|
|
|
|
|
শিয়রে পশমের মেলা, আঙুলখেলা
স্ট্রেটনিং, কালার, সেটিং স্টাইল-এর দাপটে চুলটাই যে যায় যায়!
নির্জীব, জট পড়ছে, সংখ্যায় কমছে। এর জন্যই আছে
সালোঁ-র চিকিৎসা। কেরাটিন ও সফ্নিং ট্রিটমেন্ট।
জানালেন দীপন পাল |
|
|
মায়াবি জাদুদণ্ড, আশ্চর্য প্রদীপ, ইচ্ছাপূরণ আংটি যেমন সকলে চায়, তেমনই চমৎকারী চুল পাওয়ার অদম্য বাসনা কিশোরী, বৃদ্ধা সকলের মনে জমা হয়ে আছে। যত দিন যাচ্ছে, চুল তত কম বয়স থেকে উঠছে। এখন প্রতি দিনই চুলের বিভিন্ন স্টাইল, কালারের বাহার, সেটিং-এর নিত্যনতুন কৌশল বাজারে এসে উপস্থিত হচ্ছে। শুধুমাত্র চুল নিয়েই ফ্যাশন শো হচ্ছে। সে বিষয়টি কিছু দিন আগে পর্যন্ত পোশাকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। সুতরাং বুঝতে পারছেন, আপনার জীবনে চুলের ভূমিকা কতখানি? কিন্তু চুলই যদি না থাকে তবে তো কোনও স্টাইলই আপনি করতে পারবেন না।
এই সব শুনে হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই। চুলকে ধরে রাখার অনেক উপায়ই হাতের নাগালে এসে গেছে। তার মধ্যে একটি হল কেরাটিন ট্রিটমেন্ট। এটি মূলত একটি প্রোটিন ট্রিটমেন্ট। প্রাণহীন চুলে এই চিকিৎসাপদ্ধতি প্রাণ এনে দেবে। যাঁদের চুলে প্রচণ্ড জট পাকিয়ে যায় এবং যাঁদের চুল খুব কোঁকড়ানো, তাঁদের জন্য এটি বিশেষ উপকারী। এখন বেশির ভাগ লোক জন কালারিং, স্ট্রেটনিং, পার্মিং-এর দিকে বেশি ঝুঁকছেন, ফলে চুলও রুক্ষ ও প্রাণহীন হয়ে যাচ্ছে এবং খুব উঠেও যাচ্ছে। এই ট্রিটমেন্টটি এই ক্ষতির হাত থেকে চুলকে বাঁচাচ্ছে। |
|
পদ্ধতি |
চারটি জিনিসের সংমিশ্রণে পদ্ধতিটি হয়। প্রথমে হালকা কোনও শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুলটি ভাল ভাবে ধোয়া হয়। দ্বিতীয় ধাপে, একটি প্রোটিন যুক্ত মাস্ক লাগানো হয়। সেটি পাঁচ থেকে সাত মিনিট রাখা হয়। তৃতীয় ধাপে মাস্ক-এর পর শুধু জল দিয়ে ভাল করে ধোয়া হয়। চুলটা পুরোপুরি শুকিয়ে নেওয়া হয়। এই পদ্ধতিটির সাফল্য চুল শুকানোর ওপর অনেকটাই নির্ভর করে। তাই চুল বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে নিয়ে ভাল ভাবে শুকনো করতে হবে। চতুর্থ ধাপে, কেরাটিন ক্রিম লাগানো হয়। এই ক্রিমটি দুই তিন ধরনের হয়। কোন ক্রিম লাগানো হবে সেটি চুলের গুণগত মানের ওপর নির্ভর করবে। সাধারণ চুলের জন্য এবং যাঁদের চুলে অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহৃত হয়েছে, তাঁদের চুলে হালকা ক্রিম লাগাতে হবে। কার্লি ও ফ্রিজি এবং জট পড়া চুলে স্ট্রং ক্রিম লাগাতে হবে। পনেরো-কুড়ি মিনিট ক্রিমটি রেখে দেখতে হবে চুলের কিউটিকল কতটা নরম হয়েছে। এর পর আবার ভাল ভাবে চুল ধুয়ে নিতে হবে। ক্রিম যত ক্ষণ লাগানো থাকবে, তত ক্ষণ বার বার পরীক্ষা করতে হবে চুল কতটা নরম হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চুলের নমনীয়তার ওপর ট্রিটমেন্ট-এর সাফল্য অনেকটা নির্ভর করে। এর পরের ধাপে একশো শতাংশ ব্লো ড্রাই করতে হবে। সমস্ত চুলটিকে ছোট ছোট ভাগ করে নিয়ে ব্লো ড্রাই করতে হবে। এই চুল শুকোনোর পদ্ধতির ওপর নির্ভর করছে আপনার চুলের সেট কী রকম হবে, যেমন চুল আপনি বেশি কার্লি চান, না হালকা কার্লি হলেই চলবে? চুলের বন্ডগুলি ভেঙে যাচ্ছে। ফলে আপনি যেমন চান, চুল ঠিক সে রকম ভাবেই সেট থাকবে। সবশেষে নিউট্রিলাইজার ক্রিম দিয়ে তাকে ভরাট করতে হবে। এই ক্রিমটি দশ থেকে পনেরো মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এর পর আপনার ইচ্ছে মতো হেয়ার কাট করিয়ে নিন।
এই কেরাটিন ট্রিটমেন্টটি অবশ্যই কোনও ভাল পার্লারে দক্ষ ব্যক্তির দ্বারা করাতে হবে। কারণ, চুল ঠিক কখন নরম হচ্ছে, এবং চুলে ঠিক কতটা নমনীয়তা প্রয়োজন, সেটি দক্ষ ব্যক্তিই বুঝতে পারবেন। এই ট্রিটমেন্ট-এর ফলে চুল ওঠা এবং চুলের যে কোনও ক্ষতি কমে যাবে। চুলটির সৌন্দর্য বজায় থাকবে, সঙ্গে স্টাইলও। এটি ছ’মাস পর্যন্ত থাকবে। ফলে তত দিন চুল সেট করতে হবে না। সিনেমার হিরোইনদের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মহিলা অফিসযাত্রীরা এই ট্রিটমেন্টটির দিকে খুব ঝুঁকেছেন। কারণ, এটির পরিচর্যার কোনও দরকার হয় না ছ’মাস পর্যন্ত এবং স্টাইলটি যথাযথ থাকে। যাঁদের হাতে সময় কম, তাঁদের জন্য খুব ভাল। খরচ নাগালের মধ্যে। তিন হাজার টাকা থেকে শুরু। |
ছেলেদের জন্য |
সফ্ নিং ট্রিটমেন্ট বা ডিপ কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট। এটি পার্লারে বা বাড়িতে দু’জায়গাতেই সম্ভব। যে সব ছেলের চুল বেশির ভাগ সময় অবিন্যস্ত থাকে, ঘোরাঘুরি বেশি করতে হয়, তাদের জন্য এটি খুব ভাল। এটির ফলে একটি ‘নিউ লুক’ আসে।
• প্রথম ধাপ: ভাল করে শ্যাম্পু করতে হবে। • দ্বিতীয় ধাপ: স্ক্যাল্প বাদ দিয়ে সমস্ত চুলে কন্ডিশনার লাগাতে হবে। • তৃতীয় ধাপ: গরম জলে তোয়ালে ডুবিয়ে পাঁচ থেকে দশ মিনিট চুলে জড়িয়ে রাখতে হবে। • চতুর্থ ধাপ: আবার ভাল ভাবে শ্যাম্পু করতে হবে।
খরচ চারশো থেকে পাঁচশোর মধ্যে। |
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|
|
|
|
|