পুজোয় শাড়ি কিনতে আসুন পেট্রোল পাম্পে
গাড়িতে তেল ভরতে গিয়ে বাঙালি কিনছে শাড়ি! ডিজেল নিতে গিয়ে হাতে উঠে আসছে ঘর সাজানোর জন্য বাঁকুড়ার ঘোড়া বা কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুল!
এমন ব্যবস্থাই করছে রাজ্য সরকার।
কয়েকটি পেট্রোল পাম্পেই এ বার দেখা যাবে বাংলার তাঁতের শাড়ি আর হস্তশিল্পের দোকান!
পুজোর আগেই শহর কলকাতা ও শহরতলির কিছু পেট্রোল পাম্পে বাংলার তাঁত ও হস্তশিল্পের এমন বিপণি খুলছে রাজ্য সরকারের ক্ষুদ্র-কুটির শিল্প ও বস্ত্র দফতর। কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিট, ক্যানিং স্ট্রিট এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঠাকুরপুকুরের তিনটি পেট্রোল পাম্পে বিপণি চালু করার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন তেল সংস্থা ও পাম্প-মালিকদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চুক্তি পাকা হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া নাগেরবাজার, ক্যানিং এবং বজবজের আরও তিনটি পেট্রোল পাম্পে এমন বিপণি চালু করার প্রক্রিয়া চলছে। রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্প ও বস্ত্রমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার কথায়, “এটি কেন্দ্র-রাজ্য সরকার ও পেট্রোল পাম্পের মালিকদের যৌথ উদ্যোগ বলা যেতে পারে।”
অলঙ্করণ: সুমন চৌধুরী
পেট্রোল পাম্পে বিপণি খোলার সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মানসবাবু বলেন, “বিদেশে পাম্পে এমন দোকান থাকে, রেস্তোরাঁ থাকে। মানুষ গাড়িতে জ্বালানি ভরতে গিয়ে কেনাকেটা করেন।” এই সমস্ত বিপণিতে নদিয়ার শান্তিপুর, ফুলিয়া, হুগলির বেগমপুরের তাঁত বস্ত্র থেকে শুরু করে বিষ্ণুপুরের বালুচরী শাড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের (মানসবাবুর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র) মাদুরের সম্ভার যেমন বিক্রির জন্য রাখা হবে, তেমনই থাকবে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের হস্তশিল্পও। শুধু কলকাতাই নয়, রাজ্যের প্রতিটি জেলা ও দেশের বড় বড় শহরে এই ধরনের বিপণি খোলার জন্য রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে বলে জানাচ্ছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের রাজ্যের তাঁত শিল্প বাংলার গৌরব। কিন্তু গত ৩৪ বছরের বাম শাসনে এই তাঁত ও হস্তশিল্পের যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি। বিপণনের পদ্ধতিও ঠিক ছিল না। তাই বাংলার গৌরব তাঁত ও হস্তশিল্পকে এক ছাদের তলায় এনে তা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছি আমরা।” এ জন্য রাজ্য সরকারের রেশম, খাদি, তাঁত, বস্ত্র ও হস্তশিল্পের আধিকারিকদের নিয়ে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অনুপ চন্দের নেতৃত্বে কমিটি গঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এই নয়া উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বেনক্রাফ্ট।’
ঝাঁ চকচকে মলে গিয়ে কেনাকাটা করতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা শহরবাসী পেট্রোল পাম্পের এক কোণে বিপণি থেকে জিনিস কিনবেন তো? মানসবাবুর মতে, “কিনবেন। কারণ, মলের আকর্ষণের পাশে বাংলার তাঁতের ঐতিহ্য ও গৌরবময় হস্তশিল্পের আকর্ষণ কোনও অংশেই কম নয়। বিক্রি হবেই!” রাজ্যে ৬ লক্ষ ৬৫ হাজার বস্ত্রশিল্পী ও প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ হস্তশিল্পী আছেন। এই শিল্পী-কর্মীদের আর্থিক উন্নয়ন এবং রাজ্যের তাঁত-হস্তশিল্পের প্রসারের লক্ষ্যেই কলকাতা-সহ জেলা শহর ও দেশের বড় বড় শহরে এই ধরনের বিপণি খোলা হচ্ছে। রাজ্যের বস্ত্র ও হস্তশিল্প দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, দুর্গাপুজোর সময়ে বাংলার অধিকাংশ মানুষ কেনাকাটা করেন। সেই সময়ে বিপণিগুলি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে তাঁদের আশা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.