|
|
|
|
বার্তা পৃথ্বীরাজকেও |
পওয়ারের মান ভাঙাতে সমন্বয় কমিটি কেন্দ্রের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
শরদ পওয়ারকে সন্তুষ্ট করতে ইউপিএ-তে একটি সমন্বয় কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেন মনমোহন-সনিয়া। ইউপিএ-সরকারের আট বছরের মাথায় এই প্রথম শরিকি সমন্বয়ের জন্য কমিটি তৈরি হচ্ছে। শুধু এনসিপি নয়, তৃণমূল, ডিএমকে থেকে শুরু করে সব শরিক দলের প্রতিনিধিরাই এই কমিটিতে থাকবেন। কমিটির প্রধান হবেন সনিয়া গাঁধী।
এনসিপি-র অবশ্য কেন্দ্রের থেকেও বেশি মাথাব্যথা ছিল মহারাষ্ট্র নিয়ে। ঠিক হয়েছে, কেন্দ্রের মতো সেখানেও কংগ্রেস ও এনসিপি-র সমন্বয়ের জন্য কমিটি তৈরি হবে। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের তরফে আজ মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণকেও এনসিপি-র ‘মতামত’ ও ‘উদ্বেগ’-এর বিষয়গুলিকে আরও গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। দিনকয়েক আগেই শরদ পওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন ইউপিএ-তে থাকলেও তাঁরা সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন জানাবেন। কিন্তু আজ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে কংগ্রেস ও এনসিপি-র শীর্ষনেতৃত্বের মধ্যে বৈঠকের শেষে প্রফুল্ল পটেল জানান, এনসিপি-র সব মন্ত্রীরাই নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী ও সনিয়া গাঁধী তাঁদের উদ্বেগে সাড়া দিয়েছেন।
বস্তুত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বেশ কিছু দিন ধরেই কেন্দ্রে সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের দাবি জানাচ্ছেন। পওয়ারও অন্য শরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। আজ সংসদের সেন্ট্রাল হলে মমতার সঙ্গে পওয়ার-কন্যা সুপ্রিয়া সুলের কথা হয়। এর পর মনমোহন সিংহ জানান, “আমরা যে কোনও বিষয়ে কথা বলতে রাজি। রাজনীতিতে দেওয়া-নেওয়া চলতেই থাকে।” আজ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের বৈঠকে ঠিক হয়, প্রতি মাসে অন্তত এক বার ইউপিএ-র সমন্বয় কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে নীতিগত ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। রফা সূত্র ঘোষণা করে সনিয়া, মনমোহন, পওয়ার ও পটেলের সই করা বিবৃতিও জারি হয়।
এই বিবৃতিই আজ এনসিপি-র ‘মুখরক্ষা’-র কাজ করে। কারণ কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছিল, পওয়ারের বিদ্রোহের আসল কারণ ছিল মহারাষ্ট্রে তাঁর দলের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত। সেই জন্যই কেন্দ্রে সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি এবং মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পৃথ্বীরাজ চহ্বাণকে সরানোর দাবি তোলে এনসিপি। এনসিপি অবশ্য সে কথা মানতে চায়নি। কিন্তু দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ায় তারা সরকারে থেকে যাচ্ছে, তেমন কিছু খাড়া করাও জরুরি ছিল এনসিপি-র সামনে। ওই যৌথ বিবৃতি দেখিয়ে তাই প্রফুল্লরা যুক্তি দিয়েছেন, তাঁরা শরিক হিসেবে যে বাড়তি গুরুত্ব ও সম্মান চেয়েছিলেন, তা আদায় করা গিয়েছে। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, কংগ্রেস বা এনসিপি, কারও পক্ষেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয় যে জোট টিকিয়ে রাখতে পাওয়ারের ভাইপো অজিত পওয়ারের দুর্নীতির তদন্ত হবে না। তাই দু’তরফেরই এই বিবৃতি প্রয়োজন ছিল।
আজকের ঘটনায় মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে পৃথ্বীরাজের আয়ু আরও বাড়ল বলেও মনে করা হচ্ছে। পৃথ্বীরাজ এনসিপি-র মন্ত্রীদের দুর্নীতির তদন্ত শুরু করায় তাঁকে পদ থেকে সরানোর দাবি তোলে এনসিপি শিবির। কংগ্রেসের মধ্যে পৃথ্বীরাজের বিরোধী গোষ্ঠীও তাঁর বিরুদ্ধে এই সুযোগে সরব হয়। অভিযোগ তোলে, পৃথ্বীরাজের আমলে সরকারি কাজকর্ম হচ্ছে না। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব শরিকি চাপের কাছে মাথা নুইয়ে তাঁকে সরাতে রাজি ছিলেন না। তবে এনসিপি-র সম্পর্কে ‘নরম মনোভাব’ নেওয়ার বার্তা আজ তাঁকে দেওয়া হয়েছে। পৃথ্বীরাজ কী ধরনের ‘নরম মনোভাব’ নিচ্ছেন, তা অবশ্য আগামী দিনেই দেখা যাবে। |
|
|
|
|
|