দু’পা-ই হারিয়েছেন, তবু অলিম্পিকে নামার ছাড়পত্র ক’দিন আগেই পেয়েছেন অস্কার পিস্তোরিয়াস। এ রকম রূপকথা কিন্তু শুধু পিস্তোরিয়াসকে দিয়েই শেষ হয়ে যাচ্ছে না। অসাধারণ অনুপ্রেরণার এ রকম কাহিনি কিন্তু আরও থাকছে অলিম্পিকে। সোনার হ্যাটট্রিকের স্বপ্নকে সফল করার লক্ষ্যে লন্ডন অলিম্পিকে নামছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইম ডং-হিউন। ২৬ বছরের এই তিরন্দাজ প্রায় অন্ধ। তা সত্ত্বেও এর আগে দু’বার অলিম্পিক টিম ইভেন্ট থেকে সোনা জিতেছেন। ইমের এ বারের লক্ষ্য, ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনা জেতার প্রায় অসম্ভব স্বপ্নকে সফল করা।
গুরুতর মায়োপিয়ায় আক্রান্ত ইমের দৃষ্টিশক্তি সাধারণ মানুষের চেয়ে দশগুণ কম। টেকনিক্যাল ভাষায় তিনি অন্ধ। |
নমুনা, কম্পিউটার কি-বোর্ডের হরফ পড়তে পারেন না ইম। তিরন্দাজির ঝলমলে চাঁদমারি তাঁর চোখে ছোট্ট, ঝাপসা একটা চাকতি। তা সত্ত্বেও তিনি রিকার্ভ তিরন্দাজিতে বিশ্বের এক নম্বর। নিজের বিভাগে বিশ্বরেকর্ডের মালিক। ২০০৪ এবং ২০০৮ অলিম্পিকে কোরিয়ার সোনাজয়ী তিরন্দাজি দলের সদস্য ইম দাবি করছেন, চাঁদমারি না দেখতে পাওয়াটা কোনও সমস্যাই নয়। তাঁর বক্তব্য খুব সহজ, “আমার কাছে টার্গেট দেখতে পাওয়া আর না পাওয়ার মধ্যে কোনও তফাত নেই।” ইম শুধু চেষ্টা করেন চাঁদমারির রংগুলো দেখার। “রেঞ্জে দাঁড়িয়ে টার্গেটটা যখন দেখি, শুধু চেষ্টা করি রংগুলো আলাদা আলাদা করে বোঝার। রংগুলো দেখতে না পেলেই সমস্যা হত।” এই রংগুলোও কিন্তু স্পষ্ট দেখতে পান না ইম। তাঁর কথায়, “মনে হয় অনেকগুলো রং যেন কেউ জলে গুলে দিয়েছে। বিভিন্ন রঙের মধ্যিখানের লাইনগুলো দেখতে পাই না।”
এত প্রতিবন্ধকতাতেও ট্রফির ঝুলি খালি নেই। শুরু ২০০৩ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রূপো জিতে। অলিম্পিকে দলগত সোনা ছাড়াও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ও বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সোনা জিতেছেন। এখন সবচেয়ে বড় প্রাপ্তির জন্য অপেক্ষা করছেন। অলিম্পিকে ব্যক্তিগত সোনা। সেটা যে কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় শৃঙ্গ হবে, স্বীকার করেছেন ইম। |