দলীয় কর্মীকে ছাড়াতে দলবল নিয়ে থানায় হামলা চালানো ও কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের মারধর করার অভিযোগ উঠল সিপিএমের জেলা সম্পাদকের ছেলে-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে দুবরাজপুর থানায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গপাধ্যায়ের ছেলে অভীক এবং রাজেশ দাঁ, তপন সাহা ও খোকন দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “ওই হামলায় দুবরাজপুর থানার ওসি-সহ চার পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। ধৃতদের শুক্রবার দুবরাজপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক হিমানীল ভট্টাচার্য তাঁদের ৬ দিন জেল হাজতে থাকার নির্দেশ দেন। ধৃতদের ফের ১৬ অগস্ট আদালতে হজির করানো হবে।” |
আদালতে অভীক গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত। |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মদ্যপ অবস্থায় দুবরাজপুর থানার কুখুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা, সিপিএম কর্মী স্বপন বাগদির বিরুদ্ধে মহুলাগ্রামে তৃণমূলের একটি সভার কাজে বাধা সৃষ্টি করা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এক তৃণমূল নেতাকে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তৃণমূলের সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, ওই দলীয় কর্মীকে গ্রেফতারের ঘণ্টা দু’য়েক পরে সদলবলে দুবরাজপুর থানায় চড়াও হন অভীক। প্রথমে তাঁরা পুলিশকে গলিগালাজ করেন। পরে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি বেধে যায় এবং ওসি সৌম দত্ত-সহ কয়েক জন পুলিশকর্মীর গায়ে হাত তোলেন তাঁরা। অভীক-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হলেও বাকিরা পালিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, সরকরি কাজে বাধা দান, কর্তব্যরত কর্মীদের হুমকি দেওয়া, তাঁদেরকে জখম করা-সহ বিভিন্ন ধারায় ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ভিত্তিহীনভাবে পুলিশ আমাদের এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল। আমার ছেলে-সহ চারজন এ ব্যাপারে থানায় জিজ্ঞাসা করতে গিয়েছিল, কেন এ ভাবে ওই কর্মীকে ধরা হল। সেই সময় পুলিশ ওদের গ্রেফতার করে।” তবে পুলিশের উপর চড়াও হয়ে মারধরের আভিযোগ প্রসঙ্গে দিলীপবাবুর জবাব, “তর্কাতর্কি হতে পারে। তবে এটা কি বিশ্বাসযোগ্য, যে চার জন মিলে পুলিশকে মারধর করেছে?” যদিও তৃণমূল নেতা আশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “যে সিপিএম কর্মীর বিরুদ্ধে আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম সে মদ্যপ অবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আমাকে প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছিল।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “থানায় ঢুকে পুলিশকে মারবে আর পুলিশ ছেড়ে দেবে, সেটা হবে না। আমি মনে করি পুলিশ ঠিক কাজ করেছে।” |