অসমে বিশেষ করে বরাক উপত্যকায় বসবাসকারী বাংলাভাষীদের সন্দেহজনক ভোটার (ডি-ভোটার) তালিকায় নাম ঢুকিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে নানা মহলেই অভিযোগ। বৈধ ভারতীয় নাগরিকদের এ ভাবে হয়রানি করার চাপ নিতে না পেরে গত ৩ জুন কাছাড় জেলার কাটিগড়ার বাসিন্দা অর্জুন নমশূদ্র আত্মঘাতী হন। এ ধরনের ঘটনাকে বিজেপির তরফে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বলে আগেই অভিযোগ করা হয়েছে। এ বার ডি ভোটারদের হয়রানি ও নিগ্রহ সম্পর্কে
প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে বরাক উপত্যকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গেল বিজেপির আইন বিশেষজ্ঞ একটি প্রতিনিধি দল। চার দিনের সফর শেষ করে দিল্লি যাওয়ার আগে এই দলটির নেতা, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ জানিয়ে গেলেন, ডি-ভোটারদের যে ভাবে নিগ্রহ ও অবমাননার শিকার হতে হচ্ছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা শীঘ্রই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাবেন। তাঁরা রিপোর্ট পেশ করবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি নিতিন গড়কড়ীর কাছেও।
ডি ভোটারদের হয়রানি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহে নিতিনের নির্দেশেই অসম সফরে এসেছিল বিজেপির আইন বিশেষজ্ঞ এই প্রতিনিধি দলটি। নেতৃত্বে ছিলেন দলের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ। অন্য সদস্যেরা হলেন সুপ্রিম কোর্টের আর এক আইনজীবী শুভদীপ রায়, দিল্লি হাইকোর্টের আইনজীবী বলেন্দ্র শেখর ও সাংসদ এবং দলের বিশেষ আইন সেলের চেয়ারম্যান ভূপিন্দর যাদব। চার দিনের সফরে প্রতিনিধি দলটি প্রথমে বরাক উপত্যকার তিন জেলা ও শেষে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকাতেও ডি -ভোটার তকমা পাওয়া প্রায় দু’শো ভুক্তভোগী হিন্দু নাগরিকের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তাঁদের দুর্ভোগের কথা জেনে নেন।
পিঙ্কি জানান, কাছাড় জেলার কাটিগড়ার বাসিন্দা অর্জুন নমঃশূদ্র এবং করিমগঞ্জের শব্দকর পরিবারের দুর্ভোগের কথা তিনি রিপোর্টে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করবেন। অর্জুনকে ডি ভোটার বলে চিহ্নিত করায় তিনি ৩ জুন গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। অন্য এক মামলায় কাগজপত্র দেখানোর সুযোগ না-দিয়েই একতরফা রায়ে এক শব্দকর পরিবারের দুই ভাইকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। দুই জা জ্যোৎস্না ও প্রতিমা শব্দকর এখন স্বামীদের ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু কেউই বলতে পারেন না, তাঁরা এখন কোথায় রয়েছেন। |