কর্মী খুনের প্রতিবাদে সূর্যের সভায় ভিড় তেহট্টে
মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালে গেলে শিশুমৃত্যু বেড়ে যায় আর বাজারে পা রাখলে জিনিসপত্রর দাম আকাশছোঁয়া হয়। সোমবার তেহট্টের নাজিরপুর হাইস্কুল ময়দানে একটি ধিক্কার ও প্রতিবাদ সভায় এই ভাবেই বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র। সম্প্রতি তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে দলের কয়েকজন নেতা ও কর্মী খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ সিপিএমের। তারই প্রতিবাদে ওই সভার আয়োজন করে সিপিএমের জোনাল কমিটি। সূর্যকান্তবাবুর পাশাপাশি এই দিন সভায় ছিলেন সিপিএমের স্থানীয় বিধায়ক ও সিপিএমের জেলা ও রাজ্য কমিটির সদস্যেরা। মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মৃতের পরিবারের পরিজনদেরও। সভা শুরুর আগে মৃতদের বাড়িতেও গিয়েছিলেন সূর্যকান্তবাবু।
সম্প্রতি নাজিরপুর বাজারে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন তেহট্টের মানিকনগরের পরিতোষ বিশ্বাস ও কানাইলাল বিশ্বাস। সভাতে সূর্যবাবু বলেন, “গত কয়েক দিনের মধ্যে এই এলাকায় আমাদের কয়েকজন কর্মী খুন হয়েছেন। রাজ্যে নতুন সরকার ১৪ মাসে পা রাখল। এর মধ্যে ৭৩ জন সিপিএম কর্মী খুন হয়েছেন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে। এই সব কিছুর বড় বিচারক মানুষ। তাঁরাই এর রায় দেবেন।” তিনি বলেন, “‘ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে’-যাঁরা ভাবছেন এ ক্ষেত্রে শুধু সিপিএম কর্মীরা খুন হচ্ছেন, তারা ভুল ভাবছেন।”
ছবি: কল্লোল প্রামাণিক।
তিনি আরও বলেন, “যারা এই সরকারকে নিয়ে এসেছে তাদের কপালেও ভোগান্তি রয়েছে। কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট করেই এই রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে। অথচ ওরা নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা করে। একে অপরকে ‘এ’ টিম বা ‘বি’ টিম বলে দোষারোপ করে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কয়েকদিন আগেই বলেছেন যে, তাঁদের ৯ কর্মী খুন হয়েছেন। তার মধ্যে দু’জনের খুনের দায় সিপিএমের উপর চাপিয়েছেন। বাকি ৭ জনকে তাহলে কারা মারল?” তিনি বলেন, “মুখমন্ত্রী বলছেন জঙ্গলমহল এখন শান্ত। মাওবাদী নেই। কিন্তু মমতা যখন বিরোধী দলে ছিলেন, তখন জঙ্গলমহলে মাওবাদী ছিল। তখন কখনও ছত্রধর তার মাথায় ছাতা ধরেছিল। কখনও মোটরসাইকেলে মমতাকে নিয়ে যাওয়া হত। তাহলে এখন জঙ্গলমহলে গেলে ষাট গাড়ি কনভয়, দু’জন ডামি নিয়ে যেতে হয় কেন? আমাদের মুখ্যমন্ত্রী তো ১০টা গাড়িও নিয়ে যেতেন না!” সূর্যকান্তবাবু বলেন, “এখন মাওবাদী না থাকলে তিনি তো একাই সেখানে যেতে পারেন।”
এ দিন কিষেনজির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “বেচারা কিষেনজি। তিনি বলেছিলেন মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান। অথচ তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর কিষেনজির কি হালটাই না হল! কিষেনজির নিরাপত্তা বাহিনীকে তৃণমূলের লোকেরা চিনে নিয়েছিল। তাই এই পরিণতি। এখন তাদেরই চকচকে পোশাকে নিয়ে আসছে ও আত্মসমর্পণের নাটক করাচ্ছে।’’ তৃণমূলের জোটকে তিনি ‘রামধনু’ বলে উল্লেখ করে বলেন, “রামধনু যেমন অস্থায়ী তেমনই এই জোটও স্থায়ী হবে না।” এ দিন সভা শুরু হয় বিকাল চারটে নাগাদ। শেষ বক্তা ছিলেন সূর্যকান্তবাবু। সভার প্রচার চলছিল বেশ কয়েকদিন ধরেই। এ দিনের আবহাওয়া মেঘলা থাকার জন্য উদ্যোক্তাদের আশঙ্কা ছিল মানুষের ভিড় নিয়ে। সাড়ে তিনটে নাগাদ সভা শুরুর আগে পর্যন্ত লোক ছিল কম। তারপর বাড়তে থাকে ভিড়। প্রায় ৮ হাজার মতো লোক হয়েছিল।
সূর্যকান্তবাবু জানান, বর্তমান সরকার কাউকে চাকরি দিতে পারছে না। নাম না করে তিনি বলেন, “রেল মন্ত্রীরই যদি চাকরি চলে যায়, তা হলে আপনাদের কী হবে?” বিরোধী নেতা বলেন, “যখন আমরা ক্ষমতায় ছিলাম তখন ওঁদের দল বিধানসভা ভাঙচুর করেছে। পুলিশের টুপি নিজে পরে পুলিশের মুখে চুনকালি লাগিয়েছেন। তখন কিন্তু আমরা গ্রেফতার করিনি। অথচ আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছেন।”
রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক গৌরীশঙ্কর দত্তের বক্তব্য, “সূর্যকান্তবাবু যা যা বলেছেন, তা সবই হতাশাগ্রস্তের প্রলাপ।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.