‘জবরদখলে’ রাশ টানতে নাগেরবাজার উড়ালপুলের নীচে তৈরি করা হবে বাগান। এ নিয়ে উড়ালপুলের তদারকি সংস্থা ‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স’ (এইচআরবিসি)-এর কর্তারা সম্প্রতি বৈঠক করেন নির্মাতা সংস্থার সঙ্গে। দক্ষিণ দমদম পুরসভা এর নকশাও মঞ্জুর করেছে। পাশাপাশি, উড়ালপুলের নীচে গাড়ি রাখার স্থায়ী জায়গার পরিকল্পনাও দক্ষিণ দমদম পুরসভার অনুমোদন পেয়েছে।
উড়ালপুলের উদ্বোধনের পরে কেটে গিয়েছে ১৪ সপ্তাহ। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা গেল, আশপাশের কাজ এখনও শেষ হয়নি। উড়ালপুলের নীচে বসেছে সব্জির বাজার। যত্রতত্র আবর্জনা, বালি ও পাথরকুচির স্তূপ। সেতুর নির্মাতা সংস্থার এক ইঞ্জিনিয়ার জানালেন, ফুটপাথ কেটে রাস্তা চওড়া করার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, কিছু ব্যবসায়ীর জন্য মার খাচ্ছে এই কাজ। রূপায়িত হচ্ছে না সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনাও। ফলে সমস্যায় পড়ছেন পথচারীরা। |
নানা কারণে এই উড়ালপুলের কাজ শেষ হতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি দিন লেগেছিল। ১১৬৬ মিটার দীর্ঘ ও ৭ মিটার চওড়া এই উড়ালপুল তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। উড়ালপুল উদ্বোধনের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “ঘড়ি ধরে কাজ করতে হবে। পাঁচ বছরের কাজ করতে হবে এক বছরে।” কিন্তু উড়ালপুলের প্রস্তাবিত শাখাটির নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। তার উপরে চারপাশে পড়ে প্রচুর নির্মাণ-সামগ্রী। হকারেরা বসেছেন যত্রতত্র। ফলে অপরিসর রাস্তায় গাড়িগুলিকে চলতে হচ্ছে ধীর গতিতে।
কিন্তু কেন এই হাল? এইচআরবিসি-র ভাইস চেয়ারম্যান সাধনরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রস্তাবিত শাখার কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। ৪২৫ মিটার দীর্ঘ এবং ৫ মিটার চওড়া এই একমুখী শাখা তৈরিতে খুব বেশি হলে এক বছর সময় লাগবে। এটি হয়ে গেলে যান চলাচলে সুবিধা হবে।” তিনি আরও জানান, বাগান তৈরির কাজও শীঘ্রই শুরু হবে।
উড়ালপুলের নির্মাতা সংস্থার কর্ণধার কাজল সেনগুপ্ত বলেন, “‘দখলদারির জন্য নাগেরবাজারের ওই অঞ্চলের অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ। উড়ালপুলের নীচেও একই অবস্থা।” পরিকল্পনা সত্ত্বেও কেন বাগান তৈরিতে দেরি হচ্ছে? কাজলবাবুর জবাব, “উড়ালপুলের নীচে দু’বেলা বাজার বসে। তাই বাগান তৈরিতে কিছু সমস্যা আছে।” তিনি আরও জানান, বাগান তৈরি হলে কেবল সৌন্দর্যই বাড়বে না, উড়ালপুলের নীচে যেখান দিয়ে খুশি রাস্তা পার হওয়া যাবে না। এতে যান চলাচলেও সুবিধা হবে।
উড়ালপুলের নীচে দখলদার তোলার জন্য একপ্রস্ত অভিযান চালিয়েও পিছিয়ে আসতে হয়েছে বলে স্বীকার করে নিলেন পুরসভার চেয়ারপার্সন অঞ্জনা রক্ষিত। তিনি বলেন, “এ অবস্থা চলতে পারে না। দোকানিদের সঙ্গে ফের কথা বলব। একেবারে তুলে না দিয়ে ফুটপাথের ধারে ছোট সারিবদ্ধ স্টল করে দেওয়া হবে। এখন সরোজিনী নাইডু কলেজ থেকে ভগবতী পার্ক পর্যন্ত রাস্তা তৈরির কাজ হচ্ছে। এর পর সবুজায়নের কাজ শুরু হবে।” |