| কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্কে চিড় ধরাতে চায় বিজেপি |
| নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি প্রার্থী ঘোষণা করেন, তা হলে সেই প্রার্থীকে সমর্থন করে দিতে পারে বিজেপি।
বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সংখ্যা না থাকলেও পূর্ণ অ্যাজিটক সাংমাকে সামনে রেখে বিজেপি এখনও লড়াইয়ে আছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে এখনও সাংমাকে সমর্থন করেন, সেই চেষ্টাও করে যাচ্ছেন দলীয় নেতৃত্ব। সাংমা আশাবাদী, মহাকরণে মমতার সঙ্গে তাঁর যে আলোচনা হয়েছে, তাতে তৃণমূলের ভোট তাঁর ঝুলিতেই যাবে।
এ বার উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও বিরোধী ঐক্য বজায় রাখতে আগ্রহী দলের একটি বড় অংশ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ললিতা ও নবীন পট্টনায়কের মতো অ-কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীদের ঘোষিত প্রার্থী সাংমাকে সমর্থন করতেও যেমন বিজেপি এগিয়ে এসেছে, তেমনই ইউপিএতে থেকেও মমতা যদি উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোনও প্রার্থী দেন, সেই ব্যক্তিকে সমর্থনের ব্যাপারে ভাবনা-চিন্তা করতেও দলের আপত্তি নেই।
লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ এবং অরুণ জেটলিরা মনে করছেন, মমতা যদি কাউকে প্রার্থী ঘোষণা করেন, তা হলে তাঁকে সমর্থন করে দেওয়াই উচিত হবে। বিজেপির এক নেতার কথায়, “এখনও পর্যন্ত সব পথই খোলা রয়েছে। এই সপ্তাহের শেষে কোর গ্রুপের বৈঠকে আলোচনা হবে। মমতা কোনও প্রার্থী দিলে তাঁকে সমর্থন করে কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্কে যদি আরও ভাঙন ধরানো যায়, বিজেপির কাছে সেটি রাজনৈতিক লাভ। তবে মমতা আগে নাম ঘোষণা করুন।” পশ্চিমবঙ্গে রাহুল সিংহরা মমতাকে আক্রমণের পথ নিলেও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা তাঁকে চটানোর পক্ষপাতী নন। আজও দলের মুখপাত্র শাহনওয়াজ হোসেন বলেন, “সিপিএম বরাবর কংগ্রেসের বি-টিম হিসাবে থেকেছে। ইউপিএ-র রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে এখন সমর্থনও করছে তারা। যখন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম হয়েছিল, সেই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিদম্বরমের আইন-শৃঙ্খলার কথা মনে আসেনি। এখন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সিপিএমের সমর্থন পাওয়ার পর তৃণমূল শাসিত রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন!” যদিও বিজেপির একটি অংশ মনে করে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যেহেতু অ-কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীদের প্রস্তাবিত প্রার্থীকে সমর্থন করা হয়েছে, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী বিজেপির থেকেই হওয়া উচিত। কিন্তু বিজেপি যদি প্রার্থী দেয়, তা হলে তিনি কে হবেন, তা নিয়ে বিজেপি ও শরিক দলের মধ্যেই এখনও ঐকমত্য হয়নি।
কংগ্রেস এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে হামিদ আনসারিই যদি তাদের প্রার্থী হন, তা হলে বিজেপির একাংশ নাজমা হেপতুল্লার মতো কোনও সংখ্যালঘু নেতাকেও দাঁড় করানোর প্রস্তাব দিচ্ছে। কিন্তু নাজমার নামে দলের মধ্যেই বিরোধ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির একমাত্র সাংসদ যশোবন্ত সিংহ-ও অনেক দিন ধরেই রাষ্ট্রপতি বা উপরাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হওয়ার জন্য তৎপর। এই সময়ে আবার বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন এনডিএর আহ্বায়ক এবং জেডি (ইউ) নেতা শরদ যাদব। তিনি সম্মিলিত বিরোধী জোট থেকে কাউকে প্রার্থী করার দাবি জানিয়েছেন।
বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, হামিদ আনসারি যদি কংগ্রেসের প্রার্থী হন, তা হলে তাঁকেই সমর্থন করতে পারেন নীতীশ কুমার। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মতো উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও বিজেপি বা বিরোধীদের প্রার্থীকে নীতীশ সমর্থন করবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এই অবস্থায় শরদ যাদব যা বলছেন, তার পিছনে তাঁর উচ্চাশাও থাকতে পারে। কারণ, তিনি নিজেই উপরাষ্ট্রপতি হতে চান। অকালি দলের নেতা এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদলকেও উপরাষ্ট্রপতি করতে সক্রিয় তাঁর ছেলে সুখবীর। কিন্তু বিজেপি সেই প্রস্তাবে খুব উৎসাহী নয়। |
