সাসপেন্ডের কথা স্বীকার স্বাস্থ্যকর্তার
কঠোর শাস্তি হোক, চান ভুক্তভোগীরা
সিউড়ি সদর হাসপাতালের ‘বিতর্কিত’ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দেবাশিস দেবাংশীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে বুধবার স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মল্লিক। তিনি বলেন, “যতদিন এই শাস্তি বলবত থাকবে ততদিন তিনি কাজে যোগ দিতে পারবেন না। তবে নিয়ম অনুযায়ী সেই সময়কালে তিনি তাঁর বেতনের ৫০ শতাংশ পাবেন।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসকের ‘গাফিলতি’তে দু’টি শিশুমৃত্যু-সহ গত বছরে ঘটে যাওয়া মূলত তিনটি ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সিউড়ি সদর হাসপাতালের ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
সিউড়ি হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই তিনটি ঘটনা হল গত বছর মার্চে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি ময়ূরেশ্বর থানার পাথাই এলাকার বাসিন্দা এক বধূ টুম্পা দাস বাচ্চা প্রসব করার পরই মৃত্যু হয়েছিল। অভিযোগ চিকিৎসকের গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়েছিল শিশুটির। ওই বছর জুলাই মাসে সিউড়ির ছোট অলুন্দার বাসিন্দা এক সন্তানসম্ভবা বধূ তণুশ্রী বাগদি হাসপাতালে ভর্তি হলেও একটি ইনজেকশন দিয়ে প্রথমে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ঘণ্টা কয়েক পরে ফের ভর্তি হলে তিনি একটি মৃত শিশুর জন্ম দেন। অভিযোগ, শুধুমাত্র চিকিৎসকের ভুলে তাঁকে মৃত বাচ্চা প্রসব করতে হয়েছে। শেষ ঘটনাটি হল নভেম্বর মাসের। দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া জেলার কুসুমনগরের বাসিন্দা অন্তঃসত্বা বধূ রেখা বাউড়ি। কিন্তু ওই বধূ উচ্চরক্ত চাপে ভুগছেন। তাই খিঁচুনি হতে পারে এই কারণ দেখিয়ে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যালে রেফার করে দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। বর্ধমানে যাওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে ওই বধূ চিকিৎসককে অনুরোধ জানালেও তিনি সে কথায় কান দেননি। শেষ পর্যন্ত সিউড়ি থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুবরাজপুর থানার সামনে প্রকাশ্য রাস্তায় বাচ্চা প্রসব করেন রেখা বাউড়ি। এ ক্ষেত্রেও অভিযোগ, চূড়ান্ত কর্তব্যহীনতার এবং প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম ছিল দেবাশিস দেবাংশী। তিনটি ক্ষেত্রেই ওই চিকিৎসকের নামে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই সব বধূ ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগের তদন্তে আসেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রেরিত দুই সদস্য। এত দিন পরে ওই চিকিৎসকের শাস্তির খবর শুনে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়ার পাশাপাশি ওই বধূরা চাইছেন আরও কঠোর শাস্তি হোক ওই চিকিৎসকের। বুধবার বিকেলে তণুশ্রী বাগদি বলেন, “ওই ঘটনার পর গর্ভে আর সন্তান আসেনি। ভবিষ্যতেও আর হয়ত মা হতে পারব না। শুধু মাত্র ওই চিকিৎসকের ভুলে। তাঁকে ক্ষমা করব কী ভাবে।” অন্য দিকে, ঝাড়খণ্ডের বধূ রেখা বাউড়ি বলেন, “ওঁর জন্যই আমাকে রাস্তায় সন্তান জন্ম দিতে হয়েছে। চাই, ওই চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.