দাম কমলো শুধু লঙ্কা, উচ্ছের
ক ধাক্কায় দাম নেমে গেল কাঁচালঙ্কার!
কোলে মার্কেটের পাইকারি বাজারে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাঁচালঙ্কার দর কেজিতে কমে গেল ৩৬ টাকা। সোমবার ওখানেই যে কাঁচালঙ্কা কেজিপিছু ৯২ টাকায় বিক্রি হয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে তা নেমে আসে ৫৬ টাকায়। পাইকারি দাম কমার প্রভাব পড়েছে খোলাবাজারেও। ল্যান্সডাউন ও মানিকতলায় সোমবার দু’শো টাকা কেজি দরে লঙ্কা বিকোলেও এ দিন তা নেমে এসেছে ১০০ টাকায়।
শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর বাজার সফর, সোমবার আনাজ-মূল্য নিয়ন্ত্রণে টাস্ক ফোর্স গঠন ও হুঁশিয়ারিতে তবে কি কাজ হল?
এ দিন অবশ্য কোলে মার্কেট ও কলকাতার দু’টি খোলা বাজার ঘুরে দেখা গেল, দাম কমেছে মাত্র দু’টি সব্জির লঙ্কা ও উচ্ছে। কিন্তু মানিকতলা মার্কেট এবং ল্যান্সডাউন মার্কেটে পটল-ঝিঙ্গে-ঢেঁড়স-বেগুন যে কে সে-ই। কোলে মার্কেটে বরং ঢেঁড়স আরও মহার্ঘ্য হয়েছে। কেন?
কোলে মার্কেটের ব্যবসায়ীদের পাল্টা প্রশ্ন, “যে সব সব্জির জোগান যথেষ্ট নয়, সেগুলোর দাম কমবে কী করে?” তাঁদের যুক্তি, দক্ষিণবঙ্গে ঘাটতি বর্ষার প্রভাব পড়েছে সব্জি উৎপাদনে। উপরন্তু যে ঝাড়খণ্ড কলকাতার বাজারে প্রচুর সব্জি জোগান দিত, সেখানেও অনাবৃষ্টিতে উৎপাদন কমেছে। তার প্রভাব পড়েছে বাজারে। তা হলে লঙ্কার দাম কমলো কী ভাবে? ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, এ দিন লঙ্কার জোগান আচমকা অনেকটা বেড়ে যাওয়াতেই দাম পড়েছে। কিন্তু গত ক’দিনে তো বৃষ্টি তেমন হয়নি! জোগান বাড়ল কী ভাবে? লঙ্কা কি মজুত রাখা হয়েছিল? মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কাই কি সত্যি?
কোলে মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ীদের অবশ্য ব্যাখ্যা, “এ দিন বাংলাদেশ থেকে কয়েক লরি কাঁচালঙ্কা আমদানি হওয়ায় দাম কমেছে।” ওঁদের বক্তব্য, বাংলাদেশে লঙ্কার দাম এতটাই কম যে, পাঁচ কেজি ২৮০ টাকা দরে বেচলেও পরিবহণ খরচ জুড়ে লাভ থাকছে। অন্য দিকে রাজ্য বিপণন দফতরের এক কর্তার দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই সব্জির দাম কমতে শুরু করেছে। আরও কমবে।” কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায়ও এ দিন বলেন, “বাজারে বাজারে নজরদারি শুরু হওয়ায় দাম কমেছে। মূল্যবৃদ্ধি রুখতে আইন কড়া করার কথা ভাবা হচ্ছে।”
উদ্যানপালন দফতর এ দিন সব্জি বিক্রি শুরু করেছে। সল্টলেকে চক্কর মেরেছে কৃষি বিপণনের সব্জিবোঝাই বাতানুকূল ভ্যান। বিভিন্ন মোড়ে তা দাঁড়িয়েছে, মানুষ সেখান থেকে কিনেছেন আলু, ঢেঁড়স, পটল, লঙ্কা। দর কোলে মার্কেটের পাইকারি দামের বেশি হলেও ল্যান্সডাউন-মানিকতলার অনেকটা কম। বিকেলে দেখা গেল, বিকাশ ভবনের কাছে দাঁড়ানো ভ্যানের সামনে রীতিমতো লাইন। ভ্যানের কাচের জানালায় সব্জির দর সাঁটা। লঙ্কা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙে ২০, পটল ২০, বেগুন ২৪। লাইনে দাঁড়ানো অনির্বাণ দত্ত বললেন, “সকালে বাজারে লঙ্কা কিনেছি ১৬০ টাকায়! এখানে সস্তা পেয়ে দু’শো গ্রাম কিনে রাখলাম।” এত কমে সব্জি বিক্রি হচ্ছে কী ভাবে?
উদ্যানপালন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, “চাষিদের থেকে সরাসরি কিনে বেচছি বলেই দাম এত কম।” শহরের রাস্তায় এমন মোবাইল ভ্যানের সংখ্যা বাড়ানোর আশ্বাসও দেন তিনি। বাম আমলে দাম বেড়ে যাওয়ায় রাজ্য সরকার কখনও মাছ, কখনও আলু বিক্রি করেছে। নতুন সরকারের ‘সব্জি বিক্রি’ দেখতে এ দিন সল্টলেকে হাজির ছিলেন ভাঙরের চাষি আনসার আলি। বললেন, “এত দিন গ্রামের বাজারে আড়তদারকে ফসল বেচতাম। এখন এরা (উদ্যানপালন) বেশি দাম দিচ্ছে। তাই ওদের দিচ্ছি।”
বিভিন্ন বাজারে আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ দিন পথে নেমেছে রাজ্যের টাস্কফোর্স। নেমেছে রাজ্য পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখাও। টাস্কফোর্সের সদস্যেরা এ দিন পুরভবনে বৈঠক করেন। তাঁদের পরিকল্পনা, কলকাতা পুরসভার আওতাধীন সাতটি বাজার থেকে সব্জি বিক্রি করা হবে। কোন কোন বাজার থেকে, আজ বুধবার তা চূড়ান্ত করবে টাস্ক ফোর্স।

সব্জি
কোলে মার্কেট* সরকারি গাড়িতে*
পাইকারি
মঙ্গলবার বিকেলে
ঢেঁড়স ১৪ ১৬ ২০
বেগুন (ছোট) ২২ ২২ ২৪
ঝিঙে ১৬ ১৬ ২০
লঙ্কা ৯২ ৫৬ ৮০
উচ্ছে ৩৫ ২৬ ৪০
পটল ১৬ ১৮ ২০

*
দাম টাকায় প্রতি কেজিতে



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.