‘জাল’ পদত্যাগ পত্রের বিরুদ্ধে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের শহর কলকাতাতেই এ বারে আন্দোলনের কৌশল নিল বিজেপি। আগামী সপ্তাহে ইউপিএ-র রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসাবে প্রণববাবু কলকাতায় আসছেন। তার আগে কালই বরানগরের ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট (আইএসআই) দফতর ঘেরাও করার জন্য রাজ্য শাখাকে নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
দিল্লিতে আজ সুষমা স্বরাজের বাসভবনে অনন্ত কুমার, সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া, সত্যপাল জৈন এবং সুব্র্যহ্মণম স্বামী আইএসআই থেকে প্রণববাবুর তথাকথিত পদত্যাগ পত্রের বিষয়ে পরবর্তী রণকৌশল নিয়ে বৈঠক করেন। ছিলেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে
|
রাহুল সিংহ |
বিজেপি সমর্থিত প্রার্থী পূর্ণ অ্যাজিটক সাংমা। ডেকে নেওয়া হয় পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সভাপতি রাহুল সিংহকেও। সুষমা স্বরাজরা রাহুলকে বলেন, ইউপিএ-র প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের নেতা এবং আইএসআই-এর দফতরও কলকাতায়, তাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে সাম্প্রতিক মোড়ে সে
রাজ্যের প্রাসঙ্গিকতা বেড়ে গিয়েছে। সুতরাং এই ‘জাল’ পদত্যাগ পত্র নিয়ে কলকাতাতেই
বিক্ষোভ কর্মসূচি করতে হবে। বিজেপি নেতারা বলেন, ‘জাল’ চিঠির ব্যাপারে প্রণববাবুর সঙ্গে আইএসআই-এর প্রেসিডেন্ট এম জি কে মেননের যোগসাজশও প্রকট হয়েছে। তাই উভয়ের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ জানাতে হবে।
দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশের পরেই আজ দিল্লি থেকে কলকাতার উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন রাহুল। তিনি জানান, “সুষমা স্বরাজকে জানিয়েছি, শুধু আইএসআই-এর চেয়ারম্যানই নয়, এশিয়াটিক সোসাইটিতেও পদ দখল করে বসেছিলেন প্রণববাবু। এই বিতর্কের মধ্যে তড়িঘড়ি সেই পদ থেকেও তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। কাল প্রায় হাজার খানেক বিজেপি কর্মী আইএসআই-এর সামনে বিক্ষোভ দেখাবেন। পোড়ানো হবে প্রণববাবুর জাল পদত্যাগ পত্রের প্রতিলিপিও। তথ্য জানার অধিকার আইনেও আসল সত্য জানতে চাওয়া হবে।”
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে প্রণববাবুর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণের খুব একটা পক্ষপাতী ছিলেন না বিজেপি নেতৃত্বের একটি অংশ। বরং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে লোকসভা ভোটের মহড়াই সেরে ফেলতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কংগ্রেসকে বিড়ম্বনায় ফেলতে এমন একটি অস্ত্র হাতছাড়া করতে চাইছেন না বিজেপির কিছু নেতা। |
বিজেপি মনে করছে, এনডিএ-র যে শরিকরা ইতিমধ্যেই প্রণববাবুকে সমর্থন করে বসে রয়েছে, আন্দোলনে নামলে তাদের উপরেও চাপ বাড়ানো যাবে। আবার কলকাতায় প্রণববাবুর বিরুদ্ধে আন্দোলন হলে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও অখুশি হওয়ার কারণ নেই। মহাকরণে মমতার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সাংমা আশাবাদী, তৃণমূলের ভোট তাঁর ঝুলিতেই যাবে।
এই আন্দোলন মমতার প্রণব-বিরোধিতাকে আরও অক্সিজেন জোগাতে পারে। সেই সূত্র ধরেই আজ রাজ্য সভাপতি রাহুলকে ফোন করে সুষমার বাড়িতে ডেকে সবিস্তার রণনীতি তৈরি করেন বিজেপি নেতারা। নিতিন গডকড়ীর ছেলের বিয়েতে দিল্লি এসেছিলেন রাহুল। গডকড়ীর নির্দেশে তাঁকে উত্তরাখণ্ডের সিতারগঞ্জ আসনের উপনির্বাচনে প্রচারে পাঠানো হয়। এই আসনটিতে প্রায় ২৮ হাজার বাঙালি ভোটার রয়েছেন। |