মেমারির গ্রামে হচ্ছে অনাথ-স্কুল, বৃদ্ধাশ্রম
নাথ শিশুদের জন্য স্কুল ও বৃদ্ধাশ্রম হচ্ছে বর্ধমান-কালনা রাস্তার পাশে মেমারির জাকরা গ্রামে। আট বিঘে জমির মাঝে একটি পুকুর থাকায়, তা নিয়ে গোলমাল বেধেছিল। কিন্তু তা আপাতত মিটে গিয়েছে।
বেসরকারি ওই স্কুল ও বৃদ্ধাশ্রম গড়ার জন্য আট বিঘা জমি কিনেছেন গ্রামেরই বাসিন্দা গোলাম কাদের। তারই কেন্দ্রস্থলে প্রায় পাঁচ বিঘা নিয়ে পুকুর। এলাকাটি পাঁচিল দিয়ে ঘেরা শুরু হতেই গ্রামের কিছু চাষি আপত্তি জানান। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ওই পুকুর থেকেই এত দিন তাঁরা ধানখেতে জল সেচ করে এসেছেন। পাঁচিল দিয়ে জমি ঘিরে ফেলা হলে তা আর সম্ভব হবে না। তাঁরা বিপাকে পড়বেন।
গোলাম কাদের।
—নিজস্ব চিত্র।
এই আপত্তির কথা জানিয়ে স্থানীয় বোহার ২ পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন কিছু চাষি। তাতে পাঁচিল তোলার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। যদিও গ্রামেরই কিছু বাসিন্দা তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের পাল্টা দাবি ছিল, ওই পুকুর থেকে কোনও দিনই সেচের জল নেওয়া হয় না। তাই সেই ধুয়ো তুলে এ রকম ‘জনকল্যাণমূলক কাজ’ বন্ধ করা অনুচিত। এঁদের অন্যতম মুস্তাকিম শেখ, জানাতি শেখ, ক্ষুদিরাম পণ্ডিতদের বক্তব্য, “এক জন নিজের খরচে ভাল কাজ করছেন। তাতে এলাকার অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ উপকৃত হবেন। এ কাজে বাগড়া দেওয়ার দরকার কি?”
শেষে জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা হস্তক্ষেপ করেন। তাঁর নির্দেশে স্থানীয় পঞ্চায়েত তরফে চাষিদের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করে। বোহার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান অশোক ভকতের কথায়, “মিনি টিউবওয়েল বসা সত্ত্বেও চাষিরা ওই পুকুর ঘেরার ব্যাপারে আপত্তি তুলেছিলেন। তাঁদের বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। শেষে ঠিক হয়, জলসেচের জন্য পাঁচিলের গায়ে দু’টি ফাঁক রাখা হবে। এর পরেই চাষিরা আপত্তি প্রত্যাহার করে নেন।” তবে তাঁদের কেউই এ নিয়ে আর মুখ খুলতে চাননি।
জাকরা ও তার আশপাশের বড়োয়া, সিদঘোরিয়া, গোলামপাড়া, বাঁকাদা, টিকিপুর, ও দিকে মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রাম, খাঁদরা, বামুনিয়া, ভাগরা ইত্যাদি গ্রামে গোলাম কাদেরের যথেষ্ট পরিচিতি আছে। তাঁর বাবা মহম্মদ জাকারিয়া ও দাদু মহম্মদ আমিন পির হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিলেন। দেশ ও দেশের বাইরে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, আরব দেশ, বাংলাদেশ থেকে শিষ্য-শিষ্যারা ‘প্রণামী’ পাঠান। তার কিছুটা এলাকার লোকের বিপদে-আপদে খরচ করেন কাদের। পঞ্চায়েতপ্রধানের কথায়, “১২-১৪টা গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়ান উনি। হিন্দু-মুসলমান ভেদাভেদ নেই।” গ্রামের উত্তম হাজরা, হারু শেখ, রাধু পণ্ডিতেরাও একই কথা জানান।
কাদের বলেন, “এমন কিছু কাজ করতে চাই, যাতে বহু মানুষ উপকৃত হন। কারও শান্তিভঙ্গ করতে চাই না। তাই চাষিদের আপত্তিকে সম্মান দিয়ে পাঁচিলে ফাঁক রেখেছি। যখন প্রয়োজন হবে, তখনই ওঁরা পুকুর থেকে সেচের জল নিতে পারবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.