সমস্যার উৎসটা সকলেরই জানা। অথচ সেটাকে নির্মূল করে রোগীদের ভোগান্তি কমাতে উদ্যোগী নয় কেউই। ফলে বেশির ভাগ দিনই কিছুক্ষণ ‘নিষ্প্রদীপ’ থাকাটা ‘ভবিতব্য’ হয়ে দাঁড়িয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। বুধবার সকালেও আউটডোরের ব্যস্ত সময়ে আধ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। ওই সময়ে আউটডোরে টিকিট হয়নি। ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন রোগীরা। এক্স-রে, সিটি স্ক্যান-সহ বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ ছিল। ইমার্জেন্সিতেও টর্চ জ্বেলে কাজ করতে হয়েছে।
নতুন একটি ট্রান্সফর্মার না বসানো পর্যন্ত এই সমস্যা মিটবে না, সে কথা কর্তৃপক্ষ জানেন। তবু কেন বসছে না? হাসপাতালের সুপার অসীম ঘোষ বলেন, “নতুন ট্রান্সফর্মার বসানোর খরচ ১২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দের জন্য সবেমাত্র স্বাস্থ্য ভবন থেকে চিঠি এসেছে। ট্রান্সফর্মার বসাতে ছ’সাত দিন সময় লাগবে।” স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, প্রক্রিয়া মেনে কাজ করতে যে সময় লাগার কথা, তা-ই লেগেছে। মেডিক্যাল থেকে এই সমস্যার কথা দেরিতে জানানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। |
চলতি সপ্তাহের সোমবার সকালেও কিছুক্ষণের জন্য নিষ্প্রদীপ ছিল মেডিক্যাল। হাসপাতালের হিসেব অনুযায়ী, জুন মাসে মোট ১৬ দিন ও মে মাসে ১৮ দিন লোডশেডিং হয়েছে মেডিক্যালে। কেন ঘন ঘন এই বিপর্যয়? হাসপাতাল সূত্রের খবর, অত্যধিক চাপ বহন করতে না পারায় মাঝেমধ্যেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে।
দেড় বছর আগে ঘটা করে এই হাসপাতালের আউটডোর ব্লক চালু হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ স্বীকার করছেন, সেই সময়ে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে বেশ কিছু ত্রুটি থেকে গিয়েছে, যা এখন মেরামত করা কঠিন। হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ মনে করছেন, আউটডোর বিল্ডিংটি চালু করে দিতে তখন এতটাই তাড়াহুড়ো হয়েছিল যে পরিকল্পনাটাই ভাল করে খতিয়ে দেখা হয়নি। দেখা হয়নি, চার তলা ঝাঁ-চকচকে বাড়ি তৈরি হলেও সেখানে সমস্ত বিভাগের আউটডোর চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ বহন করার ব্যবস্থাটাই নেই। ফল যা হওয়ার ঠিক তা-ই হয়েছে। হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগ পুরোদমে চলতে শুরু করলে আউটডোর ও তার আশপাশের বিভাগ অন্ধকার হয়ে যায়। কাজেই, আরও সপ্তাহখানেক এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি নেই রোগীদের। |