিশালায় বিপিএফ, আক্রাসু, নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সভা, নেপালি সাহিত্য পরিষদ, গারো সাহিত্য সভা, অল সাঁওতালি ছাত্র সংস্থা, অখিল হিন্দিভাষী যুব ছাত্র পরিষদ, সারা বিটিএডি কোচ রাজবংশী সম্মিলনী-সহ ২৪টি রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন বৈঠকে মিলিত হয়। যৌথ মঞ্চের প্রতিনিধিরা বামুনগাঁও, কারিগাঁও, ডাওলাবাড়ি ও মাগুরমারি সফর করেন। সম্ভবত সোমবার নমনি অসম আসতে চলেছেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী। যৌথ মঞ্চের চেয়ারম্যান মাতলা হেমব্রম মঞ্চের তরফে সনিয়ার হাতে স্মারকলিপি তুলে দেবেন। মঞ্চের তরফে কে সালিম আলিকে সরিয়ে তাঁর স্থানে কোনও অ-বড়ো ও অ-সংখ্যালঘুকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার আর্জি জানানো হচ্ছে। এলাকায় পুরোপুরি শান্তি না ফেরা অবধি সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখার আর্জিও জানানো হয়েছে। জমির পাট্টা না থাকা শরণার্থীদের পুনর্বাসনেও যৌথ মঞ্চ আপত্তি জানায়।
অগপ সভাপতি প্রফুল্ল মহন্তর নেতৃত্বে ২০জনের একটি প্রতিনিধি দল নিম্ন অসম সফর করছেন। আজ ধুবুরিতে মহন্ত বলেন, “সব সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষই নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন। এই অবস্থায়, জোর করে সরকার নির্ধারিত ১৫ অগস্ট তারিখের মধ্যে শরণার্থীদের ঘরে ফেরা সম্ভব নয়।” তাঁর মতে, অসম চুক্তির রূপায়ণ না হওয়া ও বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত না পাঠানোর ফলেই এই সমস্যা। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ অবশ্য অগপর এই অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, “ক্ষমতায় থাকার সময় অগপ ও বিজেপি বাংলাদেশি বিতাড়নে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। যা ব্যবস্থা নেওয়ার আমরাই নিয়েছি। বিজেপি সংসদে বলেছে, বড়োভূমিতে থাকা শরণার্থীরা বাংলাদেশি। এ কথাও সম্পূর্ণ মিথ্যা।” মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, নিম্ন অসম ও বড়োভূমিতে সংঘর্ষ নিয়ে তিনি শীঘ্রই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকবেন। সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি সংঘর্ষ নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তেরও নির্দেশ দেন তিনি।
নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আজ এক বিবৃতিতে অসমের অবস্থা ‘নিয়ন্ত্রণে’ বলে দাবি করেছে। এ দিকে কোকরাঝাড় সফররত সিবিআই তদন্ত দল গোষ্ঠী সংঘর্ষের সাতটি মামলা তদন্তের জন্য বেছে নিয়েছে। |