শহরে মোহনবাগান মাঠ সংলগ্ন পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠলো বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া দফতরের বিরুদ্ধে। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, আধিকারিক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “জলাশয় ভরাটের বিরোধী আমি। ব্যবস্থা নিচ্ছি।” সহ-উপাচার্য ষোড়শীমোহন দাঁ বলেন, “শুনেছি, আমাদের ক্রীড়া দফতর পুকুর ভরাটের আগে মৎস্য বিভাগের অনুমতি নেয়নি। আগেও এক বার পুকুরটি ভরাটের চেষ্টা করেছিল ওই দফতর। সেটা আমরা আটকেছিলাম। এ বারও আটকাব।”
মোহনবাগান মাঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সম্পত্তি। এই মাঠ আর রবীন্দ্রভবনের মাঝে রয়েছে প্রায় আট কাঠা আয়তনের পুকুর। গত কয়েক দিন ধরে বালি ফেলে সেটি ভরাটের কাজ চলছে। পুকুরের চারপাশের যে লাগোয়া অংশে জল থাকে, সেই জায়গাও আগে ভরাট করা হয়েছে। কিন্তু পুকুর ভরাট শুরু হতেই স্থানীয় বাসিন্দা এবং ওই মাঠে খেলাধুলো করতে আসা যুবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন। |
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া দফতরের আধিকারিক সুরজিৎ নন্দীর দাবি, তাঁরা মৎস্য দফতরের মৌখিক অনুমতি নিয়ে পুকুর ভরাট করছেন। মাঠের পাশে আর একটি মাঠ করতেই এই উদ্যোগ। কিন্তু মৎস্য দফতরের কোন আধিকারিকের থেকে তাঁরা মৌখিক অনুমতি নিয়েছেন, তা তিনি বলতে পারেননি। জেলা মৎস্য দফতরের সহ-অধিকর্তা অশোক কর্মকার বলেন, “আমাদের কাছে লিখিত বা মৌখিক কোনও রকম অনুমতিই নেওয়া হয়নি। এই ধরনের অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নও ওঠে না। শহরের মাঝে পাঁচ কাঠা বা তার কম পরিমাণ জায়গায় বছরে ছ’মাস জল থাকলেই তাকে জলাশয় বা পুকুর হিসেবে গণ্য করা হয়। পুকুর ভরাট করা সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ। আমরা অবিলম্বে তদন্ত শুরু করছি।”
উপাচার্য বা সহ-উপাচার্যকে কিছু না জানিয়েই পুকুর ভরাটের কাজ শুরু করা হল কেন? সুরজিৎবাবুর জবাব, “যখন পুকুর ভরাটের কাজ শুরু হয়, তখন উপাচার্য না থাকায় কর্মসমিতির বৈঠক হচ্ছিল না। তাই আমরা বাধ্য হয়েই কাউকে কিছু না জানিয়েই কাজ শুরু করি।” বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারি সংগঠনের দুই নেতা সীতারাম মুখোপাধ্যায় ও আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এ ভাবে কোনও জলাশয় ভরাট করা যায় না। এর বিরোধিতা করছি।” ছাত্র সংসদও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
উপাচার্য বলেন, “পুকুর ভরাট বন্ধ করিয়ে দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তদন্ত করা হবে। প্রয়োজন হলে, যত বালি দিয়ে ওই জলাশয় ভরাট করা হয়েছে, তা তুলে ফেলতে নির্দেশ দেব।” |