লঙ্কা আর উচ্ছের দাম মঙ্গলবারেই বেশ কিছুটা কমে গিয়েছিল। বুধবার ঝিঙে, পটল, ঢেঁড়স-সহ অন্যান্য আনাজের দামও কমেছে। আগের দিনের তুলনায় আরও কিছুটা কমেছে লঙ্কার দাম। সব মিলিয়ে ‘পড়তে শুরু করেছে’ সব্জির বাজার। মঙ্গলবার কোলে মার্কেটে লঙ্কার পাইকারি দাম ছিল প্রতি কিলোগ্রাম ৫৬ টাকা। বুধবার তা নেমে দাঁড়ায় ৪৪ টাকায়। একই ভাবে ঢেঁড়সের দাম প্রতি কিলোগ্রামে ২০ টাকা, পটলের ১০ টাকা এবং ঝিঙের দাম ২০ টাকা কমেছে ওই বাজারে। একমাত্র বড় বেগুনের দাম এ দিন একই ছিল কোলে মার্কেটে।
কোলে মার্কেটে দাম বিভিন্ন আনাজের দাম কমে যাওয়ায় কলকাতার অধিকাংশ খুচরো বাজারেও তার প্রভাব পড়েছে। মানিকতলা ও ল্যান্সডাউন বাজারে এ দিন ঢেঁড়স, পটল ও ঝিঙে ২৫ টাকা কিলোগ্রাম দরে বিক্রি হয়েছে। বড় বেগুনের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি। উচ্ছের দাম ছিল প্রতি কিলোগ্রাম ৪০ টাকা। লঙ্কার দাম কমে হয়েছে ৮০ টাকা কেজি।
কী ভাবে দাম কমলো সব্জির? মানিকতলা বাজারের সব্জি ব্যবসায়ী অমিত মাইতি বলেন, “আমদানি বেড়েছে। তাই দাম কমেছে।” এত দিন আমদানি হয়নি কেন? ব্যবসায়ীরা জানান, এক শ্রেণির ব্যবসায়ী মালপত্র ধরে রেখে মুনাফা লুটতেন। সরকারের কড়া মনোভাবে তাঁরা ভয় পেয়েছেন। তাই সব্জির জোগান বেড়েছে।
সব্জির দামে আগুন লাগায় এনফোর্সমেন্ট বিভাগ তৎপর তো হয়েছিলই। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও বাজার পরিদর্শনে বেরিয়েছিলেন। এ দিনও কলকাতার বিভিন্ন বাজারে নজরদারি চালান এনফোর্সমেন্ট শাখার অফিসারেরা। এই সরকারি নজরদারিতে কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন ক্রেতারা। ল্যান্সডাউন বাজারে সব্জি কিনতে আসা ঋতুপর্ণা রায় বলেন, “সরকার এ ভাবে নজরদারি চালালে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বাঁচবে। তবে কয়েক দিন পরেই এ-সব নজরদারি বন্ধ হয়ে যাবে না তো?”
আপাতত নজরদারি চালিয়ে যাওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে সরকার। সব্জির দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য গড়া টাস্ক ফোর্সের এক সদস্য এ দিন জানান, কয়েক দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ সীমান্তের চাতরা হাটে যাওয়া হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের নির্দেশে এ দিন ওই জেলার পাঁচ জন মহকুমাশাসক পাইকারি বাজারগুলিতে নজরদারি চালিয়েছেন। বিধাননগরের মতো কলকাতার কয়েকটি বাজারে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে সব্জি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষি বিপণন দফতর। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, আজ, বৃহস্পতিবার থেকে গড়িয়াহাট, এন্টালি, মানিকতলা ভিআইপি মার্কেট, বাঁশদ্রোণী, ল্যান্সডাউন, শিয়ালদহ, বেহালার পৌর পণ্য বীথিকা ও কলেজ স্ট্রিট মার্কেট এলাকায় রাখা হবে ওই ভ্যান। আগামী কয়েক দিন এই ব্যবস্থা চলবে বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে। |