কালামের বইকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস-বিজেপি কাজিয়া
ত দিন পর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম তাঁর বইয়ে জানালেন, সনিয়া গাঁধী প্রধানমন্ত্রীর পদ প্রত্যাখ্যান করার নেপথ্যে তাঁর কোনও ভূমিকা ছিল না। সনিয়াই প্রধানমন্ত্রী হতে চাননি।
কালাম তাঁর ‘টার্নিং পয়েন্টস, এ জার্নি থ্রু চ্যালেঞ্জেস’ বইয়ে ‘বিতর্কিত সিদ্ধান্ত’ নামে একটি পরিচ্ছেদ রেখেছেন। সেখানে ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরের পর্ব প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, সে সময় অনেক রাজনৈতিক দলের নেতাই তাঁর সঙ্গে দেখা করে বলেছিলেন, কোনও চাপের কাছে মাথা নুইয়ে তিনি যেন সনিয়া গাঁধীকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত না নেন। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী তাঁদের কথা মানা সম্ভব ছিল না। বরং সনিয়া গাঁধী যদি প্রধানমন্ত্রী পদের দাবি জানাতেন তা হলে তাঁকে নিযুক্ত করা ছাড়া অন্য কোনও পথ ছিল না। কালাম এ-ও জানিয়েছেন, সনিয়া প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ধরে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ের কাজকর্মও এগিয়েছিল বেশ খানিকটা। কিন্তু সনিয়া শেষ মুহূর্তে মনমোহন সিংহের নাম সুপারিশ করায় ‘বিস্মিত’ই হন কালাম। নতুন করে চিঠিচাপাটি তৈরি করা হয় মনমোহনের জন্য।
কালামের বইয়ের এই অংশটিকে কেন্দ্র করেই আজ নতুন করে চাপানউতোর শুরু হয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি-র মধ্যে। সনিয়া যাতে প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন সে জন্য তাঁকে ‘বিদেশিনি’ আখ্যা দিয়ে লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর প্রবল সরব হয়েছিল বিজেপি। পরে তলে তলে বিজেপি ও রাজনৈতিক মহলের একাংশ এই প্রচারও চালায় যে, রাষ্ট্রপতির আপত্তিতেই সনিয়া পিছু হটেন। জনতা পার্টির নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এমনও বলেন যে নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি চিঠি পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতিকে। তাতে গুরুত্ব দিয়েই কালাম আপত্তি জানান সনিয়ার ব্যাপারে।
কিন্তু দীর্ঘ আট বছর পর কালাম সব জল্পনার অবসান ঘটানোয় আজ তেড়েফুঁড়ে ওঠেন কংগ্রেসের একাধিক নেতা। দলের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি ও দলের জাতীয় স্তরের নেতা সত্যব্রত চতুর্বেদী বলেন, “অন্তরাত্মার ডাকে সনিয়া যে নিজেই প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করতে চাননি, তা নিয়ে সংশয় ছিল না। সে দিক দিয়ে কালামের বইয়ে নতুন কিছু নেই। তবে তাঁর লেখা পড়েই বোঝা যাচ্ছে যে বিজেপি চায়নি সনিয়া প্রধানমন্ত্রী হোন। তাঁরা এ জন্য রাষ্ট্রপতির কাছেও দরবার করেছিলেন।” বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভি পাল্টা আক্রমণে বলেন, “সনিয়া প্রধানমন্ত্রী হননি ঠিকই। তবে দশ জনপথে বসে বকলমে তিনিই সরকার চালাচ্ছেন। কোনও দায়বদ্ধতা ছাড়াই সব ক্ষমতা ভোগ করছেন তিনি।” কালামের লেখার জেরে শুধু সনিয়াকে ঘিরে নয়, বিতর্ক বেঁধেছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অটলবিহারী বাজপেয়ীর ভূমিকা নিয়েও। কালাম লিখেছেন, গুজরাত দাঙ্গার পর তিনি সেখানে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী তাঁকে প্রশ্ন করেন, “এখনই গুজরাতে যাওয়া কি অপরিহার্য?” এ নিয়ে বিজেপি-র সমালোচনা করে কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ বলেন, “এর থেকেই প্রমাণিত হয় যে বাজপেয়ী নরেন্দ্র মোদীকে রাজধর্ম পালন করতে বলেছিলেন ঠিকই, কিন্তু তাঁকে আড়ালও করেছিলেন।”
তবে বছর আট বা তার বেশি আগের এই সব ঘটনা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হলেও কংগ্রেস মনে করে, বর্তমান রাজনীতিতে নতুন করে প্রভাব ফেলবে না এই বিতর্ক। একই মত সিপিআই নেতা ডি রাজারও। তাঁর কথায়, “সামনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বলেই কালামের মন্তব্যগুলি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আট বছর আগে কী হয়েছিল তা এখন ইতিহাস। এর বাড়তি কোনও তাৎপর্য নেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.