মাসপয়লা মাইনে চায় ‘কুটাব’
বেতন বন্ধ ছ’মাস, পরীক্ষার মুখে টানা কর্মবিরতির ডাক
বছরের জানুয়ারি থেকে তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। তাই কাল, বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের আংশিক সময়ের শিক্ষকদের সংগঠন ‘কুটাব’ (কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল)।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ, বিএসসি পার্ট ওয়ান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবারেই। পরীক্ষা আছে কল্যাণী ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়েও। আংশিক সময়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কর্মবিরতির জেরে পরীক্ষা পরিচালনার কাজে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ওই সব বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছ’হাজারেরও বেশি আংশিক সময়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন বলে মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছে কুটাব। বহু কলেজই পঠনপাঠন, পরীক্ষা, মূল্যায়নের জন্য আংশিক সময়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপরে অনেকটা নির্ভরশীল। কুটাব-এর সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ বলেন, “গত জানুয়ারি থেকে আমাদের বেতনের জন্য একটি টাকাও দেয়নি বিকাশ ভবন। অনেক কলেজে বিনা বেতনে, কোথাও বা দেড়-দু’হাজার টাকায় শিক্ষকতা করছি আমরা। কোথাও আবার ২২ মাস ধরে বেতন হচ্ছে না।”
বারবার রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ সংগঠনের। অবিলম্বে বকেয়া মেটানোর সঙ্গে সঙ্গে মাসপয়লা বেতন এবং বেতন বৃদ্ধির দাবিও জানিয়েছে কুটাব।
আংশিক সময়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এত দিনের বেতন বকেয়া পড়ে আছে কেন, তা নিয়ে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর এবং কলেজগুলির অধ্যক্ষদের মধ্যে। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত এই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন বাবদ অর্থ পাওয়ার জন্য ‘ক্লেম বিল’ জমা দিয়েছে কলেজগুলি। কিন্তু জানুয়ারি থেকে কোনও বিল জমা পড়েনি। ফলে বেতন বাবদ কোনও টাকা ছাড়া যায়নি। উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “ওই বিল জমা না-পড়লে দফতর থেকে বেতন বাবদ টাকাই দেওয়া যায় না। কলেজগুলির কাছে তা চাওয়া হয়েছে। এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে ওয়েবসাইটেও। ১০ অগস্টের মধ্যে কলেজগুলিকে ‘ক্লেম বিল’ পেশ করতে হবে।”
বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের পাল্টা দাবি, এই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন বাবদ প্রাপ্য অর্থ পেতে বরাবরই দেরি হয়। অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য জানান, একটি মাসের বেতন দিয়ে দেওয়ার পরে ‘ডিসবার্সমেন্ট সার্টিফিকেট’ জমা দেওয়ার কথা। তাঁর ব্যাখ্যা, ধরা যাক, জানুয়ারির বেতন বাবদ অর্থ পাওয়া গেল অগস্টে। ফলে ‘ডিসবার্সমেন্ট সার্টিফিকেট’ দিতেই দেরি হবে। সেই কারণেই ‘ক্লেম বিল’ পাঠাতে বিলম্ব হয়। মানিকবাবু বলেন, “বিলম্বের এই চক্র ভেঙে যাতে বেরোনো যায় এবং আংশিক সময়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতনের বিষয়টি নিয়মিত করা যায়, প্রশাসনের কাছে আমরা সেই আবেদনই করছি।”
বকেয়া বেতন নিয়ে চাপান-উতোরের মধ্যেই ‘কুটাব’-এর প্রস্তাবিত কর্মবিরতির জেরে সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা পরিচালনা নিয়ে সংশয়ে পড়ে গিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক ওঙ্কারসাধন অধিকারী এ দিন বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সমস্যা বুঝি। তবে ওঁদের কাছে আবেদন করব, পড়ুয়াদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই ওঁরা যেন নির্বিঘ্নে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.