কর্মীর বাড়িতে মিলল খোয়া যাওয়া টিভি |
সর্ষের মধ্যেই ভূত! বিমানবন্দর থেকে চুরি যাওয়া টিভি মিলল সেখানকারই কর্মী দেবাশিস সরকারের বাড়িতে। বুধবার বিমানবন্দর সংলগ্ন মতিলাল কলোনিতে তাঁর বাড়িতে হানা দিয়ে এলসিডি টিভিটি উদ্ধার হয়। গ্রেফতার হন দেবাশিসবাবু। তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানান বিমানবন্দরের অধিকর্তা বি পি শর্মা।
বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ভবনের ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে মঙ্গলবার সকালে উধাও হয় ওই টিভি। পুলিশ ও সিআইএসএফ-এর মনে হয়েছিল, কড়া প্রহরা এড়িয়ে কারও পক্ষে টিভি নিয়ে বেরোনো সম্ভব নয়। তাই মঙ্গলবার ওই ভবনে তল্লাশি চালায় সিআইএসএফ। কিন্তু, টিভি মেলেনি। তদন্তে দেখা যায়, রোজ বিমানবন্দর থেকে কালো প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে জঞ্জাল বাইরে যায়। গেটে দাঁড়িয়ে সিআইএসএফ-এর পক্ষে সেই ব্যাগ তল্লাশি করা সম্ভব নয়। তখনই সন্দেহ হয়, কোনও কর্মী জঞ্জালের ব্যাগে টিভি নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। ভিআইপি রুম ও আন্তর্জাতিক ভবনের প্রধান লাউঞ্জে সিসিটিভি না থাকলেও বিমানবন্দরের প্রধান দুই গেটে সিসিটিভি আছে। ক্যামেরায় মঙ্গলবার সকাল থেকে তোলা ছবিতে পুলিশ ও সিআইএসএফ দেখে, সকাল ৭টা ১৪ মিনিটে বিমানবন্দরে ঢোকার গেট দিয়ে এক কর্মী জঞ্জালের কালো প্লাস্টিক ব্যাগ-সহ ট্রলি ঠেলে বেরোচ্ছেন। সন্দেহ হয়, কারণ তিনি কর্মীদের ইউনিফর্ম পরেছিলেন। কিন্তু যাঁরা জঞ্জাল নিয়ে যান, ঠিকাদারের অধীনে কাজ করায় তাঁদের ইউনিফর্ম থাকে না। সিসিটিভি-র ছবি খারাপ থাকায় ওই ব্যক্তির মুখ বোঝা যায়নি। কিছু কর্মীকে ওই ছবি দেখালে তাঁরাই প্রথম দেবাশিসবাবুর নাম বলেন।
পুলিশের দাবি, দেবাশিসবাবু জেরায় বলেছেন, মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে ডিউটি থাকলেও সাতটার মধ্যেই চলে আসেন তিনি। লিফ্টে ওঠার মুখে ভিআইপি লাউঞ্জের খোলা দরজায় উঁকি মেরে দেখেন, কেউ নেই। অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে টিভিটি। নিজে ‘হাউস-কিপিং’ দফতরে পিওনের কাজ করায় জঞ্জালের প্লাস্টিক পেতে সময় লাগেনি। টিভি প্লাস্টিকে ভরে ট্রলিতে চাপিয়ে নির্বিঘ্নে বেরিয়ে আসেন। ইউনিফর্ম পরা কর্মীকে ট্রলি ও কালো প্লাস্টিক নিয়ে বেরোতে দেখে সন্দেহ হয়নি সিআইএসএফ-এরও। সাইকেলে টিভি নিয়ে বাড়ি যান দেবাশিসবাবু। টিভি রেখে বিমানবন্দরে ফিরে কাজ করেন। বুধবার জানান, শরীর খারাপ বলে আসবেন না।
বিমানবন্দরে সূত্রের খবর, মাসে প্রায় তিরিশ হাজার টাকা বেতন পাওয়া দেবাশিসবাবুর বিরুদ্ধে এর আগেও ছোটখাটো হাত-সাফাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বাবা বিমানবন্দরে একই চাকরি করতেন। তিনি অবসর নিলে দেবাশিসবাবু সেই চাকরি শুরু করেন। |