বিচ্ছিন্ন খয়েরকাটা
কুনকি-যানে নদী পেরিয়ে পরীক্ষা-হলে
ন্যার জলে সেতু ভেসে বিচ্ছিন্ন নাগরাকাটার খয়েরকাটা গ্রামের ছাত্র ছাত্রীরা হাতির পিঠে চেপে ইউনিট টেস্ট পরীক্ষা দিতে পৌঁছল স্কুলে। মঙ্গলবার গ্রামের ছাত্র ছাত্রীদের হাতির পিঠে চাপিয়ে গ্রাম থেকে নিয়ে এসে নাগরাকাটার শুল্কাপাড়া ও কলাবাড়ি এলাকার দুটি স্কুলে পৌঁছে দেয় জেলা প্রশাসন। সোমবার বিকেল থেকে কুচি ডায়না নদীর বন্যায় বিচ্ছিন্ন খয়েরকাটা গ্রাম। জলবন্দি বাসিন্দাদের ত্রাণ পৌঁছতে গরুমারা থেকে দুটি কুনকি হাতি নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার হাতির পিঠে চাপিয়ে ছাত্রছাত্রী ছাড়াও অসুস্থদেরও গ্রাম থেকে বাইরে পাঠানো হয়। বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরও পাঠানো হয়েছে। গ্রামে নদীর জল কমতে থাকায় মঙ্গলবারে অবশ্য গ্রাম থেকে জল নেমে গিয়েছে। তবে সেতু ভেঙে যাওয়ায় গ্রামটির সঙ্গে যোগোযোগ এ দিনও বিচ্ছিন্ন। মঙ্গলবার পৃথক ভাবে নাগরাকাটার বন্যাকবলিত খয়েরকাটা গ্রাম পরিদর্শন করেছেন সেচমন্ত্রী ও বনমন্ত্রী এদিন সকালে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। গ্রামে গিয়ে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজের তদারকি করেন। গ্রামের জনজীবন স্বাভাবিক করতে সেনা বাহিনীর সাহায্য নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সেতু তৈরির কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
স্কুলে-পিঠে
ছবি তুলেছেন দীপঙ্কর ঘটক।
সেই কাজ দ্রুত শেষ করা এবং পরবর্তীতে কুচি ডায়না নদীতে একটি স্থায়ী সেতু তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন সেচ মন্ত্র। সেতু তৈরির কাজে বা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেচ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে অভিযোগ থাকলে বাসিন্দারা যাতে সরাসরি তাকেই ফোনে জানাতে পারেন সে কারণে বাসিন্দাদের কাছে নিজের মোবাইল ফোনের নম্বরও দিয়েছেন সেচমন্ত্রী। হাতিতে করে বন্যাকবলিত বাসিন্দাদের ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজ শুরু করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সেচমন্ত্রী মানস ভুইঁয়াও। এ দিন তিনি বলেন, “ত্রাণ ও উদ্ধারে যেন কোনও খামতি না থাকে সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে কঠোর নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছি। গ্রামের বাসিন্দারা একটি স্থায়ী সেতুর দাবি তুলেছেন। সেই বিষয়েও আলোচনা করেছি। প্রয়োজনে সেচ দফতরের অর্থ সাহায্য করা হবে। পাশাপাশি কুচি ডায়না নদীর বন্যায় ভবিষ্যতে গ্রামের যেন কোনও ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর রেখে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে সেচ আধিকারিকদের।” এলাকার বিধায়ক যোশেফ মুন্ডাও সেচমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। বিধায়ক বলেন, “কুচি ডায়নার যেখানে যেখানে বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। সেখানে দ্রুততার ভিত্তিতে কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন সেচমন্ত্রী। প্রশাসনের সঙ্গে তিনি আলোচনা করে বাসিন্দাদের সব রকম ত্রাণের সুবিধে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।” সেচমন্ত্রীর পরিদর্শনের কিছু পরে রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মণও খয়েরকাটা গ্রামে পৌঁছান। হাতির পিঠে চড়ে কুচি ডায়না নদী পাড় হয়ে বনমন্ত্রী বিচ্ছিন্ন খয়েরকাটা গ্রামে যান. বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। খয়েরকাটায় বনদফতরের একটি বিট অফিস নদী ভাঙনে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই অফিসটিও দেখেছেন বনমন্ত্রী. গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলেও বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান, আপাতত পরিস্থিতি সামাল দিয়ে দ্রুত স্থায়ী সেতু এবং কুচি ডায়না নদীর পাড় বাঁধাই করতে হবে। বাসিন্দাদের শুকনো খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে পরিস্থিতি জানিয়েছি. এলাকায় বিট অফিসের বিষয়ে প্রজোয়নীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বেশ কিছু গাছ উপড়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।” ত্রাণ নিয়ে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন বনমন্ত্রীপ্রতি বছরই তাদের বর্ষার সময়ে কুচি ডায়না নদী প্লাবিত হয়ে জলবন্দি থাকতে হয় বলে দুই মন্ত্রীর কাছেই এ দিন গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। প্রতি বছরই বন্যা থেকে গ্রামকে রক্ষা করতে নদীর পাড় বাঁধাইয়ের কাজ হলেও বর্ষার বৃষ্টিতেই সেই ব্যবস্থা ভেসে যায় বলে অভিযোগ করেছেন। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আর্জি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। সেচমন্ত্রী ও বনমন্ত্রী দুজনেই এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.