বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে আইন করছে রাজ্য। (৫-৭) শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে এ রাজ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হলে তা হবে সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্ত। আমি কলকাতা বিশ্ববিদালয়ের প্রশাসনে কর্মরত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্মে জড়িয়ে থেকে যে-অভিজ্ঞতা হয়েছে তার ভিত্তিতে বলতে পারি যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল গবেষণা ও ডিগ্রি প্রদান। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে গবেষণার মানের সঙ্গে আপস করার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাধান্য পাবে অর্থ, মেধা নয়।
এ রাজ্যে বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ আগেই মাথাচাড়া দিয়েছে। যেগুলি পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি) আওতাধীন। এই সব বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অর্থের বিনিময়ে সহজেই ভর্তি হওয়া যায় এবং ডিগ্রি লাভ করা যায়। বলাই বাহুল্য, এই সব কলেজে যাঁরা পড়াশোনা করেন, তাঁরা মেধার দিক থেকে কিছুটা হলেও পিছিয়ে-পড়া ছাত্রছাত্রী। তবে এত দিন আশার কথা ছিল, এই কলেজগুলিতে শুধু মাত্র স্নাতক স্তরে পড়াশোনা চলে। কিন্তু প্রস্তাবিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনো হবে এবং শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, সাধারণ ডিগ্রি পড়ারও ব্যবস্থা থাকছে। বেসরকারি উদ্যোগে চালিত বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হবে মুনাফার উদ্দেশ্যে। এর ফলে, আমাদের রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কতটা উচ্চমান বজায় রাখতে পারবে, সে বিষয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
এ রাজ্যে বেসরকারি স্কুল ও বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ চালু হওয়ার পর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পূর্বে সরকারের আর এক বার সব দিক বিবেচনা করা উচিত। এ বিষয়ে এ রাজ্যের, ভিন রাজ্যের এবং বিদেশের শিক্ষাবিদদের পরামর্শ গ্রহণ করা যেতে পারে। রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কিছু সমস্যা আছে। সমস্যাগুলি খতিয়ে দেখে তা সমাধানের উপায় খুঁজতে হবে। শিক্ষাকে আরও কর্মসংস্থানমুখী পথে চালিত করা দরকার।
রাজ্য, কেন্দ্র ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সম্মিলিত উদ্যোগে শিক্ষার প্রসারের পথ খুঁজতে হবে। শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্য শিক্ষাকে সর্বজনীন করা, কিন্তু সেটি করতে গিয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানের সঙ্গে আপস করা ঠিক হবে না। উচ্চশিক্ষার বিপুল ব্যয় বহন রাজ্যের কাছে সমস্যা হলে রাজ্যকেই তার সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। উচ্চশিক্ষার দরজা শুধুমাত্র মেধাবীদের জন্য খোলা, কিন্তু স্বল্পমেধার বিত্তবানদের কাছে তা বন্ধ রাখাই কাম্য।
সুদীপ চট্টোপাধ্যায়। সালকিয়া, হাওড়া-৬
|
পূর্ব রেলওয়ের হাওড়া-তারকেশ্বর শাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হরিপাল। স্টেশনের কাছ থেকে ৯, ৯-এ এবং ১০ নং বাস যথাক্রমে উদয়নারায়ণপুর, রাজবলহাট, জাঙ্গিপাড়া ও বড়গাছিয়া পর্যন্ত চলাচল করে। এই রাস্তায় বিভিন্ন দূরবর্তী জায়গার ট্রেকার ও অটো যাতায়াত করে। ফুরফুরা-তারকেশ্বরের মধ্যে ট্রেকার চলে এই রাস্তা দিয়েই। এই রুটের পাশেই পুণ্যতীর্থ আঁটপুর। কিন্তু হরিপাল লেভেল ক্রসিং পার হলেই রাস্তার অবস্থা ভীষণ খারাপ। রাস্তার কোথাও কোথাও বড় বড় গর্ত। কোথাও আবার পিচের অস্তিত্ব বিলুপ্ত। তা ছাড়া, দুটি গাড়িকে পাশ দেওয়ার মতো জায়গার অভাব। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় বাস টলোমলো। খাদের মধ্যে গাড়ি পড়ে গেলে সমূহ বিপদ। সাইকেলেও যাতায়াত করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। সংস্কারের কোনও ব্যবস্থা দীর্ঘ দিন চোখে পড়ে না।
বিদ্যুৎ ভৌমিক। তারকেশ্বর, হুগলি |