কলকাতা নিয়ে প্রদর্শনী
ঐতিহ্যের অন্দরমহল
লকাতা প্রাসাদের শহর। অনেক প্রাসাদ আজ নিশ্চিহ্ন, অনেকগুলি প্রহর গুনছে প্রোমোটারের পদধ্বনির। পুরসভার দাক্ষিণ্যে ‘ঐতিহ্যবাহী’ তকমা জুটেছে কারও কারও, অনেকের ভাগ্যেই অবশ্য শিকে ছেঁড়েনি। যাদের জুটেছে, তাদের হালও কিছু বদলায়নি। প্রাসাদনগরীর বহিরঙ্গ আজ তাই বড়ই মলিন। তবে অনেক অন্দরমহলই যে অমলিন, তা খুঁজে খুঁজে পৌঁছতে পারলে বোঝা যায়। আলোকচিত্র শিল্পী অনির্বাণ মিত্র গত ছ’বছর ধরে হেরিটেজ তালিকা মিলিয়ে সেটাই খুঁজে বেরিয়েছেন। ত্রিশটি বাড়ির তালিকা করে শুরু করেছিলেন সাদা-কালোয় ছবি তোলা। গোড়ায় যাঁরা দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তাঁরাই পরে শিল্পীর কাজ দেখে হদিশ দিয়েছেন তাঁদের অন্য শরিকদের বাড়ির, অথবা নিয়ে গিয়েছেন বাড়ির অন্দরমহলে। যা কিনা সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। উনিশ ও বিশ শতকের এই ধারার বাড়িগুলিই অনির্বাণের ছবির বিষয় হয়ে উঠেছে।
স্থাপত্যের বহিরঙ্গের সঙ্গে অনির্বাণের ছবিতে ধরা পড়েছে অন্দরমহলের চিত্র, ইউরোপীয় শিল্পবস্তু, ভাস্কর্য-চিত্রকলা, চিন জাপানের পোর্সেলিন, বেলজিয়ামের আয়না এবং ঝাড়বাতি। এর আগে ওঁর রাজভবনের অন্দরমহলের আলোকচিত্র একটি প্রদর্শনীর পর পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়েছে। এ বারে দু’টি পর্যায়ে সাদা-কালো ও রঙিন মিলিয়ে ছবির সংখ্যা ৩০০টি। তা থেকে বাছাই করা ৪৭টি ছবি নিয়ে আইসিসিআর-এ শুরু হয়েছে একটি মূল্যবান প্রদর্শনী ‘ফরগটেন গ্র্যাঞ্জার: স্টেটলি হোমস ইন দ্য সিটি অব প্যালেসেস’ শীর্ষকে। ১৩ জুলাই উদ্বোধন পর্বে একটি আলোচনা চক্রে ছিলেন ভারতী রায়, রুদ্রাংশু মুখোপাধ্যায়, টুকটুক কুমার, নিমাই ঘোষ এবং অনির্বাণ মিত্র। এটি চলবে ১৯ পর্যন্ত, রোজ ১১-৭টা। এ দিকে গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় শুরু হয়েছে আলোকচিত্রী অজয় শীলের প্রদর্শনী ‘চিৎপুরের গল্প রবীন্দ্র সরণীতে’। ১২৩২ বঙ্গাব্দের ‘সমাচার দর্পণ’-এ জানা যায় চিৎপুরে সে সময় ছিল যুগপৎ বাঘ এবং ডাকাতের ভয়। বেন্টিক স্ট্রিট থেকে বাগবাজার ট্রাম রাস্তার দু’ধারে জনজীবনের বৈচিত্র ক্যামেরাবন্দি করেছেন আলোকচিত্রী। চলবে ১৭ জুলাই পর্যন্ত, প্রতিদিন ২-৮টা।

স্বর্ণখনি
এফ এম ও রেডিয়ো জকি অধ্যুষিত এই দুনিয়ায় হারিয়ে যাওয়া এক স্বর্ণখনির খোঁজ দিয়েছেন ইন্দিরা বিশ্বাস তাঁর সংবাদ কথায় বেতার জগৎ বইয়ে (ছাতিম বুক্স)। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় আকাশবাণীর কথিকা, সংবাদ সম্প্রচার, নাটকের অনুষ্ঠান থেকে তৎকালীন ‘বেতার জগৎ’ পত্রিকার খুঁটিনাটি সবই চমকপ্রদ ভঙ্গিতে তুলে ধরেছেন তিনি। ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র দৌলতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র আজও অম্লান। রবীন্দ্রনাথের শবযাত্রার ধারাবিবরণীও দিয়েছিলেন তিনি! কলকাতা বেতারে প্রথম লাইভ খেলার ধারাবিবরণী ১৯৩০-এ। মোহনবাগান বনাম ক্যালকাটা ক্লাব, বিবরণী বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ও রাইচাঁদ বড়ালের। ‘বেতার জগৎ’ পত্রিকার প্রথম কার্যনির্বাহী সম্পাদক ‘মহাস্থবির জাতক’ খ্যাত প্রেমাঙ্কুর আতর্থী। পরে সেখানেই মহাযুদ্ধের গতিপ্রকৃতি নিয়ে কথিকা লিখছেন নীরদচন্দ্র চৌধুরী। প্রমথনাথ বিশী, গোপাল ভৌমিক থেকে দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় কে না তখন বলছেন বেতারে? তবে, সেই যুগে মেগাস্টার একজনই। কালিম্পং, পুরী থেকে সম্প্রচারিত হচ্ছে তাঁর কণ্ঠ। ১৯৩৬-এ বিবিসি থেকে সম্প্রচারিত হয় তাঁর কণ্ঠে রেকর্ড-করা কবিতা ও গান। তাঁর নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

দীপান্বিতা
পড়তেন স্কটিশ চার্চ কলেজে। আন্তঃকলেজ নাট্য প্রতিযোগিতায় ক্ষুধিত পাষাণ নাটকে নায়িকার ভূমিকায় ডাক পড়ল দীপান্বিতা রায়ের। সেখানেই আলাপ নাট্য-ব্যক্তিত্ব তরুণ রায়ের সঙ্গে। এর পর বহু নাটকে এক সঙ্গে অভিনয় করেন এই দম্পতি। এক পেয়ালা কফি আর এক মুঠো আকাশ পেশাদার মঞ্চে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ভবানীপুরে নিজস্ব রঙ্গমঞ্চ ‘থিয়েটার সেন্টার’ তৈরির পর সেখানেও নিয়মিত অভিনয় রজনীগন্ধা, আর হবে না দেরী, অঘটন আজও ঘটে, সাজাহান, অর্কিড, লেবেদেফের রঙ্গিনী, আগন্তুক ইত্যাদি নাটকে। পুত্র দেবরাজ রায়ের পরিচালনায় করেছেন বিষবৃক্ষ, বিপ্রদাসঅভিজ্ঞান শকুন্তলম নাটকে অভিনয়। উত্তমকুমারের সঙ্গে বিকেলে ভোরের ফুল এবং তরুণ মজুমদারের পথ ও প্রাসাদ ছবিতে অভিনয় করেন। পেয়েছেন ‘সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার’। ৫ জুন ছিয়াশি বছরে চলে গেলেন। ১৯ জুলাই তাঁর জন্মদিনে ‘থিয়েটার সেন্টার’-এ সন্ধে ছ’টায় স্মরণ সভা।

প্রাসঙ্গিক
বাঙালি জীবনে রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতা কতখানি, তা তুলে ধরতে এক অভিনব প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত ‘বৈতানিক’। কবির সার্ধশতজন্মবর্ষ উপলক্ষে গত দুই বছর অর্থাৎ ১৪১৬-এর ২৫ বৈশাখ থেকে শুরু করে ১৪১৮-এর ২৫ বৈশাখ পর্যন্ত আনন্দবাজার পত্রিকায় তাঁকে নিয়ে সংবাদ, প্রবন্ধ, সম্পাদকীয়, পুস্তক সমালোচনা এবং কলকাতার কড়চায় প্রকাশিত নানা লেখা স্থান পেয়েছে ‘সংবাদপত্রে প্রতিফলিত রবীন্দ্রপ্রাসঙ্গিকতা আনন্দবাজার পত্রিকা’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীতে। এলগিন রোডের শ্রীমতী আর্ট গ্যালারিতে এটি চলবে ২২ জুলাই পর্যন্ত।

বিতর্কিত
শো কজ-এর পর এই প্রথম মঞ্চে নামছেন ‘বিতর্কিত’ সেই অধ্যাপক। ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে ‘স্পন্দন’ দলের ‘ফিঙ্গারপ্রিন্টস ২৬/১১’ নাটকে নায়িকার ভূমিকায় শম্পা সেন। ‘বন্ধ’ নিয়ে একটি টিভি চ্যানেলে বলার পর ‘সরকার বিরোধিতা’র অভিযোগে সরকারি কলেজের এই শিক্ষিকাকে উচ্চশিক্ষা দফতর কারণ দর্শাতে বলে। তিনি এ জন্য অনুমতি নিয়েছেন কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে। শম্পা ইতিমধ্যে এর জবাব দিয়েছেন। কিন্তু নাটকের অনুমতি? “১৯৯৭-তেই সরকার আমাকে নাটক, টক শো, লেখালেখির অনুমতি দিয়েছিল। কত বার অনুমতি নেব? তা ছাড়া আমি নাটক করি, প্রাইভেট টিউশনি করি না,” প্রায় ঝাঁজিয়ে উঠলেন তিনি। শম্পা-অভিনীত চরিত্ররা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এ রকম লড়াকু ভঙ্গিতেই ঝাঁজিয়ে ওঠে যে! সে সংসদ ভবনে জঙ্গি হামলা নিয়ে ‘১৬ মিমি’, বা আবু ঘ্রাইবে মার্কিন অত্যাচার নিয়ে ‘অপারেশন ফ্লাশ’ যে নাটকই হোক না কেন! প্রতিবাদ এ বার সাঙ্গীতিক মূর্চ্ছনায়। ‘ফিঙ্গারপ্রিন্টস ২৬/১১’ই ইয়ানি ও ফিলিপ গ্লস সুরারোপিত প্রথম বাংলা নাটক। সেখানে সন্ত্রাসদীর্ণ নায়িকা সঙ্গীতেই খুঁজে পায় বাঁচার আশ্বাস।

মুখোমুখি
সাহিত্য-সিনেমা থেকে পর্বতারোহীর বিচিত্র জীবন-ক্যানভাসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অভিজ্ঞ সাংবাদিকের মতোই কলেজছাত্রীরা প্রশ্ন তুললেন। অপেশাদার সেই ছাত্রীদের জিজ্ঞাসার সস্নেহ জবাবে কখনও উঠে এল ছাত্র থেকে বৃহত্তর জীবনে উন্নীত হওয়ার পরামর্শ, কখনও বা লড়াকু জীবনের চড়াই পথের কথা। আশাপূর্ণা দেবী থেকে তারাপদ রায়, সুনীল-সুভাষ থেকে মহাশ্বেতা দেবী, নবনীতা দেবসেন বা তপন সিংহ, মৃণাল সেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শোভা সেন, জয় গোস্বামী থেকে চণ্ডী লাহিড়ী মায় এভারেস্টজয়ী বসন্ত সিংহরায়ের সাক্ষাৎকার পড়তে গিয়ে একঝলকে জানা হয়ে যায় তাঁদের জীবনালেখ্য। দুই মলাটে একুশ খ্যাতনামার নানা কথার সংকলন ‘মুখোমুখি’ প্রকাশ করেছে মুরলীধর গার্লস কলেজ। কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের শিক্ষকদের পরামর্শে ছাত্রীদের নেওয়া সাক্ষাৎকারের এই সংকলন গড়িয়াহাটে কলেজে খোঁজ করলেই মিলবে।

মল্লার উৎসব
স্বামী বিবেকানন্দের নীতি ও শিক্ষা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার, গোলপার্ক নিয়মিত আলোচনা সভার আয়োজন করে। এর বড় অংশ জুড়ে থাকে শাস্ত্রীয় কণ্ঠ ও যন্ত্র সঙ্গীত। এ ছাড়াও গত কয়েক বছর ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মল্লার উৎসব, বর্ষার উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত যার বিশেষত্ব। ১৯ জুলাই বিবেকানন্দ হলে অনুষ্ঠিত হবে এ বারের উৎসব। হিন্দুস্তানি রাগসঙ্গীত পরিবেশন করবেন সন্দীপন সমাজপতি, সেতারে পূর্বায়ন চট্টোপাধ্যায়। অন্য দিকে জন্মসূত্রে মালয়ালি হলেও বাবার কর্মসূত্রে ছোটবেলায় শান্তিনিকেতনে আসা দুই ভাইবোন মনোজ ও মনীষার। পাঠভবনে প্রথম পরিচয় রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে। মোহরদি, শান্তিদি’র মতো গুণী মানুষের সান্নিধ্যে গান শেখা। আজ সন্ধ্যায় রবীন্দ্রসদন-এ মনোজ-মনীষা নিবেদন করবেন রবীন্দ্রসঙ্গীতানুষ্ঠান ‘প্রেমের বাদল নামল’।

স্মরণ
‘তোমার গদ্য লেখার একেবারে নিজস্ব ধরনটি আমার পক্ষে একটা বড়ো আকর্ষণ; গল্প উপন্যাস থেকে কবিতার সদর্থক প্রয়োগ তো একেবারে সরেই যাচ্ছে মনে হয় সেখানে তোমার লেখা একটা বড়ো ব্যতিক্রম।’ শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন সুভাষ ঘোষালকে (১৯৪৮-২০১০)। ‘হীনযান’ ও ‘সন্ধিৎসা’র সম্পাদক সুভাষের তন্মাত্র, মণ্ডপ, চিদাকাশ, ক-বর্গ, বিসর্গসন্ধি, দামিনীকে রাখি ছেড়ে, অণুভালোক ইত্যাদি উপন্যাস-গল্প-কাব্যগ্রন্থ, বা বিভিন্ন প্রবন্ধগ্রন্থ বাংলা সাহিত্যকে ঋদ্ধ করেছে। ১৭ জুলাই তাঁর ৬৪তম জন্মবার্ষিকীতে সুভাষ ঘোষাল স্মৃতিরক্ষা কমিটি (সহযোগিতায় অহর্নিশ) সন্ধে ছ’টায় শরৎচন্দ্র ভবনে (২৪ অশ্বিনী দত্ত রোড) তাঁর প্রথম স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করেছে। ‘দুষ্প্রাপ্য বই-এর পুনর্মুদ্রণই কি বাংলা বই-এর প্রকাশককে বাঁচিয়ে রেখেছে?’ শীর্ষকে বলবেন শুভময় মণ্ডল। নানা অনুষ্ঠানের সঙ্গে সে দিন রবিশংকর বলকে ‘সুভাষ ঘোষাল স্মৃতি পুরস্কার’ অর্পণ করবেন শঙ্খ ঘোষ। অন্য দিকে সিনে সেন্ট্রাল-এর প্রাণপুরুষ অলক চন্দ্র চন্দ্রের স্মৃতিতে এ বার বক্তৃতা দেবেন বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০ জুলাই সন্ধে ৬টায় নন্দনে। বক্তৃতার পর দেখানো হবে তাঁর ‘এলার চার অধ্যায়’। উদ্যোগে সিনে সেন্ট্রাল।

বিজ্ঞানী
মালদহ থেকে জেনিভা। দূরত্বটা কম নয়। মালদহের বার্লো গার্লস হাইস্কুলের সেই মেয়েটি স্কুলে পড়ার সময় ডাক্তার হতে চেয়েছিল। উচ্চ মাধ্যমিকে অঙ্ক আর ফিজিক্স ভাল লেগে গেল। ফিজিক্সে অনার্স, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এসসি আর তার পর মুম্বই পাড়ি টাটা ইনস্টিটিউটে পিএইচ ডি করতে। অনেক বাধা পেরিয়ে সিলিকন ট্র্যাকার তৈরির কাজ শিখতে ইতালির পিসায়, সেখান থেকে জেনিভার সার্ন ও বর্তমানে এ শহরে সাহা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্সে গবেষক দলের সদস্য সুচন্দ্রা দত্ত। সম্প্রতি যে পরীক্ষায় হিগস্ বোসন কণা মিলল, তার অন্যতম শরিক সার্নের সদস্য তিনি। সি এম এস-এর একটি যন্ত্রাংশ হল সিলিকন ট্র্যাকার, যার কাজ হল প্রোটনে প্রোটনে সংঘর্ষে উৎপন্ন কণাগুলির গতি ও প্রকৃতি নির্ধারণ করা (সঙ্গে ভিতরের ছবি)। ১৯৯৭-২০০৮ পর্যন্ত সুচন্দ্রা এই ট্র্যাকারের ডিজাইন, ট্র্যাকার তৈরি থেকে শুরু করে ভূগর্ভে তা স্থাপন পর্যন্ত সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন। ২০০৮-’১০ পর্যন্ত সিলিকন ট্র্যাকার মনিটরিং-এর দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে তাঁর কাজ হল গোটা সি এম এস যন্ত্রের সমস্ত ট্র্যাকার থেকে সংগৃহীত তথ্যের কোয়ালিটি মনিটর করা। এই কাজে মোট তিন জন কো-অর্ডিনেটরের অন্যতম সুচন্দ্রা। এক জন রয়েছেন আমেরিকার ফামির্ ল্যাবে আর এক জন সার্নের অফিসেই, অর্থাৎ জেনিভায়। তাই গোটা সি এম এস পরীক্ষায় বিশ্ব জুড়ে কয়েক হাজার বিজ্ঞানী যুক্ত থাকলেও সুচন্দ্রার ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

প্রত্নসমীক্ষা
‘অতীত’ নিয়ে চর্চায় কোনও মহলেই আগ্রহের অন্ত নেই। কিন্তু পরীক্ষা পাশ আর ডিগ্রির বাইরে গবেষণার সুযোগ কোথায়? বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে প্রত্নতত্ত্ব চর্চার একটি কেন্দ্র নিভৃতে কাজ করে চলেছে এই শহরেই তথ্য সংস্কৃতি দফতরের অধীন সেন্টার ফর আর্কিয়োলজিক্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড ট্রেনিং, ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা বসু, বর্তমান ঠিকানা বেহালায় রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রহালয়ের পুরনো বাড়ি। অনেক নবীন গবেষক এখানে কাজ শুরু করে আজ দেশে-বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত। বিদেশি ভারতবিদ্দের গবেষণাগ্রন্থ ছাপা হয়েছে, উৎসাহ পেয়েছেন তারাপদ সাঁতরার মতো ‘পদাতিক’ গবেষকও। সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার, আর্কাইভের পাশাপাশি আছে ইংরেজিতে আন্তর্জাতিক মানের পত্রিকা: ‘প্রত্নসমীক্ষা’। সাম্প্রতিক সংখ্যায় ‘কোয়ান্টিটেটিভ অ্যানালিসিস’ নিয়ে ছটি মূল্যবান নিবন্ধের সঙ্গে আছে গড় মান্দারণ, মঙ্গলকোট ইত্যাদি উৎখননের প্রসঙ্গ, শশাঙ্কের এগরা তাম্রশাসন, কামরূপরাজ ধর্মপালের তাম্রশাসন, বাঁকুড়ার মন্দির এবং ওড়িশার ত্রিরথ মন্দির চিন্তার বিবিধ ফসল। শহর থেকে এমন গবেষণাপত্রিকা যে প্রকাশিত হচ্ছে, এটাই গর্বের!

মুক্তধারা
অপরাধী মন কখনও ভাল হতে পারে? খুন করতে যার হাত কাঁপে না, গারদের ওপারই তার বাকি জীবনের বরাদ্দ? কখনও ফিরে পাবে না সে স্বাভাবিক জীবন? নিজের মূক-বধির মেয়ে স্পৃহাকে দেখে এ সবই ভাবিয়েছিল নীহারিকাকে। মেয়ের অক্ষমতার গ্লানি, হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছিল। তাই বুঝি হাত বাড়িয়েছিল অন্য মূক-বধির বাচ্চাদের দিকে। এদের মুক্তির ভাবনাই এক দিন নীহারিকাকে পৌঁছে দেয় জেলের হাজার দুয়েক বন্দির মাঝে। ‘কালচার থেরাপি’কে আশ্রয় করে সে শোনায় মুক্তির কথা। শুধু বাইরেই নয়, লড়াইটা ছিল ঘরেও। ক্রিমিনাল ল’ইয়ার স্বামীর কাজ অপরাধীকে গারদে পোরা। যাঁর কাছে অপরাধীর অন্য পরিচয় থাকতে পারে না। তবুও নীহারিকা অন্ধকার থেকে তুলে আনতে চায় অন্তত কয়েক জনকে। এই নিয়েই শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়ের নতুন ছবি ‘মুক্তধারা’। শিবপ্রসাদের কথায়, ছবির অনুপ্রেরণা নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায়। তাঁর ‘বাল্মিকী প্রতিভা’ নাইজেল আকারা ওরফে ভিকিকে ফিরিয়ে দিয়েছিল স্বাভাবিক জীবন। ছবিতে বন্দির চরিত্রে সেই ভিকি। মুখ্য ভূমিকায় ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ‘ইচ্ছে’র আকাশছোঁয়া সাফল্য, দর্শকদের প্রত্যাশা কি চাপে রাখছে? আত্মবিশ্বাসী পরিচালকের জবাব, ‘একদমই না। ‘ইচ্ছে’ বুঝিয়েছে, স্টারডম নয়, চিত্রনাট্য আর গল্পই সাফল্যের মূলকথা। বলতে পারেন নতুন ছবি করার সাহস জুগিয়েছে।’

গুরু-শিষ্য সংবাদ
সালটা ১৯৩৯। শ্রাবণ আসন্ন। রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানপাগল ছাত্রটির কাছে খোঁজ নিচ্ছেন বর্ষামঙ্গল কত দূর? ছাত্রটির মাথায় দুষ্টুমি ‘এ বারে তো বর্ষামঙ্গল হবে না’। সে কি! ছাত্রটি যেন নিরুৎসাহ ‘ছেলেমেয়েরা বলছে, পুরনো গানে ওরা বর্ষামঙ্গল করবে না’। ইঙ্গিতটা ধরতে অসুবিধে হল না কবির। কপট রাগ দেখালেন হাতে এত কাজ! কিন্তু পরদিন সকালে ডাক পড়ল যেতেই হাতে দিলেন একটি নতুন গান ‘ওগো সাঁওতালী ছেলে’। পরদিন আর একটি ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’। এ বার বনমালীর সঙ্গে ষড় করে কাগজে রাগরাগিণীর নাম লিখে কবির টেবিলে রেখে এলেন। আবার রাগারাগি। ‘আমাকে শেষ পর্যন্ত ফরমায়েসি গান লিখতে হবে নাকি!’ অথচ গান আসতে লাগল বেহাগে, ইমনে, কীর্তনে, টপ্পায়। অত্যুৎসাহে ছাত্রটি কাগজে ‘বাগেশ্রী’ লিখে টেবিলে রেখে এলেন। গুরুদেব উপহাস করে উঠলেন ‘বাগেশ্রী! বাগেশ্রীতে বর্ষার গান হয় নাকি!’ উত্তর তৈরিই ছিল ‘এ সব নিয়ম আপনার ক্ষেত্রে খাটে না। আমার তো মনে হয় আনন্দবাজারের সম্পাদকীয় স্তম্ভটি আপনার হাতে দিলে তাতেও সুর বসাতে পারবেন। তা ছাড়া, বাগেশ্রীতে ঝড়ের রাতের গান আপনি তো আগেই লিখেছেন।’ শেষে হার মানলেন গুরু। ফল ‘সঘন গহন রাত্রি ঝরিছে শ্রাবণধারা’। পাগল ছাত্রটির জন্যই রবিজীবনের শেষ বর্ষামঙ্গলে ১৬টি নতুন গান লেখা হয়। রসায়নের উজ্জ্বল ছাত্র অথচ রবীন্দ্রসংগীতের টানে শান্তিনিকেতনে ভেসে আসা এই মানুষটি শৈলজারঞ্জন মজুমদার। তাঁর ১১৩তম জন্মবার্ষিকী পালন করছে ‘কথা ও সুর’। গিরিশ মঞ্চে ২৪ জুলাই, সন্ধে ৬-০৫-এ। থাকছে এই গানগুলি রচনার কাহিনি সংবলিত আলেখ্যগীতি ‘গুরু-শিষ্য সংবাদ’। সঙ্গে রবীন্দ্রগানের দর্শন নিয়ে দেবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথকতা, আর শৈলজারঞ্জনের কলকাতা অধ্যায়ের ছাত্র সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়ের কণ্ঠে প্রায় অপরিচিত কিছু রবীন্দ্রগান।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.