মায়ের ‘অত্যাচার’, উদ্ধার পেল দত্তক ছেলে
রদুপুরে বাড়ির দরজা খোলা পেয়ে ছুটে বেরিয়ে গিয়েছিল একরত্তি ছেলেটি। সারা গায়ে মারধরের চাকা চাকা দাগ, মাথায় ক্ষত। সে দিন টহলদার পুলিশকর্মীরা বছর পাঁচেকের সায়ন মুখোপাধ্যায়কে ‘বাড়িতে’ ফিরিয়ে দিলেও ভরদুপুরের ওই দৌড়ই শেষ পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করল ‘নির্যাতিত’ জীবন থেকে। রাজ্যের শিশুকল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, বেলগাছিয়া মিল্ক কলোনির বাসিন্দা সঙ্ঘমিত্রা মুখোপাধ্যায় বছরখানেক আগে সায়ন নামে ওই শিশুটিকে দত্তক নিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, দত্তক নেওয়া ছেলের উপরে অকথ্য অত্যাচার চালাতেন তিনি। সমিতির কলকাতার চেয়ারপার্সন মিনতি অধিকারী বলেন, “শিশুটির সারা গায়ে প্রচণ্ড মারধরের দাগ রয়েছে। মাথাতেও আঘাত রয়েছে। বুধবার শিশুটিকে দেখার পরে সঙ্ঘমিত্রাদেবীর বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
গত মার্চে চিৎপুর থানার নর্দার্ন অ্যাভিনিউ থেকে ঋষিব্রত মল্লিক নামে এক শিশু উদ্ধার হয়। গ্রেফতার হন তার মা প্রিয়াঙ্কা মল্লিক। ওই ঘটনার দিন তিনেক পরে বাঁশদ্রোণী থেকেও একটি নির্যাতিত শিশুকে উদ্ধার এবং তার মা সাহিন বানুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
কী ভাবে উদ্ধার হল সায়ন? মিল্ক কলোনির বাসিন্দা সুমনা সেনগুপ্ত, সাহানা বাগচীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করলে টহলদার পুলিশ তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে যায়। তখনই শিশুটির শরীরে ক্ষতচিহ্ন দেখতে পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানান এলাকার কয়েক জন। সে দিনই তাঁরা সঙ্ঘমিত্রাদেবীর বিরুদ্ধে উল্টোডাঙা থানায় শিশু-নিগ্রহের অভিযোগে স্মারকলিপি জমা দেন। তাঁদের অভিযোগ, বছর পাঁচেকের শিশুটিকে এক বছর আগে ওই এলাকার রমণীমোহন ঘোষের বাড়িতে আনা হয়। রমণীবাবুর মেয়ে সঙ্ঘমিত্রা মুখোপাধ্যায় সায়নকে দত্তক নেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সঙ্ঘমিত্রা তার উপরে অত্যাচার চালাতেন। অভিযোগ যায় শিশুকল্যাণ সমিতির এক সদস্য এবং সমিতির সহযোগী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছেও। সেই অভিযোগ পাওয়ার পরে শুক্রবার রাতে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গিয়ে শিশুটিকে তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়।
যদিও সঙ্ঘমিত্রা কিছু দিন আগে দাবি করেন, পুরো বিষয়টিই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। শিশুটির উপরে কোনও অত্যাচার তিনি করেননি। তাঁর মতে, সায়নেরই কিছু ‘মানসিক সমস্যা’ আছে। তবে এ দিনের ঘটনার পরে সঙ্ঘমিত্রার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এ দিন ওই শিশু, তার মা ও এলাকার কয়েক জন বাসিন্দাকে ডেকে পাঠায় শিশুকল্যাণ সমিতি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরা জানালেও পুলিশ প্রথমে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে মিনতি অধিকারী বলেন, “এই ঘটনায় পুলিশের প্রাথমিক রিপোর্ট সন্তোষজনক নয়। তাই পুলিশকে সঙ্ঘমিত্রার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” শিশুটিও তার উপরে হওয়া অত্যাচারের বিবরণ সমিতির সদস্যদের দিয়েছে বলে খবর। মিনতিদেবী জানিয়েছেন, শিশুটি আপাতত হোমে থাকবে। তার চিকিৎসাও করানো হবে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.