বাঁকুড়া পুরসভার পুরপ্রধান নির্বাচন আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার বাঁকুড়ার জেলাশাসককে ‘ফ্যাক্স’ পাঠিয়ে মহাকরণ থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। আগেই সোমবার পুরপ্রধান নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছিলেন অনাস্থা আনা কাউন্সিলরেরা।
জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারি এ দিন বিকেলে বলেন, “বাঁকুড়া পুরসভার পুরপ্রধান নির্বাচনের বৈঠক আপাতত স্থগিত করার জন্য মহাকরণ থেকে নির্দেশ এসেছে। অনাস্থা ডাকার প্রক্রিয়ায় ও আস্থা ভোটে কিছু বেনিয়ম হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখেই নতুন পুরপ্রধান নির্বাচনের বৈঠক ডাকা হবে বলে জানানো হয়েছে।”
আস্থা ভোট সঠিক পদ্ধতিতে হয়নি বলে অভিযোগ করে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বাঁকুড়া পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। প্রসঙ্গত, পুরপ্রধান তৃণমূলের শম্পা দরিপার বিরুদ্ধে ২৩ জুন অনাস্থা আনেন উপপুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার-সহ তৃণমূলের ৬ কাউন্সিলর ও কংগ্রেসের ৪ কাউন্সিলর। গত ৯ জুলাই আস্থা ভোটে পুরপ্রধানের বিপক্ষে তাঁরা ভোট দেন। ১০-৮ ভোটে শম্পাদেবী হেরে যান। শম্পাদেবীকে সে দিন সমর্থন জানিয়েছিলেন নির্দলের বিশ্বজিৎবাবু। এ দিন তিনি বলেন, “অনাস্থা প্রস্তাবের ১৫ দিনের মধ্যে আস্থা ভোট ডাকা হয়নি। এ ছাড়া নানা রংয়ের পেনের কালি ভোটের কাজে ব্যবহার করেছিলেন কাউন্সিলরেরা। এতে ভোটের গোপনীয়তা নষ্ট হয়েছে। তাই আমি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি।” শম্পাদেবীর দাবি, “রবিবার ছুটির দিন ধরেই সেই দিন গুলি বাদ দিয়ে আমি ১৫ দিন ধরেছিলাম। রবিবারগুলি ১৫ দিনের মধ্যে হিসেব করা উচিত ছিল কি না তা আমি জানি না।”
উপপুরপ্রধান অলকাদেবী বলেন, “পুরপ্রধান নির্বাচন আপাতত স্থগিত রাখার সরকারি নির্দেশ পেয়েছি। এই সিদ্ধান্ত আমরা মানব।” তবে শম্পাদেবীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা এক কাউন্সিলরের ক্ষোভ, “শম্পাদেবী তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার ঘনিষ্ঠ। তাই আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পরে এখন তিনি পুরপ্রধান নির্বাচন ঠেকানোর জন্য প্রভাব খাটাচ্ছেন। এতে পুরবাসী তাঁর উপর আরও বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছেন।” যদিও শম্পাদেবী এই অভিযোগ মানতে চাননি।
পুরপ্রধান নির্বাচনের ভোটে গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য স্ট্যাম্প অথবা নির্দিষ্ট একটি পেন ব্যবহার করার জন্য এ দিনই বাঁকুড়া সদর মহকুমাশাসকের কাছে দাবি জানিয়েছেন শম্পাদেবীরা। শম্পাদেবীর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর রূপা দে, তনুশ্রী ঘোষ ও নির্দল কাউন্সিলর সঞ্চিতা লাহা। মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “তাঁদের দাবি জেলাশাসককে জানিয়েছি।” |