|
অধিকর্তা নিয়োগ নিয়ে
টালবাহানা, সঙ্কটে ব্লাডব্যাঙ্ক
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
|
আঞ্চলিক রক্ত সরবরাহ কেন্দ্রের অধিকর্তা নেই। যিনি সাধারণত ওই পদে নিয়োগ করেন, সেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ছুটিতে। উপাধ্যক্ষ নতুন অধিকর্তা নিয়োগ করায় তা নিয়েও জলঘোলা হচ্ছে। ফলে আঞ্চলিক কেন্দ্রের অধীনে থাকা সাতটি ব্লাডব্যাঙ্কের কাজকর্ম শিকেয়।
বর্ধমান আঞ্চলিক রক্ত সরবরাহ কেন্দ্রের অধীনে কালনা, কাটোয়া, দুর্গাপুর, আসানসোল, বর্ধমান ছাড়াও বীরভূমের সিউড়ি ও রামপুরহাটে সাতটি ব্লাডব্যাঙ্ক আছে। আঞ্চলিক কেন্দ্রের অধিকর্তা তপন ঘোষকে সম্প্রতি ‘কমপালসারি ওয়েটিং’-এ পাঠানো হয়েছে। তিনি স্বাস্থ্যভবনে বহাল। কিন্তু স্থায়ী অধিকর্তার অভাবে সাত কেন্দ্রে এইচআইভি, হেপাটাইটিস ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ, রক্তদান শিবির সংগঠন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মিলছে না রক্তের নমুনা পরীক্ষার কিটও। বকেয়া টাকা না মেলায় সরবরাহকারী সংস্থাগুলি কিট সরবরাহ করছে না। তৃণমূল প্রভাবিত প্রোগ্রেসিভ ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনও স্বাস্থ্য দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) তথা বর্তমানে বিশেষ সচিবের দায়িত্বে থাকা মনোজ চৌধুরী নতুন অধিকর্তা নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এই নিয়োগ যাঁর করার কথা, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুশ্রী রায় দীর্ঘদিন ছুটিতে থাকায় কাউকে নিয়োগ করা যায়নি। শেষে মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ তথা হাসপাতাল সুপার অসিতবরণ সামন্ত সোমবার প্যাথলজি বিভাগের চিকিৎসক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে ওই পদে নিয়োগ করে চিঠি দেন। কিন্তু এক শ্রেণির কর্মী তথা চিকিৎসক এই নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত সুপ্রিয়বাবুও ওই পদে যোগ দেননি। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের দাবি, সুপারের নির্দেশ দেরিতে আসায় তিনি যোগ দিতে পারেননি।
সুপার বলেন, “স্থায়ী অধিকর্তা না থাকায় কাজকর্মে অসুবিধা হচ্ছিল। কিট মিলছিল না। অধিকর্তার সই ছাড়া সাতটি ব্লাডব্যাঙ্কর কর্মীরা বেতন পর্যন্ত পেতেন না। তাই স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) তথা ভারপ্রাপ্ত বিশেষ সচিব আমায় ফোন করে অবিলম্বে ওই পদে কাউকে নিয়োগ করার নির্দেশ দেন। আমারও দ্বিধা ছিল, আমি কাউকে নিয়োগ করলে তা আইনবিরুদ্ধ হবে কি না। কিন্তু স্বাস্থ্যভবন থেকে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও সুপারের নির্দেশে কর্মী নিয়োগ হয়েছে। তাই আমি সুপ্রিয়বাবুকে ওই পদের দায়িত্ব নিতে নির্দেশ দিয়েছি।”
তাঁর নির্দেশ দেরিতে পৌঁছনায় সুদীপ্তবাবু দায়িত্ব নিতে পারেননি শুনে অসিতবাবু বলেন, “যাঁকে আঞ্চলিক রক্ত সরবরাহ কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাঁকে সে দায়িত্ব নিতেই হবে। যদি তিনি না নেন, তাহলে স্বাস্থ্যভবন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।” সুদীপ্তবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে আজ, বুধবার তিনি অধিকর্তা পদে যোগ দিতে পারেন বলে মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। |