কাজ শুরুর নির্দেশ
নিম্নমানের জিনিস দিয়ে সেতু তৈরির নালিশ, বাধা
ফের তৃণমূলের একাংশের বাধায় কেতুগ্রাম ২ ব্লকে উন্নয়নের কাজ আটকে যাওয়ার অভিযোগ উঠল।
দিন কয়েক আগেই ওই ব্লকের মৌগ্রাম পঞ্চায়েতের চরসুজাপুরে শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের ক্লাসঘর তৈরির কাজ আটকে দেয় তৃণমূলের একাংশ। এমনকী তদারকি কমিটি গঠনের পরেও মঙ্গলবার কাজ শুরু হয়নি। ইতিমধ্যেই সোমবার তৃণমূলের এক গোষ্ঠী নিম্নমানের কাঠ দিয়ে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে বলে সিতাহাটি পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র জমা দেয় বিডিওর কাছে। ঘটনাস্থলে যান বিডিও হেমন্ত ঘোষ। অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরে মঙ্গলবার থেকে পঞ্চায়েতকে ফের সেতু তৈরি শুরু করার নির্দেশ দেন তিনি। বিডিও বলেন, “বর্ষা শুরু হলে কাজ করা যাবেনা। তারপর আবার পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে। ফলে কাজটা আর না পিছিয়ে সমস্ত বাসিন্দাদের কাছে কাজ শুরু করার অনুরোধ করা হয়েছে।”
এই গ্রামের তিনদিকই জল দিয়ে ঘেরা। আর এক দিকে চাষের ক্ষেত। ফলে গ্রামে ঢুকতে গেলে ভরসা বাঁশের সাঁকো। এর উপর দিয়েই হেঁটে যাতায়াত করতে হয় স্কুল পড়ুয়া বা অসুস্থদের। বর্ষাকালে ভরসা নৌকা। সাইকেলও খালের পাড়ে রেখে আসতে হয় তখন। ফলে সেতুর কাজ আটকে গেলে সমস্যায় পড়বেন বিধানপল্লির মানুষেরা।
—ফাইল চিত্র।
স্থানীয়রা জানান, বাম আমলে বিধানপল্লির পাশ দিয়ে সেচ খাল কাটা হয়। কিন্তু কাঠের সেতু গড়া হয়নি। ফলে অসুবিধায় পড়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে থাকেন মানুষজন। তিন হাজার লোকের গ্রাম বছর খানেক আগে শ’দুয়েক বাসিন্দায় এসে দাঁড়ায়। আর বর্তমান জনসংখ্যা ১২০ জনের মতো। উদ্ধারণপুরের কাছে রাস্তার ধারে থাকছেন তাঁরা। গ্রামের একমাত্র স্কুলটাও উঠে যাওয়ার মুখে। সেখানে পড়ুয়া সংখ্যা ৮ জন। গ্রামের বাসিন্দা সাধন সরকার, বিশ্বনাথ বৈদ্যরা বলেন, ‘‘কাঠের সেতু হলে খুব উপকার হবে। অজয় ও ভাগীরথীর মাঝে অনেক খেত জমি রয়েছে। প্রচুর সব্জিও হয় সেখানে। সেতু হলে এলাকায় ব্যবসা বাড়বে। গ্রামেও লোক ফিরে আসবে।”
তৃণমূল পরিচালিত সিতাহাটি পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, ১০০ দিনের কাজে প্রায় চার লক্ষ টাকা ব্যায়ে ওই সেতু নির্মাণের কাজ চলছিল। অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে বিধানপল্লিতে গিয়ে সেই কাজ আটকে দেয় বিকাশ বিশ্বাস-সহ তৃণমূলের একাংশ এবং ‘নিয়ম বর্হিভূতভাবে’ ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ওই সেতু তৈরি করতে দেওয়া হবে না বলে কেতুগ্রাম ২ ব্লকের পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিককে জানিয়ে দেন বিকাশবাবু। সিতাহাটি পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের আতাউর রহমান চৌধুরীর অভিযোগ, “আগে বিজেপির বিকাশবাবু তৃণমূলের সমর্থনে পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন। তখন বিডিও কাঠের সেতু তৈরির জন্য বললেও তিনি কাজ শুরু করেননি। বরং তিনবার আটকে দিয়েছিলেন।” কেতুগ্রামের তৃণমূল নেত্রী এবং বিধানপল্লী স্কুলের শিক্ষিকা বনানী মাঝির দাবি, “ব্যক্তিগত ঈর্ষায় বিকাশবাবু কাজ আটকে দিয়েছেন। দলের এক গোষ্ঠীর মদতও রয়েছে তাতে।”
অভিযোগের জবাবে প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান বিকাশ বিশ্বাস বলেন, “বিজেপি ছেড়ে সদ্য তৃণমূলে এসেছি। ১০০ দিনের প্রকল্পের নিয়ম না মেনে ও নিম্নমানের জিনিস দিয়ে সেতু তৈরি হচ্ছিল বলে গ্রামবাসীরা কাজ আটকে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে দলের নেতা শ্যামল মুখোপাধ্যায় যা বলার বলবেন।” শ্যামলবাবু বলেন, “নিম্নমানের জিনিস দিয়ে কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল। বিডিওর সঙ্গে কথা হয়েছে। স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গেও কথা বলব। উন্নয়নের কাজ ব্যহত হবে না।”
তৃণমূলের কেতুগ্রাম ২ ব্লক সভাপতি দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “উন্নয়নে যারা বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে বিডিও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন। আমরা বাধা দেব না।” এ প্রসঙ্গে সিপিএমের ভাগীরথী-অজয় জোনাল কমিটির সদস্য প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীনও তৃণমূল উন্নয়নের কাজে বাধা দিয়েছে। এখনও দিচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.