বারাসতে গ্রেফতার স্বামী
বিচ্ছেদ মামলায় কোর্টে এসে স্ত্রীকে কোপ
শুক্রবার দুপুরের বারাসত আদালত চত্বর। আইনজীবীদের সেরেস্তার সামনে আচমকাই ঘটে গেল ঘটনাটা। হঠাৎ আর্ত চিৎকারে দেখা গেল, এক যুবক দা হাতে এলোপাথাড়ি কোপ মেরে চলেছে এক যুবতীর মাথায়। ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে মাথা থেকে। আদালতের ভিড় ছুটল সেদিকে।
আদালত চত্বরে ওই রক্তারক্তি কাণ্ড দেখে ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করে দেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতা। পরে তাঁদের মধ্যেই কয়েক জন সাহস করে এগিয়ে গিয়ে হাতে অস্ত্র-সহ ধরে ফেলেন ওই যুবককে। সেরেস্তার সামনেই শুরু হয় গণপিটুনি। শেষে পুলিশ এসে জনতার হাত থেকে জখম ওই যুবককে উদ্ধার করে। যুবতী তত ক্ষণে দায়ের কোপে অজ্ঞান।
একটু পরেই পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আক্রমণকারী প্রসেনজিৎ মাঝি এবং আক্রান্ত জয়ন্তী মাঝি সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। বিয়ে হয়েছে বছরখানেক আগে। এ দিন বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করতে আসেন আদালতে। মামলার শুনানির শেষে এজলাস থেকে একই সঙ্গে বেরিয়ে সেরেস্তায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে দু’জনে বেরোন দুপুর ১টা নাগাদ। তখনই ওই ঘটনা!
জখম জয়ন্তী মাঝি। ডান দিকে অভিযুক্ত প্রসেনজিৎ। ছবি: সুদীপ ঘোষ
প্রসেনজিৎকে জনতার হাত থেকে ছাড়ানোর পর আদালতে হাজির পুলিশকর্মীরাই রক্তাক্ত জয়ন্তীকে নিয়ে যান বারাসত জেলা হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানান, জয়ন্তীর মাথায় তিনটি বড় ক্ষত হয়েছে। মোট ১১টি সেলাই পড়েছে মাথায়। রাতে তাঁর অবস্থায় কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ক্যানিংয়ের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ সেখানেই কারখানায় কাজ করেন। বছরখানেক আগে তাঁর সঙ্গে বারাসতের নীলগঞ্জের জয়ন্তীর বিয়ে হয়। জয়ন্তী এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নানা কারণে বিবাদ লাগত। জয়ন্তীর পরীক্ষার পরে ২৮ মে বারাসত আদালতে নিজেদের সম্মতিক্রমেই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন ওই দম্পতি। এ দিন ছিল মামলার শুনানি।
আদালত আগামী ৬ ডিসেম্বর ওই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে। এর পরেই ওই দম্পতি এজলাস থেকে বেরিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে সেরেস্তায় যান। সেরেস্তায় সেই সময়ে উপস্থিত কয়েক জন পরে বলেন, স্ত্রীকে মামলা প্রত্যাহার করে ঘরে ফেরার জন্য বার বার অনুরোধ জানাতে থাকেন প্রসেনজিৎ। কিন্তু সেই প্রস্তাবে জয়ন্তী রাজি হননি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, আইনজীবী তুহিনা সিংহ রায় জানান, জয়ন্তী সেরেস্তা থেকে বার হতেই পিছু নিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ। হঠাৎই ব্যাগ থেকে দা বের করে জয়ন্তীর মাথায় কোপ মারতে থাকেন। তদন্তকারীদের ধারণা, স্ত্রী মামলা তুলতে রাজি না হলে তাঁকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেবেন, এমন ভেবেই প্রসেনজিৎ সঙ্গে দা এনেছিলেন। জনতার মারে জখম ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত প্রসেনজিৎকে এ দিন অবশ্য জেরা করতে পারেনি পুলিশ।
প্রসেনজিতের সঙ্গে তাঁর মা সারথি মাঝিও এ দিন আদালতে এসেছিলেন। তাঁকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। কেন প্রসেনজিৎ এমন করলেন, তা জানতে সারথিদেবীকে জেরা করা হচ্ছে বলে তদন্তকারীরা জানান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.