নির্যাতনের অভিযোগ মহিলা কমিশনে
দুই গোষ্ঠীর বিবাদে শিকেয় পঠন-পাঠন
কদিকে দুই ‘দিদিমণি’। ইংরেজির অজন্তা মুখোপাধ্যায় ও শিক্ষার পিয়ালী ঘোষ। দুজনেই স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ এনে রাজ্য মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন। অন্যদিকে স্কুলের বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীরা। ইদানীং মাঝারি ও উঁচু ক্লাসের পড়ুয়া ও অভিভাবকেরাও দুটি গোষ্ঠীতে ভাগ হয়েছেন। এখন স্কুল শুরুর পর থেকেই এক পক্ষ অন্য তরফের প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়ে ‘সন্দেহ’ করছেন। অনেকেই জানাচ্ছেন, ‘এই বুঝি বিরুদ্ধ গোষ্ঠী কোনভাবে ফাঁদে ফেলবে’, এমন আশঙ্কায় তাঁরা স্কুলে পা-দেওয়ার পর থেকে সতর্ক থাকেন। ‘স্যর-দিদিমণি’দের গণ্ডগোলে পক্ষ নেওয়া পড়ুয়া-অভিভাবকদের অনেকে ‘কোথায়, কী হচ্ছে তা নিয়ে গুজগুজ, ফিসফিসে ব্যস্ত’ হয়ে পড়ছে। পরিণতিতে শিলিগুড়ি শহরের উপকণ্ঠের সূর্য সেন কলোনির বাল্মীকি বিদ্যাপীঠের ১৯০০ ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনা প্রায় লাটে ওঠার অভিযোগ উঠেছে।
কয়েক দশকের পুরানো ওই স্কুলের এ হেন ‘গোলমেলে পরিস্থিতি’র কথা জানেন নেতা-কর্তা-আমলা-মন্ত্রীদের অনেকেই। প্রায় সকলেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু, কী ভাবে স্কুলের পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক করা যাবে সেই ব্যাপারে স্পষ্ট করে কোনও রূপরেখা কেউ এখনও দিতে পারেননি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব দুই শিক্ষিকা ও স্কুল কর্তৃপক্ষের বিবাদ দ্রুত মেটানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ করেছেন। জলপাইগুড়ি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক নারায়ণ সরকার বলেন, “সমস্যার কথা শুনেছি। তদন্ত করে রিপোর্ট জেলা প্রশাসন, শিক্ষা দফতর ও মহিলা কমিশনকে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্য জ্যোৎস্না অগ্রবাল দ্রুত বিবাদের নিষ্পত্তি চান। তিনি বলেন, “কমিশনের তরফে দুই মহিলার অভিযোগ নথিভুক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, স্কুলে যাতে পড়াশোনার পরিবেশ দ্রুত ফেরানো যায়, সে জন্য সব পক্ষকে আলোচনায় বসে সমস্যা মেটানোর অনুরোধ করেছি। আশা করব, কর্তৃপক্ষ এমন ব্যবস্থা নেবেন, যাতে ভবিষ্যতে ওই দুই মহিলাকে আর এমন অভিযোগ তুলতে হবে না।”
স্কুল সূত্রের খবর, ‘সার্ভিস বুক’-এর প্রতিলিপি চাওয়া নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত ২০১১ সালের জুলাই মাসে।
স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক ভুপাল রায় জানান, অজন্তা দেবী ও পিয়ালী দেবীর সার্ভিস বুক তৈরি রয়েছে এবং চাইলেই ওঁরা প্রতিলিপি নিতে পারেন। তিনি বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে উভয়পক্ষকে নিয়ে অভিভাবকদের উপস্থিতিতে সাধারণ সভা ডেকে সমস্যা মেটানোর কথা ভাবা হয়েছে।” সম্প্রতি একাধিকবার স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের প্রশ্ন করলে প্রায় অনেকেই ক্ষোভের সঙ্গে বলেছে, “দুই দিদিমণি যা বলছেন তা সত্যি হলে ওঁদের উপরে অন্যায় হচ্ছে। আমরা ওঁদের সঙ্গে আছি।” পক্ষান্তরে, পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একাংশের বক্তব্য, “দুই দিদিমণির সম্পর্কেও অনেক অভিযোগ আছে। আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষের পাশে রয়েছি।” এখন স্কুলের স্বাভাবিক পরিবেশ কী ভাবে, কবে ফিরবে সেটাই দেখার বিষয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.