হেরেও লড়াই ছাড়তে রাজি নন পূর্ণ সাংমা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ভোটযুদ্ধে হেরেও লড়াই থামাতে চাইছেন না পূর্ণ অ্যাজিটক সাংমা। ভাবী রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানালেও সাংমা আজ শুধু এই নির্বাচন ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলেই ক্ষান্ত হননি, আইএসআই বিতর্কে এ বারে আদালতে যাওয়ারও তোড়জোড় করছেন তিনি।
সাংমার অভিযোগ, ভারতের মতো গণতান্ত্রিক কাঠামোতে যে কোনও নির্বাচন যে ভাবে নিরপেক্ষ হওয়া উচিত, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন তা হয়নি। বরং ভোট নেওয়ার জন্য অ-কংগ্রেসি রাজ্য এবং তাদের নেতাদের কাউকে আর্থিক
|
পূর্ণ অ্যাজিটক সাংমা |
প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে, কাউকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, কাউকে ভয়ও দেখানো হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকারকে ৫৭ হাজার কোটি ও বিহারকে ২৭ হাজার কোটি টাকা প্যাকেজ দেওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট পাওয়ার জন্য আরও অনেক পন্থার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট (আইএসআই) থেকে প্রণববাবুর ইস্তফা-বিতর্ক নিয়ে আদালতে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তিনি। সাংমা বলেন, “পরশু বৈঠক করে আদালতে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
সাংমার নির্বাচনী এজেন্ট এবং বিজেপি নেতা সত্যপাল জৈন আজ বলেন, “ভাবী রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি আইনি ব্যাপার। সংবিধান অনুসারে আজ ফল ঘোষণার পর থেকে এক মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচনী আবেদন জানানোর অধিকার আমাদের কাছে রয়েছে।” সূত্রের মতে, ৪ অগস্টের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী সাংমা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন। এ ধরনের মামলার ক্ষেত্রে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ শুনানি করে। বছর দুয়েকের মধ্যে সাংমা যদি এই মামলায় জয়লাভ করতে পারেন, তা হলে অনায়াসে প্রণববাবুকে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বিদায় নিতে হবে এবং সাংমা সেখানে স্থলাভিষিক্ত হবেন।
যদিও প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার ব্যাপারে বিজেপি শিবিরে দ্বিমত রয়েছে। দলের একটি অংশ মনে করে, এত ব্যবধানে পরাজয়ের পর প্রণববাবুর বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার কোনও অর্থ হয় না। লোকে মনে করবে, নির্বাচনে হেরে এখন ঘুরপথে জয় হাসিল করতে চাইছে বিজেপি। তার উপর আর দু’বছরের মাথায় লোকসভা নির্বাচন। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিবর্তে বরং রাজনৈতিকভাবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই লড়াই করা উচিত। রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে লড়াই করাটা কোনও ভাবেই কংগ্রেস-বিরোধী কর্মসূচি হতে পারে না। লোকে হাসাহাসি করবে এই বিষয়টি নিয়ে। আর লোকসভার পরে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলে এখন থেকেই ভাবী রাষ্ট্রপতির বিরাগভাজন হয়ে লাভ নেই। সে কারণে আর আদালতে না যাওয়ার ব্যাপারে সাংমার উপরে চাপ বাড়াচ্ছেন বিজেপির কিছু নেতা।
কিন্তু সাংমা শিবিরের যুক্তি ভিন্ন। তাঁদের মতে, রাষ্ট্রপতি গোটা দেশের, সব দলের হলেও ভুলে গেলে চলবে না তিনি কংগ্রেসেরই সক্রিয় নেতা ছিলেন। সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হিসাবে এত দিন নিজের ভূমিকা পালন করেছেন। ফলে আদালতে মামলা হলেই নোটিস পাঠানো হবে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে। তখন রাষ্ট্রপতিকেও তার জবাব দিতে হবে। রাষ্ট্রপতিকে সুপ্রিম কোর্ট ডেকে পাঠাতেও পারে। ফলে এ নিয়ে যত বিতর্ক হবে, সংবাদমাধ্যমেও তা ফলাও করে প্রচার হবে। কংগ্রেসকেও রাজনৈতিকভাবে তাদের নিজেদের প্রার্থীর জন্য ব্যাকফুটে যেতে হবে। তার সুফল লোকসভা নির্বাচনেও ঘরে তুলতে পারে বিজেপি। |