মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন রোগীকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বাঁকুড়া |
স্বাস্থ্যকর্মীদের নজর এড়িয়ে অস্ত্রোপচার হওয়া এক বৃদ্ধকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার ঘটনা ঘটল। এ নিয়ে হইচই হতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তল্লাশিতে ‘মেল সার্জিক্যাল ডাউন ওয়াডর্’ থেকে মিলল এমনই মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রায় ৫০টি স্যালাইন। মঙ্গলবার এই ঘটনার পরেই হাসপাতাল সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “ওই স্যালাইনগুলি প্রায় একবছর আগে ‘মেল সার্জিক্যাল ডাউন ওয়ার্ডে’ জমা পড়ে। কিন্তু তারপরে আসা স্যালাইন ব্যবহার করা হলেও ওই স্যালাইনগুলি নীচে চাপা পড়ে থাকায় সম্ভবত ব্যবহার করতে ভুলে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে রোগীর দেহে ব্যবহার করার আগে স্যালাইনগুলির মেয়াদ দেখে নেওয়া উচিত।” তিনি জানান, ওই বৃদ্ধ সুস্থ রয়েছেন। |
দিন ছয়েক আগে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করান হয় বাঁকুড়ার ভাঙাবাঁধ গ্রামের বাসিন্দা ষাটোর্দ্ধ মদন পাত্রকে। পরের দিনই তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। তাঁর নাতি বিকাশ পাত্রের অভিযোগ, “সোমবার রাতে দাদুকে যে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছিল, সেই বোতলটির গায়ে লেখা ছিল এ বছরের এপ্রিল মাসেই মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। নার্সদের বলার পরে তাঁরা বোতল পাল্টে দেন। এ দিন সকালে ওই মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইনের বোতলটি নিয়ে গিয়ে হাসপাতাল সুপারকে দেখাই ও তদন্তের জন্য লিখিত অভিযোগ জানাই।” তাঁর আশঙ্কা, গত কয়েকদিন ধরে দেওয়া স্যালাইনগুলিরও সম্ভবত মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছিল। এ থেকে তাঁর দাদুর ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। আতঙ্ক ছড়ায় ওই ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা অন্য রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের মধ্যেও। তাঁদের প্রশ্ন, “হাসপাতাল এত উদাসীন হলে আমরা যাব কোথায়?” এক চিকিৎসক জানান, সময় উত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার ফলে গুনাবলী নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর ফলে জ্বরের মত সামান্য কিছু রোগ দেখা দিতে পারে। তবে ওই বৃদ্ধ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সুস্থ ছিলেন বলে খবর। হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার ও ফার্মাসিস্টদের মজুত স্যালাইনের মেয়াদ পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন সুপার। পরে তিনি বলেন, “মেল সার্জিক্যাল ডাউন ওয়ার্ডে প্রায় ৫০টি মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইনের বোতল পাওয়া গিয়েছে। আর কোথাও এমন স্যালাইন নেই।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে স্যালাইন আসার পরে তিনটি স্তরে সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখা হয়। স্যালাইন হাসপাতালে আসার পরে প্রথমে হাসপাতালের মেন স্টোর্স, তারপর সাব স্টোর্স ও শেষে ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। এতজনের নজর এড়িয়ে রোগীর শরীরে ওই স্যালাইন ঢুকল কী করে? সুপার বলেন, “খোঁজ নিয়ে জেনেছি এক বছর আগেই ওয়ার্ডে স্যালাইনগুলো চলে গিয়েছিল। নার্সদের ব্যবহারের আগে সতর্ক হওয়া দরকার।” নার্সিং সুপার দীপালি নাগ বলেন, “যে ভাবেই হোক একটা ভুল হয়ে গিয়েছে। ওই নার্সকে চিহ্নিত করা হবে।” |