|
|
|
|
বিতর্ক সিপিএমে |
‘শুদ্ধ’ হয়ে দলে ফিরলেন প্রভাত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বহিষ্কারের প্রায় সাড়ে তিন বছরের মাথায় মেদিনীপুরের এক প্রাক্তন কাউন্সিলরকে দলে ফিরিয়ে নিল সিপিএম। দলীয় সূত্রে খবর, প্রভাত অধিকারী নামে ওই প্রাক্তন কাউন্সিলর দলে ফিরতে চেয়ে বেশ কয়েক মাস আগে আবেদন করেছিলেন। দলের সব স্তরে আলোচনার পরই তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়া হল। সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেদিনীপুর শহর জোনাল কমিটি। সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারকেও। দীপকবাবু বলেন, “সংশোধিত হয়ে কেউ যদি দলে ফিরতে চেয়ে আবেদন করেন, তখন সেই আবেদন খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।” শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক কীর্তি দে বক্সী-র কথায়, “সংশোধিত হয়ে কেউ যদি দলে ফিরে আসেন, সেখানে সমস্যা কোথায়? কাউকে বহিষ্কারের পর তাঁকে আর দলে নেওয়া যাবে না, পার্টিতে এমন কোনও বিধি নেই।”
তবে এ নিয়ে সিপিএমের অন্দরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকের বক্তব্য, প্রভাতবাবুকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তই ভুল ছিল। তখন পার্টি সব দিক খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। আবার অনেকের মতে, সেই সময় অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হয়েছিল। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তারপরই প্রাক্তন কাউন্সিলরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন শহর জোনাল নেতৃত্ব। প্রভাতবাবু শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। ২০০৩ সালে নির্বাচনে জেতেন। ডিওয়াইএফের ‘সক্রিয়’ কর্মী ছিলেন। শহরের তাঁতিগেড়িয়া, অশোকনগর ও তার আশপাশ এলাকায় তাঁর পরিচিতিও রয়েছে। এখন মেদিনীপুর কলেজে কাজ করেন। নাজিম আহমেদের নেতৃত্বাধীন মেদিনীপুর বিকাশ পরিষদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এক সময় পুরসভার ক্ষমতায় এসেছিল সিপিএম। তখন প্রভাতবাবুর হাতে ছিল স্বনির্ভর গোষ্ঠী দফতরের দায়িত্ব। ২০০৮-এর গোড়া থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি ছাড়াও কাউন্সিলর হিসেবে প্রভাব খাটানো, অবৈধ কাজে মদত দেওয়া-সহ নানা অভিযোগ ওঠে। তদন্ত শুরু হয়। ওই বছরই ডিসেম্বরে প্রভাতবাবুকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন জোনাল নেতৃত্ব।
জেলা সিপিএম সূত্রে বলা হচ্ছে, শুদ্ধিকরণ অভিযান চলছেই। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে শাস্তি পেতেই হবে। গত ১৫ বছরে প্রায় ৩৫০ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ৬ হাজার ৭০০ জনের সদস্যপদ খারিজ হয়েছে। তবে জেলা কমিটির এক নেতার স্বীকারোক্তি, “বেশ কিছু ক্ষেত্রে ক্রুটি থেকে যাচ্ছে। এর ফলে জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে।” সিপিএম সূত্রে খবর, গত বিধানসভা নির্বাচনের পরেই প্রভাতবাবুকে দলে ফেরানোর জন্য তাঁর অনুগামীরা নেতৃত্বের কাছে নানা ভাবে ‘সুপারিশ’ করতে থাকেন। ‘চাপ’ বাড়ান। জেলা নেতৃত্বও তাঁর কাজের উপর নজর রাখছিলেন। পরে দলে ফিরতে চেয়ে লিখিত আবেদন করেন প্রভাতবাবু। সম্প্রতি, সেই আবেদন খতিয়ে দেখেই তাঁকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বহিষ্কারের প্রায় সাড়ে তিন বছরের মাথায় প্রভাতবাবুকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ায় খুশি তাঁর অনুগামীরাও। |
|
|
|
|
|