নতুন স্কুটার কেনার পরে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ট্রায়াল দিতে সাত সকালে মাটিগাড়ার পরিবহণ নগরে হাজির হয়েছিলেন আশিঘর এলাকার তরুণ নিখিল চন্দ। মঙ্গলবারের ঘটনা। দুপুর ১২টা থেকে ট্রায়াল শুরু হয় বলে নিখিল সাড়ে ১০টায় সেখানে হাজির হন। মহকুমা পরিবহণ দফতরের উদ্যোগে পরিবহণ নগরীর একটি ফাঁকা মাঠে ট্রায়ালের ব্যবস্থা হয়েছে। সেখানে আরও শতাধিক লোকের সঙ্গে নিখিলও রোদে ঘেমেনেয়ে অস্থির। ক্ষুব্ধ নিখিলের প্রশ্ন, “মহকুমাশাসকের দফতর থেকে ট্রায়াল দেওয়ার ব্যবস্থা পরিবহণ নগরীতে আনা হলেও পরিকাঠামো তৈরি হল না। রোদের হাত থেকে বাঁচতে কোথাও একটু দাঁড়ানোর ব্যবস্থা নেই।” সেবক রোডের দুই মাইল এলাকার তরুণী সঞ্চিতা বসাক গত সপ্তাহে ট্রায়াল দিতে গিয়েছিলেন। সে দিন বৃষ্টি ছিল। সঙ্গে ছাতা থাকলেও ফাঁকা মাঠে ঝোড়ো হাওয়ায়, বৃষ্টিতে ভিজে জবজবে হয়েছেন তিনি। ওই তরুণী বলেন, “মহকুমাশাসকের দফতরের সামনের ঘিঞ্জি জায়গা থেকে সরানো হওয়ায় ভালই হয়েছে। তবে এখানে ট্রায়াল দিতে আসা লোকজনের জন্য দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা দরকার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মহিলাদের দাঁড়াতে হয়। শৌচাগারের ব্যবস্থাও নেই।” কেবল নিখিল কিংবা সঞ্চিতাই নন, মাটিগাড়া পরিবহণ নগরীতে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ট্রায়াল দিতে যাওয়া বাসিন্দাদের মধ্যে পরিকাঠামো নিয়ে ক্রমশ ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। বৃষ্টি কিংবা রোদে একটু দাঁড়ানোর ব্যবস্থা নেই। নেই পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা। মহিলাদের শৌচাগারের খোঁজে হন্যে হতে হয়। যখন মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে ট্রায়ালের ব্যবস্থা ছিল তখন স্থানাভাবের জন্য বাসিন্দাদের ক্ষোভ বাড়ছিল। এক চিলতে জমিতে কয়েকশো চালকের পরীক্ষা হত। তবে সেখানে জল কিংবা শৌচাগারের ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যা ছিল না। মূলত স্থানাভাবের কারণেই মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে থেকে মাস ছয়েক আগে ট্রায়ালের ব্যবস্থা পরিবহণ নগরীতে সরানো হয়। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের উদ্যোগে পরিবহণ নগরীতে ট্রাক টার্মিনাসের পাশে একটি ঘরের ব্যবস্থাও করা হয়। ওই ঘরে মহকুমা পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে হাই সিকিউরিটি নম্বর বিলির কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আর ট্রায়ালের ব্যবস্থা করা হয়েছে ওই খোলা মাঠে। দুপুরে শিলিগুড়ি থেকে একজন আধিকারিক সেখানে গিয়ে ট্রায়াল নেন। তার পরেই তিনি শিলিগুড়ি দফতরে ফিরে আসেন। মহকুমা পরিবহণ আধিকারিক রাজেন সুনদাস বলেন, “এসজেডিএ-র তরফেই মাঠে ট্রায়ালের ব্যবস্থা হয়েছে। খোলা মাঠে ট্রায়ালের ব্যবস্থা করতে হওয়ায় যে সমস্যা হচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। মাঠের একপাশে পানীয় জল, শেড এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা করতে এসজেডিএ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।” বাসিন্দাদের দুর্ভোগে পড়ার কথা জেনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, “ঘটনাটি জানতাম না। মাটিগাড়া পরিবহণ নগরীর ট্রাক টার্মিনাসে একটি সুলভ শৌচাগার রয়েছে। যাঁরা ট্রায়ালে আসছেন, সম্ভব দূরত্বের কারণে হয়তো সেটা ব্যবহার করতে পারছেন না। পরিবহণ দফতর এমন সমস্যার কথা জানিয়ে চিঠি পাঠালে নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |