চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে হেপাটাইটিস বি ও সি রোগীদের নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি হল শহরে। লিভার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আজ, শনিবার বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসে এই গোষ্ঠীর সূচনা হচ্ছে। সেই সঙ্গে, লিভারের এমন জটিল রোগ থেকে বাঁচতে সচেতনতা এবং ব্যবহারিক জীবনের কিছু সতর্কতার উপরে জোর দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোসায়েন্স বিভাগের অধিকর্তা মহেশ গোয়েন্কা জানান, হেপাটাইটিস এ এবং ই ছড়ায় দূষিত জল ও খাবার থেকে। হেপাটাইটিস বি, সি এবং ডি সংক্রামিত দেহরস বা যৌন সংসর্গের দ্বারা ছড়াতে পারে। কিছু সতর্কতা নিলে এমন রোগের হাত থেকে বাঁচা সম্ভব। হেপাটাইটিস বি ও সি থেকে বাঁচতে অন্যের রেজার বা টুথব্রাশ ব্যবহার করা উচিত নয়। রক্ত নেওয়া-দেওয়া বা অন্য ক্ষেত্রে নতুন সূচ ব্যবহার হচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে। সুরক্ষিত যৌন অভ্যাস ও এই রোগের প্রতিষেধক টিকা নেওয়াও জরুরি। হেপাটাইটিস এ এবং ই রুখতে শৌচাগার ব্যবহারের পরে হাত ভাল করে ধোওয়া, সঠিক ভাবে রান্না করা খাবার ও পরিস্রুত জল পান করা উচিত। হেপাটাইটিস ই-র প্রমাণিত প্রতিষেধক না থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হেপাটাইটিস এ-র প্রতিষেধক নেওয়া যেতে পারে।
লিভার ফাউন্ডেশনের প্রকল্প অধিকর্তা পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় জানান, হেপাটাইটিস বি এবং সি রোগের চিকিৎসা খুবই খরচসাপেক্ষ। অনেকেই তা বহন করতে পারেন না। তাই এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের বিভিন্ন হাতের কাজ শেখানো হবে। তাঁদের তৈরি জিনিস বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যাবে, তা দিয়ে তাঁরা চিকিৎসার খরচ চালাবেন। একই সঙ্গে কম খরচে লিভারের পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরি চালু হচ্ছে। গ্যাসট্রোএন্টেরোলজিস্ট অশোকানন্দ কোনার জানান, কিড স্ট্রিটে তৈরি হয়েছে ওই মলিকিউলার ভাইরোলজি ল্যাবরেটরি। বাইরের পরীক্ষাগারের তুলনায় কম খরচে পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে সেখানে। তিনি বলেন, “এই রোগে আক্রান্ত হওয়া মানেই জীবন শেষ নয়। সুস্থ থাকতে কী করা দরকার, সেই সচেতনতা ছড়ানোই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের সবচেয়ে বড় কাজ।” |