|
|
|
|
|
|
|
কার্টুনে সময়ের ছবি |
তখন যেমন |
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা বিখ্যাত কার্টুনে বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ওপর ইংরেজ শাসকের পীড়নের ছবি। গগনেন্দ্রনাথ পেশাদার ব্যঙ্গচিত্রী ছিলেন না, কিন্তু শিল্পীর অতৃপ্তি তাঁকে এই শিল্পধারার দিকে টানত, আর রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় ‘প্রবাসী’ ও ‘মডার্ন রিভিউ’ দু’টিতেই তাঁর ব্যঙ্গচিত্র ছাপতেন। সামাজিক অসঙ্গতি সম্পর্কে নিজের তির্যক মনোভাবই যেন গগনেন্দ্রনাথকে রাজনৈতিক ব্যঙ্গচিত্র আঁকার রসদ জোগাত। তথ্যনথি ঘেঁটে ছবি-সহ এই বিস্তৃত ব্যাখ্যা শুভেন্দু দাশগুপ্তের তখন যেমন/এখন তেমন/বাংলা কার্টুনে সময়ের ছবি-তে (মনফকিরা, ১৫০.০০), একেবারে শেষে লিখছেন: ‘কার্টুনটি কেন এখন আবার ছাপানো এই কৈফিয়ত, মনে হয় দরকার নেই। খালি নামগুলো বদলে-বদলে নেওয়া। শাসকের, শাসকের হাতের অস্ত্রের।’ |
|
এ ভাবেই সতীশচন্দ্র সিংহ চারুচন্দ্র রায় কাফী খাঁ রেবতীভূষণ চিত্তপ্রসাদ সোমনাথ হোর শৈল চক্রবর্তী চণ্ডী লাহিড়ী কুট্টি অহিভূষণ মালিক প্রমথ সমাদ্দার ওমিও সুফি হিমানীশ গোস্বামী— এঁদের আঁকা কার্টুন আর নিজের গদ্য দিয়ে শুভেন্দু সাজিয়েছেন বইটি। জানিয়েছেন, ‘মাঝে-মাঝে অবাক হয়েছি, এখনকার এমন কোন বিষয় পাইনি, যা নিয়ে একটাও পুরনো কার্টুন নেই। চমকে গিয়েছি, কী ভাবে বিষয় ফিরে-ফিরে আসে। আগের কার্টুন এখনকার হয়ে যায়।’ আর-একটি বই বের করছে মনফকিরা এ-বইটির সঙ্গে, কাস্তেলাও-র জীবনের সাতসতেরো/ নির্বাচিত প্রসঙ্গ (অনুবাদ ঋতা রায়, ২২৫.০০)। পর্তুগালের উত্তরে স্পেনের স্বয়ংশাসিত অঞ্চল গালিজা-র শিল্পসাহিত্য জগতের বিশিষ্ট মানুষ কাস্তেলাও (১৮৮৬-১৯৫০) যে কতখানি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও, তার প্রমাণ সঙ্গে ডান দিকে তাঁর আঁকা কার্টুনটির তলায় এক লাইনের বাক্যটি: ‘আমি জাতীয় ইচ্ছার প্রতিনিধি।’ বই দু’টি প্রকাশিত হবে কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের তিন তলায় বই-চিত্র-এ, ৩ অগস্ট সন্ধে ৬টায়। এখন বি-সংবাদ পত্রিকাটির কার্টুন সংখ্যাও প্রকাশ পাবে সে দিন, আলোচনাও হবে ‘কার্টুনে দেশ কাল সমাজ’ নিয়ে। আয়োজনে মনফকিরা-র সঙ্গে এখন বি-সংবাদ।
|
মান্টো স্মরণ |
পাগলটা খুঁজে বেড়ায় তার গ্রাম। তোবা টেক সিংহ গ্রামে তার জন্ম। দেশভাগের উন্মত্ততা, পঞ্জাবে চলছে জনবিনিময়। ঠিক হল, পাগলা গারদের লোকগুলিকেও ছেড়ে দেওয়া হবে। তারাও ইচ্ছামাফিক চলে যাবে ভারত, পাকিস্তানে। তোবা টেক সিংহ ভারত না পাকিস্তানে পড়েছে কেউ খেয়াল রাখে না। পাগলটা নাছোড়বান্দা। একদিন সে মারা গেল। কাঁটাতারের এক দিকে ভারত, এক দিকে পাকিস্তান। মাঝের জমিটুকুতে পড়ে থাকল তার মৃতদেহ। ততদিনে তার নামই হয়ে গিয়েছে তোবা টেক সিংহ।... উর্দু ছোট গল্পে দেশভাগের আর্তনাদ এ ভাবে যাঁর লেখায় বারংবার উঠে এসেছে, সেই সাদাত হাসান মান্টোর শতবর্ষ এই বছরেই। ফিল্মিস্তান স্টুডিয়োয় চিত্রনাট্য লিখতেন মান্টো, প্রযোজক শশধর মুখোপাধ্যায় থেকে নায়ক অশোককুমার সকলেরই বন্ধু। দেশভাগের পর তিনি পাকিস্তানে চলে যান, কিন্তু সে দেশ তাঁকে খুশি করতে পারেনি। তখন মদেই আশ্রয় খুঁজেছেন। ১৯৫৫-য় মাত্র ৪২ বছর বয়সে মৃত্যু। তাঁর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ৫ অগস্ট বিকেল সাড়ে ৬টায় নেতাজি ভবনে ‘দেশভাগের আর্তি: ভারত-পাকিস্তান বিভাজন ও মান্টো’ নিয়ে বলবেন ইতিহাসবিদ আয়েষা জালাল। প্রসঙ্গত, আয়েষা নিজেও ব্যক্তিজীবনে পাক-ভারত বিভাজনরেখার ঊধ্বের্র্। তিনি মান্টোর নাতনি ও ইতিহাসবিদ সুগত বসুর স্ত্রী।
|
|
সবুজের অভিযান |
হেস্টিংস হাউস প্রাঙ্গণে আলিপুর মাল্টিপারপাস গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুলে ঋতুবৈচিত্র ফুটে থাকত সাজানো ফুলের বাগানে। জাজেস কোর্ট রোডের গেট থেকে আলিপুর সেন্ট্রাল রোডের গেট পর্যন্ত পায়ে চলা পরিচ্ছন্ন পথের দু’ধারে থাকত সবুজের সমাহার। কিন্তু তার অনেকটাই এখন ঝোপঝাড়, আগাছা, জঙ্গল। তাই প্রাক্তন ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের সংগঠন ‘প্রাক্তনী’র পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগে বন দফতর ও এগ্রি-হর্টিকালচার গার্ডেন থেকে চারা সংগ্রহ করে ২০ জুলাই অরণ্য সপ্তাহের শেষ দিনে স্কুল চত্বরে পালিত হল বনমহোৎসব। ছোট-বড় সকলের হাতে পরম যত্নে ষাটটি চারা পোঁতা হল। হারানো বাগান নতুন করে ফিরিয়ে আনতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মালিদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। দেশ-বিদেশ থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রেখেছেন প্রাক্তনীরা। ছোটরা কথা দিয়েছে, তারা যত্রতত্র প্লাস্টিক ছড়াবে না। ‘প্রাক্তনী’র কয়েকজন হাজার ব্যস্ততা সামলে নিয়মিত পৌঁছে যাচ্ছেন স্কুল চত্বরে, শিশু চারাদের সযত্ন তত্ত্বাবধানে। শুরু হল সবুজের অভিযান।
|
শৃণ্বন্তু |
শ্রুতিনাটক নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করছে শৃণ্বন্তু। সম্প্রতি জীবনানন্দ সভাঘরে ওরা উপস্থাপন করল একগুচ্ছ শ্রুতিনাটক। প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি বীরেন্দ্রকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই সংস্থা নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। বীরেন্দ্রবাবু নিজেও সুলেখক। জাদুগণিত স্বাদুগণিত-এর মতো বই থেকে রবীন্দ্রনাথ: সংলাপে সংলাপে বা চার কবি সাত কবিতা, কথায় কথায় কথামৃত-র মতো বইয়ে ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর সৃষ্টির জগৎ। ১৯৯৪-এ মহাভারত-ভিত্তিক কয়েকটি নাটিকা নিয়ে প্রকাশ পেয়েছিল অমৃত মন্থন। বিশিষ্ট বাচিকশিল্পীরা সেগুলি মঞ্চে পরিবেশনও করেছেন। এর সঙ্গে আরও কয়েকটি নাটিকা যুক্ত করে সম্প্রতি প্রকাশ পেল মহাভারত মহামৃত (মডার্ন কলাম)। গতকাল গোবরডাঙ্গা লালন মঞ্চে শৃণ্বন্তু ও গোবরডাঙ্গা সংগীত অ্যাকাডেমির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছিল একটি সাহিত্য সংস্কৃতি সম্মেলন। সারা দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন বাংলা ও বাংলার বাইরের শিল্পী, সাহিত্যিক, সম্পাদকরা। ছিল লোকগান, শ্রুতিনাটক এবং লালন ফকির ও বাউল নিয়ে আলোচনা।
|
হস্তশিল্প মেলা |
তামার সুতো দিয়ে শাড়ি-পাঞ্জাবিতে নকশা তোলেন কালনার পার্থপ্রতিম দাস। দীপালি দেবী বাংলার তাঁতের সঙ্গে অসমের মেখলার মেলবন্ধন ঘটিয়ে তা মধ্যবিত্তের নাগালে আনার চেষ্টা করেন। সুজয়া দে মেয়েদের শেখান সফট টয় বানানোর কারিকুরি। এঁরা সকলেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য। তবে জিনিস তৈরির পাশাপাশি বিপণনটাও জরুরি। ‘কনট্যাক্টস’ এঁদের বিপণন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। করে মেলার আয়োজন, যাতে সাধারণের কাছে পৌঁছনো যায়। ৪ এলগিন রোডে সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাসভবন বৈতানিক-এ আজ থেকে শুরু হচ্ছে এমনই এক মেলা। উদ্বোধন করবেন ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা। তিন দিনের মেলা চলবে রোজ ২-৮টা। জাঙ্ক জুয়েলারি, পোশাক, টেরাকোটার জিনিসের পাশাপাশি মিলবে ঘরে তৈরি মুখরোচক খাবার।
|
প্রতিবাদ |
অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি কোনও দিন। অশক্ত শরীরেও জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছেন মধ্য কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশন (মেন)-এর শিক্ষক গোবরডাঙার বরুণ বিশ্বাস। উত্তর ২৪ পরগনার সুটিয়া অঞ্চলে পর পর ঘটে যাওয়া কয়েকটি গণধর্ষণের মামলায় দুষ্কৃতীদের শাস্তিদানে তাঁর প্রধান ভূমিকা ছিল। কিন্তু জেল থেকেই তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়। ৫ জুলাই ভাড়াটে খুনিদের হাতে খুন হন বরুণবাবু। কয়েক জন ধরা পড়লেও অন্যদের গ্রেফতারের দাবিতে মধ্য কলকাতার ২৫টি সংগঠনের উদ্যোগে আগামী ৪ অগস্ট বউবাজার ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার সামনে সারা দিন মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ এবং বিকেল ৪ টায় মৌন-মিছিল বার করা হবে। বিশিষ্ট জনের সঙ্গে ওই মিছিলে থাকবেন বরুণবাবুর স্কুলের ছাত্র-শিক্ষকেরাও।
|
অন্য রবি |
‘ফুড়ুৎ’ খ্যাত ব্ল্যাংক ভার্স-এর নতুন প্রযোজনা ‘দ্য গ্রেট নিউ লাইফ’। বিদ্যাসাগর, সুকুমার রায় পেরিয়ে এ বারে রবীন্দ্রনাথ। ইতিমধ্যেই মঞ্চস্থ হয়ে গিয়েছে ‘বর্ণপরিচয়’ ও ‘হযবরল’, নতুন ভাবে নতুন বিন্যাসে। নতুন প্রযোজনায় তাঁরা খুঁজে নিয়েছেন ‘অন্য’ রবীন্দ্রনাথকে, যিনি ‘ঠাকুর’ নন, কখনও তিনি সংগঠক, কখনও জাতপাতের ঊর্ধ্বে এক মানুষ। নাটকে দেখা যায়, মন্দার জেরে কাজ চলে গিয়েছে গ্রামের সার্কাসের কলাকুশলীদের। এ বার দলগত ভাবে কিছু করতে হবে। কাণ্ডারি হয় দলের এক সদস্য। আগে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা সম্বল করে সে সকলকে একজোট করে নাটকের দল গড়ে। বেছে নেয় জুতা আবিষ্কার। অথচ এরা রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর লেখার সঙ্গে অপরিচিত। নাটক করতে গিয়েই তারা বুঝতে পারে নাটকে রয়েছে নানা পর্যায়, আপাত জটিল সে সব বিষয় উপস্থাপিত হবে মজায় মুড়ে। নাটক ও নির্দেশনা রাজা ভট্টাচার্য। রবীন্দ্রসঙ্গীত ও লালন-গানের পাশাপাশি নাটকে থাকবে রবীন্দ্রকণ্ঠে গানও। মধূসুদন মঞ্চে ৩ অগস্ট সন্ধে সাড়ে ছ’টায়।
|
সংগ্রাহক |
‘কালেকশন’-এর নেশা পাঁচ বছর বয়স থেকে। নেশা একই। কিন্তু বিষয়টি বদলে ১৯৭২-এ পিকচার পোস্টকার্ড থেকে হয়ে যায় অলিম্পিক মুদ্রা। আজ অবধি ৩০০-র মতো রুপোর মুদ্রা সংগ্রহ করেছেন শ্রীগোপাল চোখানি। প্রথম সংগ্রহ ১৯৫২-র হেলসিংকি অলিম্পিকের মুদ্রা। বিভিন্ন আকারের মুদ্রার ওজন ৩২ থেকে ১৫৫ গ্রাম। কোনওটিতে রয়েছে অলিম্পিকের লোগো, আয়োজক দেশের কোনও চিহ্ন বা খেলোয়াড়দের ছবি। সংগ্রহে রয়েছে বেজিং অলিম্পিকের এক কেজি ওজনের মেডেল, সিডনি অপেরা হাউস এবং অস্ট্রেলিয়ার মানচিত্র খোদাই করা ২০০০-এর সিডনি অলিম্পিকের ১৬টি মুদ্রা। অলিম্পিক হয়নি এমন দেশের মুদ্রাও তাঁর সংগ্রহে আছে। এ বারের লন্ডন অলিম্পিকের চারটি মুদ্রা ইতিমধ্যেই তাঁর সংগ্রহে চলে এসেছে। নিজে খেলা সম্বন্ধে উৎসাহী নন। কিন্তু নিয়ম করে মুদ্রা সংগ্রহ করেন বিদেশে বসবাসকারী বন্ধু ও আত্মীয়দের মাধ্যমে। সরকারি নিয়মকানুন এ বিষয়ে আর একটু উদার হোক, চান তিনি।
|
সুরধাম |
এ শহরে বসল দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের আরও একটি মূর্তি। টালিগঞ্জ থানার উল্টো দিকে সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের প্রথম বুলেভার্ডে। ১৯ জুলাই, কবির সার্ধশতবর্ষের জন্মদিনে কলকাতা পুরসভা ও ‘ডাইমেনশন ফোর’-এর উদ্যোগে মূর্তিটির আবরণ-উন্মোচন করা হল। সে দিনই ভোরে হিন্দুস্থান রোড থেকে টালিগঞ্জ থানা পর্যন্ত দ্বিজেন্দ্রলালের গান গাইতে গাইতে হল প্রভাতফেরিও। ৩১ জুলাই রবীন্দ্রসদনে সাড়ে ছ’টায় বসছে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গানের আসর ‘বঙ্গ আমার জননী আমার’। দুই বাংলা মিলিয়ে শিল্পী নূপুরছন্দা ঘোষ, ইফফাত আরা দেওয়ান, ইলোরা আহমেদ শুক্লা। রবির চড়া আলোয় চাপা পড়ে যাওয়া দ্বিজেন্দ্র সার্ধশতবর্ষ এ ভাবে পালনের নেপথ্যে আছেন পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার। সঙ্গের ছবিতে দ্বিজেন্দ্রলালের কলকাতার বাড়ি ‘সুরধাম’, আজ বিপন্ন ঐতিহ্যের তালিকায়।
|
উদ্যাপন |
‘এ দেশে তেমন শিক্ষক মেলে কই, শুধু একজনকেই চোখে পড়ে। তিনি প্রফুল্লচন্দ্র।’ এমনই সশ্রদ্ধ ছিল রবীন্দ্রনাথের কথায় আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের উল্লেখ। এই দুই কিংবদন্তির সার্ধশতবর্ষ-এর উপলক্ষটি ধরা থাকছে দু’টি অন্য ধাঁচের উদযাপনে। নাট্যদল ‘সুখচর পঞ্চম’-এর নাটক ‘আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র’ সমাদর লাভ করেছে ইতিমধ্যেই। সেই নাটকটিই শোনাবে ৯১.৯ ফ্রেন্ডস এফ এম, ১-৪ অগস্ট, রাত দশটা থেকে আধ ঘণ্টা। ২ অগস্ট প্রফুল্লচন্দ্রের জন্মদিবসও বটে। অতঃপর, রবীন্দ্রনাথ। তাঁকে নিয়ে অজস্র অনুষ্ঠানের ভিড়ে স্বতন্ত্র হয়ে থাকছে তপন থিয়েটার-এ ‘শ্যামবাজার মুখোমুখি’-র রবীন্দ্র নাট্য উৎসব। ৩ অগস্ট দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় ‘সংসৃতি’-র প্রযোজনা ‘সে’। ৪ অগস্ট ‘রঙরূপ’-এর ‘পাত্র ও পাত্রী’। নির্দেশনা সীমা মুখোপাধ্যায়। শেষ দিন, ৫ অগস্ট সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের রচনা এবং নির্দেশনায় ‘প্রতিদিন তব গাথা’। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে এই কিংবদন্তি নট-অভিনেতার প্রাত্যহিক দেওয়া-নেওয়ার এই আলেখ্য বাঙালিকে শিহরিত করবে। আরও একবার মঞ্চের উপরে স্বমহিম উপস্থিতিতে সৌমিত্র। তাঁর সঙ্গে প্রাণের খেলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
|
সফল |
সিভিল সার্ভিস-এ রাজ্যের ছেলেমেয়েরা পিছিয়ে, বদনাম বহু দিনের। খামতিটা কোথায়? কাটাছেঁড়া চলছে, চলবে। তবে সে বদনাম ঘুচিয়ে এ বার ইন্ডিয়ান ইকনমিক সার্ভিস-এ প্রথম স্থান পেলেন কলকাতার কন্যা তামান্না সিংহ। অর্থনীতি নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়তে পড়তেই আইইএস-এর প্রস্তুতি। ২০০৯-এ ইন্টারভিউতে পৌঁছেও দুই নম্বরের জন্য আটকে যান। এর পর ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-এ গবেষণা সহযোগী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি চলতে থাকে পুরোদমে প্রস্তুতি। দিনে সাত ঘণ্টা পড়াশুনো। তামান্নার কথায়, ‘আইইএস-ই লক্ষ্য ছিল। এটা না হলে অন্য কিছু এমনটা ভাবিনি।’ কোচিং নয়, নিজে নিজেই প্রস্তুতি নিয়ে ২০১১-য় পরীক্ষায় বসেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত ও কিশোরকুমারের গানের ভক্ত তামান্নার আশা ছিল, ফল ভাল হবে। কিন্তু প্রথম স্থান তাঁকে কিছুটা অবাকই করেছে। ‘এ রাজ্য সিভিল সার্ভিস-এ পিছিয়ে, ধারণাটা ভাঙতে পারায় সত্যিই খুব ভাল লাগছে। ভগবানের প্রতি আস্থা আর ধৈর্য কখনও হারাইনি।’ সাফল্যের অংশীদার তাঁর বাবা ত্রিনাথকৃষ্ণ সিংহ পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত আইএএস। ‘বাবার বিষয়ও অর্থনীতি হওয়ায় খামতিগুলো বাবার সঙ্গে আলোচনা করেছি।’ তামান্নার পরামর্শ, ‘স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াটা যত ভাল তৈরি থাকবে, ততই এগিয়ে যাবে।’
|
|
|
|
কথাকার |
টেক্নিক্যাল স্কুলের গা দিয়ে সেই জামতলা, সারি সারি জামগাছ, তার নীচে দিয়ে বাঁধের রাস্তা, টুপটাপ জাম পড়ছে গাছ থেকে, কখনো গা-য়ের উপর, শার্টে ছোপ পড়ছে বেগুনি, পাকা জাম মাটিতে পড়ে ফেটে ছিতড়ে যাচ্ছে, সেখানে কালোপিঁপড়ে, জামতলা দিয়ে যেতে যেতে ফাঁকা মাঠ, কামিনী গার্ডেন, সেখানে কত রকম গাছ কত রকম ফুল, বাঁধ থেকে নেমে স্কুল, আর সেই রাস্তা বাঁক নিয়ে ইছামতীর পুরনো পুল পেরিয়ে কোথাও উধাও হয়ে গেছে একসময়...’ আখ্যানের এই আশ্চর্য গড়নে যেন রূপকথার অনুষঙ্গ, এক অদ্ভুত কথকতার জন্ম দিতে পারেন কার্তিক লাহিড়ী। কথাকার এই মানুষটিকে নিয়ে, তাঁর সৃষ্টিকে নিয়ে মনোরঞ্জন বিশ্বাস লিখছেন: ‘স্বপ্ন বাস্তবতায় মেশা শিল্প সৃষ্টির এক অনির্বচনীয়ত্ব যা শ্রীলাহিড়ীকে অন্য সমস্ত কলাকার থেকে সম্পূর্ণ পৃথক করে দিয়েছে...।’ এবং এই সময়-এর (সম্পা: অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়) কার্তিক লাহিড়ী বিশেষ সংখ্যায় এ রকমই আরও নানান রচনা তাঁর বর্ণময় ব্যক্তিত্ব, উপন্যাসের নবনিরীক্ষা, ভাষা প্রয়োগের কৃৎকৌশল, সময়ের প্রতি দায়বদ্ধতা ইত্যাদি নিয়ে। ‘বাংলা উপন্যাসের রূপকল্প ও প্রযুক্তি’ বিষয়ে সুকুমার সেনের তত্ত্বাবধানে গবেষণা করেন কার্তিক লাহিড়ী। শিক্ষকতা করেন দীর্ঘকাল ত্রিপুরার আগরতলায় মহারাজ বীরবিক্রম কলেজে। অল্প বয়সে লেখা শুরু, গল্প-উপন্যাস ছাড়াও কবিতা-নাটক-প্রবন্ধে সমান সৃষ্টিশীল। বঙ্কিম স্মৃতি পুরস্কারে সম্মানিত। জন্ম ১৯৩২-এ, বিহারের চম্পারন জেলার বেতিয়া-য়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৫-য় এম এ করেন বাংলায়। এখনও এই অশীতিপর যুবকটি বেহালার সখের বাজার থেকে প্রতি সপ্তাহে কলেজ স্ট্রিটে পরিচয় পত্রিকা অফিস ও কফি হাউসে আড্ডা দিতে আসেন। |
|
|
|
|
|
|
|