নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
তাঁর ফেসবুক ওয়ালে ওকোলি ওডাফার এজেন্ট চিমা ওকোরি বিতর্কিত প্রশ্ন তুলেছেন, টোলগে ওজবে-কে সুপরামর্শ দেওয়ার জন্য কি কেউ নেই?
সুপরামর্শ পেলে টোলগে কী করবেন, স্পষ্ট নয়। বরং পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে, তাতে অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ডের ঝামেলা সহজে মিটছে না। ইস্টবেঙ্গল যে তাঁকে সহজেই ছাড়ছে না, সেটা মঙ্গলবার পরিষ্কার করে জানিয়ে দিল তারা। মামলাও তারা তুলছে না। ক্লাবের অন্যতম প্রধান কর্তা দেবব্রত সরকার স্পষ্ট বললেন, “টোলগে যে আমাদের ফুটবলার, সেটা এখন প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। তাই ওকে ছাড়ব কি না সম্পর্ণ আমাদের ব্যাপার। তবে একটা কথা বলতে পারি, তিন দিনের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্ত হচ্ছে না।” কথাবার্তায় যা ইঙ্গিত, তাতে এয়ার লাইন্স কাপের প্রথম ম্যাচে (৮ অগস্ট) টোলগের খেলা কঠিন মোহনবাগানের হয়ে।
সোমবার গভীর রাতে কলকাতায় পৌঁছে মোহনবাগান কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন টোলগে। তার পর থেকে তিনি প্রকাশ্যে আসছেন না। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে ফোনে ধরা হলে তিনি শুধু বললেন, “এখন আমার কিছু বলার নেই। যা বলার দু’দিন বাদেই বলব।” তার পর যত বারই তাঁকে ফোনে ধরার চেষ্টা করা হল, তত বার ফোন ধরেননি। মাঝে মধ্যে মোহনবাগানের গোপন ডেরায় বসে এমএসএস করছেন, “কিছু বলার নেই।” “সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা বারণ।” “সমর্থকদের এখনই কিছু বলার নেই।”
টোলগেকে নিয়ে জট মেটাতে মোহনবাগান কর্তারা এখন দ্বারস্থ ইউ বি-র। আজ ম্যাকডাওয়েল কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন টোলগে। মোহনবাগান তাঁবুতে হতে পারে বৈঠক। সেখানেই ঠিক হবে, টোলগে তাঁর জরিমানার ১৫ লক্ষ টাকা জমা দেবেন কি না। তিনি ভবিষ্যতে কী করবেন। মোহনবাগান কর্তারা এ নিয়ে একটি কথাও বলতে চাননি। তবে টোলগের ক্ষমা চেয়ে চিঠি দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ইস্টবেঙ্গলে ইউ বি-র প্রতিনিধিরা ‘অনিচ্ছুক ঘোড়া’ টোলগেকে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী। কিন্তু ক্লাবে সেই মত গুরুত্ব পাচ্ছে না। প্রধান কর্তা দেবব্রতবাবুর বক্তব্য থেকেই তা পরিষ্কার। তিনি এমনও বললেন, “তিন বিদেশি নিয়ে খেলতে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। আর যে কোনও মুক্ত ফুটবলারকে তো যখন খুশি সই করানো যেতে পারে। সমস্যা কোথায়?” উল্টে লাল-হলুদ কর্তারা আদালতের রাস্তাও খোলা রাখছেন। ২৭ জুলাই আদালতে টোলগে মামলার প্রথম শুনানি। দেবব্রতবাবু বললেন, “আমরা ২৭ জুলাই আদালতে যাব। মামলা প্রত্যাহার করছি না।” টোলগের হয়ে মামলায় পার্টি হয়েছে মোহনবাগান। কিন্তু সেই বিষয়েও কোনও মন্তব্য করতে চাইছে না মোহনবাগান। সচিব অঞ্জন মিত্র বললেন, “২৭ তারিখ মামলা। ওই দিনেই জানাব।”
আজই ইস্টবেঙ্গলে খেলতে কলকাতায় পা রাখছেন চিডি এডে। জাতীয় শিবির নিয়ে দেশ বনাম ক্লাব ঝামেলা মিটছে ক্লাবগুলো নরম হওয়ায়। এই আবহেও ময়দানের প্রথম দুটো প্রশ্ন অন্য।
এক) টোলগে কবে মাঠে নামবেন?
দুই) তিনি কি আদৌ মোহনবাগানে খেলতে পারবেন? উত্তর খুঁজতে গিয়ে মঙ্গলবার দু’রকম ছবি দেখা গেল দুই ক্লাবে। মোহনবাগানে যেখানে হতাশা, তখন চাপা উল্লাস ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁবুতে। ৬ অগস্ট ইস্টবেঙ্গল প্রেসিডেন্ট প্রণব দাশগুপ্ত কলকাতায় ফিরলে আলোচনা শুরু করার কথা বললেন দেবব্রতবাবু। তার আগে টোলগে নিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা হওয়ার সম্ভাবনা বেশ কম।
টোলগে ক্ষমা চেয়ে জরিমানা দিল, পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গল তাদের প্রস্তাবে রাজি হল না। এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন? আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “টোলগের জবাব না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না। ও কী উত্তর দেয় দেখি, তার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।” ইস্টবেঙ্গল অনড়। মোহনবাগানে কুলুপ। টোলগে সারাদিন অন্তরালে। রাজ্য ফুটবল সংস্থা দু’পক্ষের দিকে তাকিয়ে। টোলগে বিতর্ক কিন্তু সহজেই মিটছে না। |