মহেশ-সানিয়ার দ্রুত হারে মিক্সড ডাবলস নিয়ে বিতর্কের সমাপ্তি |
সুপ্রিয় মুখোপাধ্যায় • কলকাতা |
উইম্বলডন মিক্সড ডাবলসের প্রথম ম্যাচেই মহেশ-সানিয়া জুটির বিশ্রী হারে ভারতীয় টেনিসমহলে হতাশা আর স্বস্তি যেন পাশাপাশি বইছে! হতাশাফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়নদের পরের গ্র্যান্ড স্লামেই চূড়ান্ত ব্যর্থতায়। স্বস্তিঅলিম্পিকে ভারতের মিক্সড ডাবলস জুটি নিয়ে বিতর্কের কার্যত চূড়ান্ত পরিসমাপ্তিতে। লিয়েন্ডার পেজের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে তো শনিবার পরিষ্কার বলেই দেওয়া হল, “মহেশদের এই হারে অলিম্পিকে লিয়েন্ডার-সানিয়া জুটির খেলার ব্যাপারটা একেবারে সিমেন্ট-বাঁধাই হয়ে গেল। মহেশের আর মুখ রইল না ফেডারেশনের ওপর চাপ দেওয়ার যে, অলিম্পিক মিক্সড ডাবলসে ওকে আর সানিয়াকেই খেলানো উচিত।”
এ দিন অল ইংল্যান্ড ক্লাবের পাঁচ নম্বর কোর্টে মহেশ-সানিয়া যখন অস্ট্রেলীয়-রুশ জুটি পল হ্যানলি-আলা কুদ্রিয়াৎসেভার কাছে ৩-৬, ১-৬ হারছেন, ততক্ষণে ঠিক পাশের ছ’নম্বর কোর্টে স্তেপানেককে নিয়ে ডাবলসে দুর্দান্ত খেলা শুরু করে দিয়েছেন লিয়েন্ডার। এবং তৃতীয় সেটে ২-৫ পিছিয়ে পড়েও লিয়েন্ডাররা শেষ পর্যন্ত স্ট্রেট সেটে জেতেন ৬-২, ৬-৪, ৭-৬। সার্কিটে অনেক বছরের অভিজ্ঞ ইজরায়েলি জুটি অ্যান্ডি র্যাম-জোনাথন এরলিচের বিরুদ্ধে। |
লন্ডনে থাকা জয়দীপ মুখোপাধ্যায় যে ম্যাচটা দেখার পর কোর্ট থেকে বেরিয়ে ফোনে বললেন, “মিক্সড ডাবলসের হারটা অবশ্যই দুঃখের। যতই হোক দু’জন ভারতীয়ই তো হেরে গেল! কিন্তু এ বার আমাকে বলতেই হচ্ছে যে, সানিয়া বোধহয় এখন কোনও ইন্ডিয়ান পুরুষের সঙ্গেই খেলতে পছন্দ করছে না। অলিম্পিক ইস্যুতে মহেশ-লিয়েন্ডার দু’জনেই যে ভাবে টেনিসজগতের কাছে সানিয়ার প্লেয়ার হিসেবে সম্মান ডুবিয়েছে! নইলে যতই সারফেস চেঞ্জ হোক, দু’সপ্তাহ আগে একটা গ্র্যান্ড স্লাম জেতা জুটি সাধারণত পরের গ্র্যান্ড স্লামে প্রথম ম্যাচেই এত সহজে হারে না। এখানকার ঘাসের কোর্টেই তো সানিয়া ডাবলসে দুটো ম্যাচ খুব ভাল ভাবে জিতেছে! কিন্তু ওর মনের অবস্থা যদি সত্যিই খারাপ থাকে, অলিম্পিকে কী হবে কে জানে! তবে লিয়েন্ডার এত চাপের মধ্যেও খুব ভাল খেলছে। এখানে ওর দুটো ম্যাচ দেখে কথাটা বলছি। আর আজ ও তো একটা পয়েন্ট প্রমাণ করেও দিয়েছে।”
লিয়েন্ডারের খুব ঘনিষ্ঠ একজনও এ দিন বললেন, “মহেশ সব বুঝেও একগুঁয়েমি করছিল। সানিয়া আর ও, দু’জনেই বেসলাইন প্লেয়ার। স্লো ক্লে কোর্টে ওদের জুটির সফল হওয়ার সুযোগ বেশি। ফরাসি ওপেনে যেমন হয়েছে। কিন্তু ঘাসের কোর্টে সানিয়ার দরকার এমন পার্টনার যার কিনা নেট-প্লে দুর্দান্ত। সে রকম প্লেয়ার লিয়েন্ডারের চেয়ে ভাল এ দেশে আর কে আছে?” এআইটিএ-ও যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। ফেডারেশন সচিব ভরত ওঝা ফোনে বলেই দিলেন, “অলিম্পিকের জন্য সানিয়া-লিয়েন্ডার জুটির নাম পাঠানো হয়ে গেছে। কোনও ভাবেই সেটার পরিবর্তন ঘটবে না। এখন তো আরওই নয়।” তবে লিয়েন্ডারের ঘনিষ্ঠ মহলের মতোই এ দিন এআইটিএ কর্তাও স্বীকার করে নিলেন, অলিম্পিকে মিক্সড ডাবলসে প্লেয়ারদের ‘কন্ট্র্যাক্ট’ সইয়ের শেষ দিন ৩০ জুলাই। মহেশর দাবিই ঠিক। “তবে আজকের পর মহেশও আর এ সব নিয়ে ঘাঁটাবে না বলে মনে হচ্ছে,” বললেন লিয়েন্ডারের সেই ঘনিষ্ট। |