শীঘ্রই ভারী বৃষ্টি দেশে, আশ্বাস পওয়ারের
কৃপণ বর্ষায় কমবে বৃদ্ধিও, চিন্তায় কেন্দ্র
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ অর্থ মন্ত্রকের ভার হাতে নেওয়ার পরই সংস্কারের আশায় একটু একটু চাঙ্গা হতে শুরু করেছে শেয়ার বাজার। তবু স্বস্তি নেই অর্থ মন্ত্রকে। চিন্তা বাড়াচ্ছে বৃষ্টির ঘাটতি। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস ছিল ৯৬ থেকে ১০০ ভাগ স্বাভাবিক বৃষ্টি হবে এ বার। যার সুফল পাবে দেশের অর্থনীতি। কিন্তু ২ জুলাই পর্যন্ত গড় হিসেব বলছে, এ পর্যন্ত ৩১% কম বৃষ্টি হয়েছে দেশে। এই ঘাটতি চললে শুধু যে কৃষি উৎপাদন মার খাবে তা নয়, সামগ্রিক ভাবে দেশের অর্থনীতিকেও তা চাপে ফেলবে। এমনিতেই আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে এসেছে দেশে। বৃষ্টির ঘাটতিতে খাদ্যশস্য উৎপাদন কমে গেলে, আর্থিক বৃদ্ধির হারকে তা আরও টেনে নামাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা।
অর্থনীতিবিদদের মতে, কৃষিক্ষেত্রে বৃদ্ধি কমলে সামগ্রিক বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের নিচে চলে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, বরুণদেবের কার্পণ্যে দাম বাড়বে খাদ্যপণ্যের। দেশের বিভিন্ন অংশে খরা দেখা দিলে, আর্থিক সাহায্য জোগাতে গিয়ে চাপ পড়বে রাজকোষে। সে ক্ষেত্রে রাজকোষ ঘাটতিতে রাশ টানাও মুশকিল হয়ে পড়বে। তা ছাড়া শেয়ার বাজার যখন সবে মুখ তুলতে শুরু করেছে, তারই মধ্যে বৃষ্টির ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হলে ফের ধস নামতে পারে। এবং সে কথা বুঝেই আজ মাঠে নেমেছেন কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ার। কার্যত আবহবিদদের মতো করেই তিনি পূর্বাভাস দিয়েছেন, আগামী সপ্তাহ থেকেই ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হবে। তবে চলতি এক মাসে দেশে বৃষ্টি কম হওয়ায় মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের একাংশে যে বীজ বোনার কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।
বৃষ্টি কম হলে জলাধারগুলিতে জল কমে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনও ব্যাহত হতে পারে। টান পড়বে সেচের জলেও। এই পরিস্থিতিতে জলাধারগুলিতে জলের পরিমাণ, সম্ভাব্য বৃষ্টির পরিমাণ নিয়ে আজ আবহবিদদের সঙ্গে বৈঠক করেন পওয়ার। পরে তিনি বলেন, “দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু পর্যাপ্ত বৃষ্টি না ঘটানোয় দেশের কিছু প্রান্তে বীজ বপনে দেরি হচ্ছে। তবে ৯ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে।” তবে একই সঙ্গে পওয়ার স্বীকার করেছেন, গত বছরের তুলনায় ১ কোটি ৯০ লক্ষ হেক্টর কম জমিতে বীজ বপন হয়েছে এ পর্যন্ত।
কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, “রাজ্যগুলিকে খারাপ পরিস্থিতির কথা ভেবে বিকল্প পরিকল্পনা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।” পওয়ার এ-ও জানান, যথেষ্ট চাল-গম মজুত রয়েছে। প্রয়োজন হলেই সরকার খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি করবে। কৃষি মন্ত্রকের বক্তব্য, সতর্কবার্তা জারির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ধান, ডাল, তেলবীজ ও তুলো চাষের জন্য কৃষকদের হাতে সময় আছে। ৩৯ লক্ষ ৯৬ হাজার হেক্টর জমিতে ধান বোনার কাজ শেষ হয়েছে। যা মোটের উপর স্বাভাবিক। তবে মধ্য ও পশ্চিম ভারতে (মূলত রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, কর্নাটকে) জোয়ার, বাজরা, ভুট্টা চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আখ, ডাল ও তেলবীজের চাষ নির্দিষ্ট গতিতেই এগোচ্ছে বলে কৃষি মন্ত্রকের দাবি।
অর্থ মন্ত্রক মনে করছে, জুলাই-অগস্টে বৃষ্টি স্বাভাবিক হচ্ছে কি না, তার উপরেই অনেক কিছু নির্ভর করছে। মন্ত্রকের এক কর্তার বক্তব্য, “২০০৯ সালেও স্বাভাবিক বর্ষার পূর্বাভাস ছিল। পরে বেশ কিছু অঞ্চলে খরা দেখা দেয়। পরের বছর প্রথমে ঘাটতি হলেও পরে বেশি বৃষ্টি হয়। কিন্তু চাষের ক্ষেত্রে প্রথমে যে ক্ষতি হয়, তা পূরণ হয়নি। ফলে সংশয় থাকছেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.