মল্লিকঘাট ফুলবাজারকে নতুন করে সাজাতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই আলো বসানো থেকে শুরু করে পানীয় জল ও নিকাশির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে বাজার আধুনিকীকরণের কাজ না হওয়ায় কেন্দ্রের অনুমোদিত যে টাকা ফেরত গিয়েছিল, তা ফের পাওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছে রাজ্য খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন বিভাগ। বিভাগীয় মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, “ইতিমধ্যেই মল্লিকঘাট ফুলবাজারের উন্নতির জন্য কাজ শুরু করেছি। কেন্দ্রের কাছে ফেরত যাওয়া টাকা যদি আবার পাওয়া যায়, তা হলে এই কাজ আরও দ্রুত হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চান মল্লিকঘাট ফুলবাজারের আধুনিকীকরণের কাজ দ্রুত হোক।”
বাম সরকার মল্লিকঘাট ফুলবাজারের আধুনিকীকরণের জন্য কেন্দ্রের শিল্প-বাণিজ্য দফতরের কাছে ২৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিল। ২০০৬ সালে প্রথম দফায় পাঁচ কোটি টাকার অনুমোদনও পাওয়া যায়। কিন্তু তার পরেও কার্যত কোনও কাজই হয়নি বলে অভিযোগ। তাই অনুমোদিত টাকার অধিকাংশটাই ফেরত চলে যায়। ফলে মল্লিকঘাট ফুলবাজারের ছবিটা একই থেকে যায়। বর্ষাকালে সেই কাদা প্যাচপ্যাচে রাস্তা, পচা ফুলের স্তূপ, খারাপ শৌচাগার ও যথাযথ পানীয় জলের অভাব।
তবে ফুলবাজারের এই চেহারাটা কিন্তু গত কয়েক মাসে একটু করে পাল্টাতে শুরু করেছে। রাজ্যের উদ্যান পালন বিভাগের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, মল্লিকঘাট ফুলবাজারে নতুন পরিচালন সমিতি তৈরি হয়েছে। মল্লিকঘাট ফুলবাজার উন্নয়ন কমিটি, সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতি এবং রাজ্য সরকারের কয়েকটি বৈঠকের পরে কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন বিভাগের আধিকারিক তথা ফুলবাজার উন্নয়ন কমিটির সদস্য শিবাজি রায় বলেন, “পুর-সহযোগিতায় বাজারে আলো বসানোর কাজ হচ্ছে। নিকাশির আধুনিকীকরণের কাজ চলছে। ফুল ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা করছি। বাজারের মধ্যেই জৈব সার তৈরির প্রক্রিয়ার পিট বানানোর যে পরিকল্পনা হয়েছিল, তার প্রাথমিক ম্যাপ তৈরির কাজও শেষ।”
কিন্তু এশিয়ার বৃহত্তম ফুলবাজারের উন্নতির জন্য শুধু এটুকু উন্নয়নই যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন ফুল ব্যবসায়ীরা। চাই আধুনিক বাজারের জন্য হিমঘর এবং গাড়ি পার্কিং-এর ব্যবস্থাও। সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, “কাজ হচ্ছে ঠিকই, তবে তা আরও দ্রুত হওয়া দরকার। অবশ্য রাজ্য সরকার যে তৎপরতা দেখাচ্ছে, তাতে আশা করা যায় ফুলবাজারের অপরিষ্কার ছবিটা অনেকটাই পাল্টে যাবে।” |