হলদিয়ায় একই বাড়িতে যে মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ চলছে, তিন-তিন বার পরিদর্শন করার পরেও মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই) সেটা কেন ধরতে পারল না, নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এমসিআই অনুমোদন খারিজ করার আগেই রাজ্য মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন কী ভাবে খারিজ করল, উচ্চ আদালত সেই প্রশ্নও তুলেছে। হলদিয়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আইকেয়ার পরিচালিত মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন খারিজ নিয়ে যে-মামলা চলছিল, মঙ্গলবার তার রায়দান শুরু করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গিরীশচন্দ্র গুপ্ত। এ দিন বেলা ২টোয় বিচারপতি রায় পড়তে শুরু করেন। বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত রায় দেওয়ার পরে তিনি জানান, আজ, বুধবার রায়ের শেষাংশ ঘোষণা করা হবে। বিচারপতি গুপ্ত রায়ের এ দিন রায়ের যে-অংশ পড়েছেন, তাতে এমসিআই-এর ভূমিকার সমালোচনা করেছেন তিনি। কলেজ-কর্তৃপক্ষ তথ্য গোপন করেছিলেন এবং সেই জন্যই ওই মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন খারিজ হয়েছে বলে এমসিআই-এর অভিযোগ। একই ভবনে যে মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ চলছে, কলেজ-কর্তৃপক্ষ এমসিআই-এর কাছে সেই তথ্য গোপন করেছিলেন বলে অভিযোগ। বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, এক ভবনে দু’টি কলেজ চালানো যাবে না, এমন কোনও বিষয় এসসিআই-এর বিধিতে নেই। তাই কীসের ভিত্তিতে ওই মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন বাতিল করা হল, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গুপ্ত। পর্যবেক্ষণে বিচারপতি বলেন, এক বার বা দু’বার নয়, তিন বার এমসিআই ওই কলেজ পরিদর্শন করেছিল। তিন বার পরিদর্শন করেও তারা একই ভবনে দু’টি কলেজ চলার কথা জানতে পারল না, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। শুধু এমসিআই নয়, রাজ্য সরকারেরও সমালোচনা করেছে উচ্চ আদালত। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরেই নতুন সরকার ও রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় হলদিয়ার ওই মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন খারিজ করে দেয়। তার পরেই অনুমোদন খারিজ করে এমসিআই। কিন্তু এমসিআই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই সরকার কী ভাবে ওই কলেজের অনুমোদন খারিজ করে দিল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি গুপ্ত। আবেদনকারীদের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় সওয়ালে বলেন, এমসিআই প্রতি বারেই বলেছে, কলেজের পরিকাঠামো সন্তোষজনক। কলেজ-কর্তৃপক্ষ রাজ্যের কাছে অনুমোদনের আবেদনে জানায়, ১ লক্ষ ৩৩ হাজার বর্গফুট ভবন এলাকার ১৬ হাজার বর্গফুট সাময়িক ভাবে ডেন্টাল কলেজের জন্য ব্যবহৃত হবে। বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত তাঁর পর্যবেক্ষণে এ বিষয়টির উল্লেখ করেছেন।
|