বাড়ি নেই। তাই প্রায় চার মাস ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ফলে কেন্দ্রের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা এবং মায়েরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি ব্লকের অধীনে কামারচক গ্রামপঞ্চায়েতের রামশরণপুর খপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি অবস্থিত়। চালু হওয়ার পর থেকে গ্রামের বিভিন্ন ব্যক্তির বাড়ির দালান বা বারান্দায় তা চলছিল। বছরখানেক ধরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি স্থানীয় বাসিন্দা ফইজুল মোল্লার বাড়ির উঠোনে দোচালা ঘরে চলছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে দোচালা ঘরটির ভাঙাচোরা অবস্থা। এই অবস্থায় সেখানে কেন্দ্রটি চালানো বিপজ্জনক হবে বলে বাড়ির মালিক তা বন্ধ করে দেন। তার পর থেকে প্রায় চার মাস ধরে বন্ধ ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি।
বাড়ির মালিক ফইজুল মোল্লার বক্তব্য, “কেন্দ্রটি চালু থাক তা আমরাও চাই। চাই শিশুরা ও মায়েরা সেখান থেকে পরিষেবা পাক। কিন্তু ঘরটির যেমন অবস্থা তাতে শিশুদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বিষয়টি প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে।”
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি থেকে মূলত পরিষেবা দেওয়া হয় শিশুদের। তাদের প্রাক প্রাথমিক শিক্ষাদান থেকে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ, টিকাদান এবং শিশু বা প্রসূতিরা অসুস্থ হলে স্থানীয় স্বাস্ত্যকেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করা, প্রতিমাসে শিশুদের শারীরিক ওজন পরীক্ষা করা ইত্যাদি কাজ চলে। রামশরণপুর খপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিতেও প্রসূতি ও শিশু মিলিয়ে প্রায় ৫৫-৬০ জনকে পরিষেবা দেওয়া হত। কিন্তু কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা আর সেই পরিষেবা পাচ্ছেন না। স্থানীয় বাসিন্দা রমজান মোল্লা, খইরুল মোল্লারা জানান, এলাকা দুঃস্থ শিশু ও প্রসূতি মায়েরা এই কেন্দ্র থেকে সাহায্য পেতেন। আচমকা কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সকলেই সমস্যায় পড়েছেন। গ্রামবাসীদের দাবি, গ্রামের অধিকাংশই মানুষই খেতমজুরি করে দিনযাপন করেন। কেন্দ্রটি চালু হওয়ার পরে শিশু ও প্রসূতিদের কিছুটা সুবিধা হচ্ছিল। কেন্দ্রটি যাঁরা চালাতেন তাঁদের বক্তব্য, “বাড়ির অভাবেই কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চালু হওয়ার পর থেকে কেন্দ্রটি সব সব সময়েই কারও না কারও বাড়ির বারান্দায় চলছিল। তাতে সমস্যাও হচ্ছিল। নিজস্ব ঘর থাকলে এ ভাবে কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যেত না।”
কামারচক গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান নুরহাবিব পুরকাইত জানান, সমস্যার কথা বিডিওকে জানানো হয়েছে। কুলপি ব্লক শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক হরিদাস দাস বলেন, “এই এলাকায় ৩৫৩টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। জমির অভাবে ঘর তৈরি না হওয়ায় অধিকাংশ কেন্দ্রই চালাতে হচ্ছে কোনও ক্লাবঘর নয়তো কারও বাড়ির বারান্দায়। ওই কেন্দ্রটিও এ ভাবেই চলছিল। বিকল্প ব্যবস্থা করে কেন্দ্রটি যাতে ফের চালু করা যায় তার চেষ্টা চলছে।”
|