|
|
|
|
|
|
উদাসীনতা |
বিপন্ন ঝিল |
দেবাশিস ঘোষ |
দীর্য দিন সংস্কার হয়নি। বাড়ির আবর্জনা থেকে জুতো কারখানার চামড়ার ছাট সবই ফেলা হয়। ফলে দিনে দিনে মজতে বসেছে হাওড়ার থানামাকুয়ার এইচআইটি ঝিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্রেফ প্রশাসনিক উদাসীনতায় ঝিলটি এখন মশা-মাছির আঁতুড়ে পরিণত হয়েছে।
হাওড়া পুরসভার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরগঞ্জ বাজার থেকে বকুলতলা থানামাকুয়া স্কুল পর্যন্ত বেগম রোকেয়া সরণি বরাবর বিস্তৃত ঝিলটি দৈর্ঘ্যে প্রায় এক কিলোমিটার। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে ঝিলের জল কাচের মতো স্বচ্ছ ছিল। মাছ চাষ হত। মাছ চাষের জন্য এইচআইটি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের লিজ দিত। তাঁরাই সংস্কার করে মাছ চাষ করতেন। ১৯৯৮-এ লিজ সংক্রান্ত বিবাদের জেরে এইচআইটি আর কাউকে ঝিলটি লিজ দেয়নি। অভিযোগ, ঝিলের পাড় দখল করে বাড়ি, ক্লাব, হোটেল গজিয়ে উঠেছে। ঝিলের এক পাশে খাটালও চলছে রমরমিয়ে। ঝিলের পশ্চিম পাড়ের বাড়িগুলির নিকাশিও ঝিলের
সঙ্গে যুক্ত।
|
|
বাসিন্দারা জানান, এই এলাকায় গরিব মানুষের সংখ্যা বেশি। তাঁরা অনেকেই পুরসভার জলের সংযোগ নিতে পারেননি। বাধ্য হয়েই অনেকে ঝিলের দূষিত জল ব্যবহার করেন। ঝিল সংস্কারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী, পরিবেশ দফতর, জেলাশাসকের দফতর এবং এইচআইটি-র কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কাজের কাজ কিছু হয়নি।
এলাকার নিকাশির ক্ষেত্রেও ঝিলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ড্রেনেজ ক্যানাল ও আরও একটি খালের সঙ্গে ঝিলটি যুক্ত। বর্ষার সময় এলাকার জল ঝিলের মাধ্যমে ড্রেনেজ ক্যানাল দিয়ে বেরিয়ে যায়। ঝিলটি পুরোপুরি বুজে গেলে বর্ষার সময় থানামাকুয়া অঞ্চল জলমগ্ন হবে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা।
ঝিল সংলগ্ন এলাকায় একটি মাত্র ভ্যাট রয়েছে। ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর সমীর সাহা বলেন, “ঝিল সংলগ্ন এলাকায় প্রস্তাবিত দু’টি ভ্যাট করার কথা। একটি করা গিয়েছে। বকুলতলা দিকের ঝিল পাড়ের বাসিন্দারা ভ্যাট করতে বাধা দিয়েছিলেন। অন্য কোথাও করা যায় কি না দেখছি।” |
|
এলাকার বাসিন্দা সোহারাবুদ্দিন বলেন, “এক কিলোমিটার বিস্তৃত এই ঝিল এলাকায় একটি মাত্র ভ্যাট যথেষ্ট নয়। কম করে তিনটি ভ্যাটের প্রয়োজন।” পাশাপাশি, পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের অভিযোগ, ‘‘প্রশাসনের অদক্ষতার জন্য শহর থেকে জলাশয় হারাতে বসেছে।”
এত দিনেও কেন ঝিলটি সংস্কার হয়নি? এইচআইটি-র চেয়ারম্যান শীতল সর্দার বলেন, “দায়িত্ব পাওয়ার পরে ঝিলটি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। ওখানে আবার সমবায় পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার প্রস্তাব রয়েছে। আলোচনা চলছে।” জেলাশাসক সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ বলেন ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ পরিবেশমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদারের কথায়: ‘‘এ বিষয়ে বিশদে কিছু জানি না। তবে স্থানীয় মানুষ, কাউন্সিলর বা সাংসদ যদি এ বিষয়ে আমার দফতরে যোগাযোগ করেন তা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
|
ছবি: রণজিৎ নন্দী |
|
|
|
|
|