চিকিৎসায় গড়িমসির অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে |
দায়িত্বের বাইরে সাহায্য কি অন্যায়, প্রশ্ন চিকিৎসকদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
রোগিণীর যন্ত্রণা দেখে তাঁকে কম দামে ওষুধ কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা করা কি অন্যায়? এই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক সম্রাট দত্ত এবং তার সহকর্মীদের অনেকেই। মঙ্গলবার হাসপাতালের চিকিৎসক এবং কর্মীদের একাংশ রোগিণীর অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, “অনেক সময়ই হাসপাতালে জরুরি ওষুধ এবং ইঞ্জেকশন মেলে না। সেই সময় খুব প্রয়োজন হলে চিকিৎসকেরা ওষুধ সংস্থার প্রতিনিধি কিংবা ডিস্ট্রিবিউটরদের থেকে কম দামে কেনার ব্যবস্থা করে দেন। এ ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছে। অথচ তার পরে যে অভিযোগ উঠেছে তা উদ্বেগজনক। এমন হলে আগামী দিনে রোগী, রোগিণীদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে কেউই নির্দিষ্ট দায়িত্বের বাইরে যেতে চাইবেন না।” এ ব্যাপারে সম্রাটবাবু জানান, তিনি প্রায় এক বছর ধরে ওই রোগিণীর চিকিৎসা করছেন। রোগিণী বারবার অনুরোধ করায় তিনি অর্ধেক দামে ইঞ্জেকশনের ব্যবস্থা করে দেন। তিনি বলেন, “ইঞ্জেকশনটি যাতে বিনে পয়সায় পান সে জন্য ওঁকে শল্য বিভাগে পাঠিয়েছিলাম। প্রায় একমাস ঘোরাঘুরির পরেও উনি ইঞ্জেকশন না পেয়ে বাইরে কিনতে যান। সেখানে দাম শুনে আমাকে তা কম দামে জোগাড় করার অনুরোধ করেন। ওঁর যন্ত্রণা কমাতেই আমি ইঞ্জেকশনটি কিনে ওঁকে দিয়েছি। তার পরে যে আমার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার যে অভিযোগ উঠছে তাতে আমি ব্যথিত।” কোচবিহারের ডাউয়াগুড়ির বাসিন্দা কাজলিদেবী জানান, গত সেপ্টেম্বর থেকে তিনি মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করাচ্ছেন। সম্প্রতি একটি ইঞ্জেকশন নেওয়ার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ জানাতে যান হাসপাতাল সুপারের কাছে। সে সময় জানা যায় হাসপাতালে ইঞ্জেকশন না থাকায় বাইরে থেকে কম দামে তা কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন ওই চিকিৎসক। প্রশ্ন উঠেছে, চিকিৎসক ইঞ্জেকশন কিনে দেওয়ার আগে কেন শল্য বিভাগে গিয়ে তিনি ওষুধ পাননি বা সেখান থেকেও কেনই বা এ ব্যাপারে হাসপাতালে সুপারের কাছে কোনও খবর যায়নি। কাজলিদেবী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে সুপারকে জানানোর পরেও কেন হাসপাতালে তাঁর ভর্তি বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে বৃহস্পতিবার তাঁকে ফের দেখা করতে বলায় তিনি এখনও হাসপাতালের বিশ্রামালয়েই রয়েছেন। অসুস্থ কাজলিদেবী বলেন, “সুপার কেন হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করলেন না বুঝতে পারছি না। অসুস্থ শরীর নিয়ে কষ্ট পাচ্ছি।” হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস বলেন, “ওই রোগিণী হাসপাতাল চত্বরে আছেন বলে জানতাম না। ওঁর চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে।” |