নারং-এর হাত ধরে প্রথম পদক জয় ভারতের |
অভিনব বিন্দ্রা না পারলেও পারলেন গগন নারং। ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে ব্যক্তিগত বিভাগে ব্রোঞ্জ পদক জিতলেন তিনি। একের পর এক হতাশাজনক ফলাফলের পর ভারতের প্রথম পদক আসল নারং-এর হাত ধরে। মহিলাদের তিরন্দাজির ব্যক্তিগত বিভাগে মেক্সিকোর আইডা রোমানের কাছে হেরে বিদায় নিলেন বোম্বাইলাদেবী।
|
তামিলনাড়ু এক্সপ্রেসে ভয়াবহ আগুন, জীবন্ত দগ্ধ প্রায় ৪৫ যাত্রী |
আজ ভোরবেলা নয়াদিল্লি থেকে চেন্নাইগামী তামিলনাড়ু এক্সপ্রেসের একটি কামরায় ভয়াবহ আগুন লাগে। এর ফলে বহু যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। অন্ধপ্রদেশের নেল্লোরের কাছে এই দুর্ঘটনায় প্রায় ৫০ জন যাত্রীর মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে ট্রেনটির এস-১১ কামরাটি সম্পূর্ণ ভাবে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। ওই কামরায় জীবন্ত কোনও যাত্রীর অস্তিত্ব নেই বলেও প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার ফলে আপাতত ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ।
জানা গিয়েছে, আজ ভোর ৪টে ১৮ মিনিট নাগাদ যখন ওই তামিলনাড়ু এক্সপ্রেস অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম অতিক্রম করছিল তখন, অ্যাসিসট্যান্ট স্টেশন ম্যানেজারের নজরে আসে, ট্রেনের এস-১১ কামরাটি দাউদাউ করে জ্বলছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ট্রেনের চালক ও সহকারি চালকের সঙ্গে ‘ওয়াকিটকি’র মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। ট্রেনটিকে আপত্কালীন ব্রেক ব্যবহার করে থামানোর পর দমকলে খবর দেওয়া হয়। ভোর ৪টে ৪০ মিনিটে দমকল আসে। প্রায় আধঘণ্টা ধরে দমকলের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ৫টা ১০ মিনিট নাগাদ আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। কিন্তু তার মধ্যেই প্রচুর যাত্রীর আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে। আহতও হয়েছেন প্রচুর যাত্রী। তাঁদের নেল্লোরের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দক্ষিণ-মধ্য রেলের উচ্চপদস্থ কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছচ্ছেন বলে রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন রেলের বিজয়ওয়াড়া বিভাগের বিভাগীয় ম্যানেজার। তবে ঠিক কী কারণে এই আগুন লেগেছে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত ভাবে কিছু জানা যায়নি। |
দুর্ঘটনাস্থলে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: এপি। |
সাম্প্রতিক কালে একটি ট্রেনের কোনও একটি কামরায় আগুন লেগে এত মানুষের মৃত্যুর নজির কিন্তু নেই। তবে কী ওই কামরায় অতি দাহ্য কোনও পদার্থ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল? আজই ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা পৌঁছবেন। তার পরেই প্রাথমিক ভাবে বোঝা যেতে পারে ঠিক কী কারণে এই আগুন। রেলবোর্ডের প্রাক্তন সদস্য সুভাষরঞ্জন ঠাকুর জানিয়েছেন, ‘‘তামিলনাড়ু এক্সপ্রেস সুপারফাস্ট ট্রেন। চেন্নাই ও বিজয়ওয়াড়া স্টেশনের মধ্যে ট্রেনটির কোনও স্টপেজ নেই। কাজেই ভোরবেলায় ট্রেনটির গতিবেগ বেশি-ই থাকার কথা। এবং ছিলও তাই। যদি নেল্লোর স্টেশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট স্টেশন ম্যানেজারের নজরে এই আগুন লাগার ঘটনাটি না আসত, তবে ঘটনা আরও ভয়াবহ চেহারা নিত।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘বেশ কিছু বছর আগে বিলাসপুর-চক্রধরপুর বিভাগে মুম্বই মেলের কামরায় আগুন লেগে প্রায় ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে এমন কামরায় আগুন লেগে এত মানুষের মৃত্যু ভারতীয় রেলে ঘটেনি।’’ আতঙ্কে অনেকেই চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আহত ও নিহতদের উদ্ধারের কাজ চলছে পুরো দমে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রেলের তরফ থেকে নিহতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের পরিবার পিছু ১ লক্ষ টাকা ও সামান্য আহতদের ২৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণের কথা জানানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে রেলমন্ত্রী মুকুল রায় এবং রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান যাচ্ছেন বলে রেল সূত্রে খবর। কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি-কে এই দুর্ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
|
হেল্পলাইন নম্বর
নেল্লোর: ০৮৬১-২৩৪৫৮৬৩, ২৫৭৬৯২৪
চেন্নাই: ০৪৪-২৫৩৩০৮২৫
নয়াদিল্লি: ০১১-২৩৩৪১০৭২
|
উত্তর ভারতের ৭টি রাজ্যে বিদ্যুত্ বিভ্রাট |
আজ রাত আড়াইটে থেকে নর্দান পাওয়ার গ্রিড বিকল হয়ে যাওয়ায় উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ব্যাপক ভাবে বিদ্যুত বিভ্রাটের সম্মুখীন হয়েছে। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ এবং জম্মু-কাশ্মীর— রাজ্যগুলিতে জরুরি পরিষেবা-সহ ট্রেন চলাচল ভীষণ ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রায় ৬টি রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনে আটকে রয়েছে অনেক ট্রেন। এমনকী দিল্লি মেট্রো পরিষেবাও বন্ধ রাখতে হয়। ২০০১-০২ সালের পর আবার নর্দান পাওয়ার গ্রিড বিকল হল বলে জানা গিয়েছে। তবে জরুরিকালীন ভিত্তিতে বিকল গ্রিডটি মেরামত
|
সুশীলকুমার শিন্ডে |
করার কাজ চলছে। আশা করা হচ্ছে আজ দুপুরের আগেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। জরুরি ক্ষেত্রগুলিতে ইতিমধ্যেই বিদ্যুত্ আসা শুরু হয়েছে। চালু হয়ে গিয়েছে দিল্লি মেট্রো চলাচলও। সকাল ১১ টা নাগাদ কেন্দ্রীয় বিদ্যুত্ মন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, ‘‘নর্দান পাওয়ার গ্রিড ৬০ শতাংশ চালু হয়ে গিয়েছে। কাজেই সকাল ৮টা থেকে রেল, বিমান, মেট্রো-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যুত্ পরিষেবা চালু করার কাজ শুরু হয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিমের গ্রিড থেকে বিদ্যুত্ নিয়ে আপাতত পরিস্থিতি সামলানো হচ্ছে।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘প্রায় ১০ বছর পর এমন বিপর্যয়ের মুখোমুখি আমরা। যদিও সে বার সব কিছু ঠিক করে পরিষেবা চালু করতে বিকেল ৪টে বেজে গিয়েছিল, এ বার সেখানে একই সময়ে বিভ্রাট শুরু হলেও সকাল ৮টার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে।’’ বিদ্যুত্ মন্ত্রী এই ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য কেন্দ্রীয় ইলেকট্রিসিটি অথরিটির চেয়ারম্যানকে প্রধান করে একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটি নির্দিষ্ট সময়ে রিপোর্ট দাখিল করবে বলে তিনি জানিয়েছেন। সুশীলকুমার শিন্ডে ভারতের এই গ্রিড ব্যবস্থার প্রশংসা করে একটি ঘটনার উল্লেখ করেন, ‘‘২০০৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুত্ বিভ্রাট ঘটে। সেই পরিস্থিতি সামলাতে ভারতের পাওয়ার গ্রিডের চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে সেখানে চার দিন সময় লেগেছিল।’’
|
সড়ক দুর্ঘটনায় হরিয়ানায় ২৮ পূণ্যার্থীর মৃত্যু |
আজ সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ তীর্থযাত্রী বোঝাই একটি বাসের সঙ্গে লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে মহিলা ও শিশু-সহ ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে হরিয়ানার ভিওয়ানি জেলায়। রাজস্থানের অমরপুরা ধাম থেকে ৬০ জনের একটি দল নিয়ে ফিরছিল বাসটি। বাসে মোট ৬০ জন যাত্রী ছিলেন। ভিওয়ানি থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে সকালবেলা রাজগড়-হিসার রোডের সাইনিবাস গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলেই ২২ জনের মৃত্যু হয়। বাকিরা প্রাণ হারিয়েছেন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে। এই দুর্ঘটনা যখন ঘটে, তখন বাসের অধিকাংশ যাত্রীই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন। আশপাশের গ্রামবাসীরা প্রাথমিক ভাবে উদ্ধার কাজ শুরু করেন এবং আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। পরে সেখানে পৌঁছেছেন ভিওয়ানি জেলার ডেপুটি কমিশনার অশোককুমার মীনা ও অন্যান্য সরকারি আধিকারিকরা। তাঁরা বাকি আহতদের হিসার ও হাঁসি শহরের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ২২টি মৃতদেহ ভিওয়ানি হাসপাতালে আনা হয়েছে। মোট ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
|
প্রহরীবিহীন লেভেল ক্রসিং-এ স্কুলবাসে ট্রেনের ধাক্কা, মৃত ৪ |
ফের রেলের প্রহরীবিহীন লেভেল ক্রসিং পেরোতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে গেল স্কুল বাস। আজ সকালের দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্জাবের অমৃসর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরের কোট মেহতাব সিংহ গ্রামের কাছে। বাবা বাকালা শহরের সন্ত বাবা মাঝা সিংহ কর্মজোট মডেল স্কুলের প্রায় ২০ জন ছাত্র স্কুল থেকে ফিরছিল বাসে করে। ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী ওই ছাত্রদের নিয়ে বাসটি যখন লেভেল ক্রসিং পেরোচ্ছিল তখনই রেল লাইন দিয়ে ছুটে আসছিল বিয়াস থেকে গোইন্ডওয়ালগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি। দ্রুত গতিতে ছুটে আসা এক কামরার রেল বাসটি প্রায় লন্ডভন্ড করে দেয় স্কুলবাসটিকে। ঘটলাস্থলেই মারা গিয়েছে ৪ স্কুলছাত্র। গুরুতর আহত ছাত্রদের বিয়াসের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। |