গত ৮ জুলাই দামোদরে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল এক যুবকের। বন্ধুরাই তাঁকে ডুবিয়ে খুন করেছে, এই মর্মে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মৃতের বাবা। কিন্তু পুলিশ এখনও এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেনি অভিযোগ তুলে সম্প্রতি পুলিশ সুপারকে চিঠি দিলেন মৃত সৌমেন চট্টোপাধ্যায়ের (২৩) বাবা, বর্ধমানের রাধানগরের বাসিন্দা স্বপন চট্টোপাধ্যায়। স্বপনবাবুর অভিযোগ, বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যাচ্ছে বলে তাঁর ছেলে বাড়ি থেকে বেরোয়। সন্ধ্যায় তিনি জানতে পারেন, ছেলে দামোদরের বংপুর ঘাটে এক বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে ডুবে গিয়েছে। পরের দিন সকালে তার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু ছেলের সঙ্গে থাকা অন্য চার জন এ ব্যাপারে কাউকে কিছু জানায়নি বলে তাঁর অভিযোগ। স্বপনবাবুর দাবি, সৌনক কুণ্ডু নামে এক বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে তলিয়ে যায় সৌমেন। পরে এলাকার লোকজন সৌনককে বাঁচালেও, তাঁর ছেলে যে তলিয়ে গিয়েছে, এ কথা কাউকে জানাননি। এমনকী সৌনক-সহ চার বন্ধু সৌমেনের জামা, জুতো ও মোবাইল নদীতে ফেলে বাড়ি ফিরে যায়। তাঁর সন্দেহ, ছেলের মৃত্যুর পিছনে হাত রয়েছে ওই চার জনেরই। স্বপনবাবু অভিযোগ করেন, মামলা দায়ের করলেও পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকী তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করেনি। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, ‘‘বর্ধমান থানাকে অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
|
তৃণমূলের অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। রবিবার বিকেলে বর্ধমান শহরের বোরহাটে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা অনিলকুমার সাউ বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, স্থানীয়দের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছিল সিপিএম। এই ঘটনার জন্য তাঁরা পুলিশে খবর দেন ও শান্তি মিছিল বের করেন। কিন্তু আচমকাই স্থানীয় সিপিএম নেতা নবকুমার সরের নেতৃত্বে এক দল দুষ্কৃতী লাঠি, শাবল, বোমা নিয়ে তাদের অফিসে ভাঙচুর চালায়। ২৮ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল সভাপতি শ্যামদাস বৈরাগ্যের অভিযোগ, “এলাকায় সিটু চাঁদা তুুলছিল। তার প্রতিবাদ জানান তৃণমূলের সমর্থকেরা। সেই কারণেই সিটু নেতা সুজিত ঘোষের প্ররোচনায় হামলা চালানো হয়েছে।” তবে সিপিএমের বর্ধমান শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক তাপস সরকারের পাল্টা অভিযোগ, “কয়েক দিন আগে আমাদের এক কর্মী নব সাউ মুটিয়া মজদুরদের সংগঠনের সদস্য সংগ্রহে যান। তখন তাঁকে বিল-বই কেড়ে নিয়ে ঘিরে ধরে মারধরের চেষ্টা করা হয়। রবিবার হাসপাতালে এক জনকে দেখতে গেলে সেখানেও মারধর করা হয় নববাবুকে। প্রতিবাদে মিছিল বের করেন বাসিন্দারা।” তাঁব দাবি, “তৃণমূলের অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার রাতেই নববাবুকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও সোমবার তিনি জামিন পেয়ে যান।”
|
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হল এক বন্দির। মৃতের নাম জুলেমান শেখ (৩০)। বাড়ি বীরভূমের ইলামবাজার এলাকায়। রবিবার রাতে সিউড়ি হাসপাতাল থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পথে মৃত্যু হয় ওই বন্দির। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, গত ১ জুন লোহা চুরির অভিযোগে আরও ১০ জনের সঙ্গে জুলেমানকে গ্রেফতার করেছিল কাঁকসা থানার পুলিশ। স্থানীয় একটি কারখানার লোহাচুরি করে পালানোর সময়ে কাঁকসার বামুনাড়ায় তাদের ম্যাটাডরটি উল্টে যায়। মৃত্যু হয় এক জনের। বাকিদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে জুলেমানও ছিল। সুস্থ হওয়ার পরে আদালতের নির্দেশে বীরভূমের রাজনগর থানা জুলেমানকে পুরনো মামলার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। পরে তাকে সিউড়ি সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল। অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই ব্যক্তিকে প্রথমে সিউড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে থেকে বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় ওই বন্দির। বোমা বাঁধতে গিয়ে তাঁর দু’টি হাতই উড়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। জেল হাজতে থাকাকালীন মৃত্যু হওয়ায় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সুরতহাল ও ক্যামেরার সামনে ওই ব্যক্তির ময়না-তদন্ত করা হয়।
|
বৈঠকের পরেও খেতমজুরদের মজুরি-সমস্যার সমাধান মিলল না মন্তেশ্বরে। খেতমজুরদের মজুরি বৃদ্ধির দাবির প্রতিবাদে সোমবার সিজনা গ্রামের রাস্তায় প্রায় দেড় ঘণ্টা পথ অবরোধ করলেন মন্তেশ্বরের সিজনা ও উজনা গ্রামের চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ, খেতমজুরের তাঁদের কাছ থেকে প্রতিদিনের মজুরি হিসাবে ১৩৫ টাকা ও ২ কেজি চাল দাবি করছে। এমনকী তা না দিলে কাজেও আসছে না তাঁরা। অথচ এর আগেই বিডিও অফিসের বৈঠকে তাঁদের মজুরি স্থির হয়েছে ৯০ টাকা ও ২ কেজি চাল। এ দিন চাষিরা নিজেই জমিতে কাজ শুরু করলে খেতমজুরেরা তাঁদের বাধা দেন বলেও অভিযোগ। এরপরেই অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। পরে অবশ্য ব্লক প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। মন্তেশ্বরের বিডিও প্রদীপকুমার বাউরির কার্যালয়ে একটি বৈঠকও হয় এ দিন। সেখানে খেতমজুরেরা ১০০ টাকা আর ২ কেজি চাল মজুরির দাবি জানান। তবে চাষিরা রাজি না হওয়ায় নতুন কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি বলেন, “বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও বলা হয়েছে স্বেচ্ছায় জমিতে কাজ করছেন এমন কাউকে বাধা দিলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।” |