আজ, বুধবার থেকে গৌড় বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ, বিএসসি, বিকম প্রথম বর্ষের অনার্সের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। অথচ পরীক্ষা শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগেই মঙ্গলবার কয়েক হাজার পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড না-পাওয়ায় কলেজে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদনপত্র পূরণ করেননি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের নামে অ্যাডমিট কার্ড পাঠিয়ে দিয়েছে। অ্যাডমিট কার্ড বিভ্রাটের জন্য গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়কে দূষছে। জেলার একাধিক কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে ছাত্র সংগঠনগুলি। যদিও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার মাধব চন্দ্র অধিকারী বলেন, “সফটওয়্যারের গোলমালের জেরে কয়েকটি কলেজে অ্যাডমিট কার্ডের সামান্য গোলমাল হয়েছে। আজ সকালে বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পরেই ওই সমস্ত কলেজগুলিকে ‘প্রভিশনাল অ্যাডমিট কার্ড’ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। আশা করছি, অ্যাডমিট কার্ডের কোনও সমস্যা থাকবে না।” এ দিকে পরীক্ষার ২৪ ঘণ্টা আগে অ্যাডমিট কার্ড না আসায় ক্ষুব্ধ পরীর্ক্ষাথী চাঁচল, সামসি, গৌড় কলেজে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।
গৌড় কলেজের অধ্যক্ষ প্রাণতোষ সেন বলেন, “আমার কলেজে অনার্সের ২০০ পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড এখন এসে পৌঁছয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে জানালে একটা মেল পাঠিয়ে আমাদের বলছে তোমরাই কলেজে অ্যাডমিট কার্ড জেনারেট করে পরীক্ষার্থীদের বিলি করে। পরীক্ষাথীদের কাছ থেকে ছবি সংগ্রহ করে তা অ্যাডমিট কার্ডে লাগিয়ে দিতে বলেছে। অধ্যক্ষ ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে এই বঞ্চনা করার অধিকার কে দিয়েছে? আমার দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে কোনদিন এই অরাজক অবস্থা দেখিনি।” চাঁচল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গাহুল আমিন জানান, তাঁর কলেজে ৪৫৭ অনার্সের পরীক্ষার্থী। এদিন পর্যন্ত ১২২ জন পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছায়নি। শুধু তাই নয়, ফর্ম ফিলাপ করে নি এমন ১০১ জন ছাত্রছাত্রীর অ্যাডমিট কার্ড পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপ। এ ছাড়া যে সমস্ত পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে, তাঁদের উপস্থিতি নথিভুক্ত করার কাগজ বিশ্ববিদ্যালয় পাঠায়নি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, “কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিল না কী ভাবে বুঝব? আজ অ্যাডমিট কার্ড না পেয়ে পরাক্ষার্থীরা আমাকে ঘেরাও করে দীঘর্ক্ষণ বিক্ষোভ দেখিয়েছে। কোনও রকমে পরীক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছি। কী ভাবে কালকে পরীক্ষা নেব বুঝতে পারছি না।” সামসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রলয় ঘোষ বলেন, “আমার কলেজে ক্যাজুয়াল ১৫০ জন পরীক্ষার্থীর অ্যডমিট কার্ড আসেনি।” অ্যাডমিট কার্ড বিভ্রাটের জেরে পরীক্ষার্থীরা অ্যডমিট কার্ড না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি কৌশিক দাস বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতিতে পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যাদের জন্য আজকে পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে আমরা আন্দোলনে নামব।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনিমেষ সিংহ বলেন, “একজন পরীক্ষার্থী কালকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় তা হলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেব।” |