মহিলাদের মারধর করে, বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে ‘নিরাপরাধ’ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এমনই অভিযোগ তুলে রবিবার সকাল থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বসিরহাট থানার আইসি-র ঘরের সামনে বসে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। পুলিশ অবশ্য সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
বসিরহাট থানার আইসি শুভাশিস বণিক বলেন, “খুনে জড়িত অভিযোগে শিবরতন সরকার ওরফে ভোটোকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্ত প্রবীর দে ওরফে রাজু পলাতক। খুনে অভিযুক্ত ওই দু’জনকে খুঁজছিল পুলিশ। ওই রাতে বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে এলাকায় গিয়ে শিবরতনকে ধরা হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ মিথ্যা। স্থানীয় বাসিন্দাদের সামনেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” |
বসিরহাটের সাঁইপালার দে পাড়ার অটো চালক শিবরতনকে রবিবার বসিরহাট এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মার্চে বসিরহাট স্টেশন সংলগ্ন টাকি রাস্তার উপর বোমা মেরে এবং গুলি করে যুব কংগ্রেস নেতা পরিমল সর্দারকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। পুলিশের দাবি, খুনের ঘটনা-সহ কয়েকটি মামলায় শিবরতন এবং প্রবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে গুলি চলছে। চুরি-ছিনতাই বাড়ছে। সে দিকে পুলিশের লক্ষ নেই। সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ দলীয় কর্মীকে ধরেছে। তৃণমূল নেতা বাপি বসু, বাদল মিত্র বলেন, “পরিমল সর্দার খুনের ঘটনায় সেই সময় কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তারপর বিষয়টি মিটে যায়। ওই ঘটনায় আমাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। এতদিন পর হঠাৎ শনিবার রাতে পুলিশ মিথ্যা অভিযোগে দুই কর্মীর বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়ে এক জনকে গ্রেফতার করল।”
শিবরতনের স্ত্রী সোমাদেবীর কথায়, “রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ পুলিশ এসে দরজা খুলতে বলে। আমরা সে সময় ঘুমোচ্ছিলাম। দরজা খুলতে দেরি হচ্ছে দেখে ওরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে আমার স্বামীকে মারতে মারতে নিয়ে যায়। আমায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।” আর প্রবীরের মা দীপালিদেবীর কথায়, “ছেলে বাড়িতে নেই বলায় পুলিশ ঘরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়ে সব তছনছ করে। ছেলের ঘর খুলতে বাধা দেওয়ায় আমায় ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।”
প্রতিবাদে এ দিন বসিরহাট উত্তরের বিধায়ক এ টি এম আবদুল্লা, সুবীর সরকার, সুরেশ মণ্ডল-সহ শতাধিক তৃণমূলকর্মী বসিরহাট থানায় বিক্ষোভ দেখান। বিধায়ক বলেন, “আমরা চাই পুলিশ দোষীদের ধরুক। কিন্তু নিরাপরাধ কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর, মহিলাদের মারধর মানা যায় না। আমাদের বিশ্বাস কারও প্ররোচনায় পুলিশ এ কাজ করছে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে সে দিকে পুলিশকে নজর রাখতে হবে। নিরাপরাধ শিবরতনকে ছাড়তে হবে।” ঘটনাটি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানানো হচ্ছে বলে তিনি জানান। |