মাঝরাতে স্ত্রী’কে খুন করে পালাল যুবক
মাঝরাতে ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী’কে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে পালিয়েছে এক যুবক। সোমবার গভীর রাতে শিলিগুড়ি থানার এয়ারভিউ মোড় লাগোয়া দুর্গানগর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম গায়ত্রী নায়েক (৪২)। তাঁর বাড়ি কোচবিহারের শীতলখুচিতে। বছর পাঁচেক আগে ডুয়ার্সের হ্যামিল্টনগঞ্জের যুবক নবীনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। পাঁচ মাস ধরে তাঁরা দুর্গানগর এলাকার একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিলেন। নবীন পেশায় গাড়ির চালক। তবে গায়ত্রীদেবীর তুলনায় নবীন প্রায় ১০ বছরের ছোট। নিহতের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তাঁর আগের পক্ষের ছেলেমেয়ে রয়েছে। তাঁর পেট, হাত, বুক-সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গভীর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজা বলেন, “স্বামী-স্ত্রী মধ্যে বয়সের অনেকটা ফারাক হয়েছে। প্রায়শই তাঁদের মধ্যে নানা কারণে গোলমাল হত বলে জানা গিয়েছে। গভীর রাতে মহিলার চিৎকারে ওই বাড়ির অন্য লোকজনকে ঘরের বাইরে আসলে সুযোগ বুঝে নবীন পালায়।” এএসপি জানান, খুনের কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিভিন্ন লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শিলিগুড়ির রেল পুলিশ সুপারের দফতরের পিছনেই রয়েছে শহরের কুমোরটুলি। এর ডান দিকেই মহানন্দা নদী লাগোয়া দুর্গানগর। মূলত বস্তি এলাকা হলেও কয়েকটি পাকা বাড়ি রয়েছে। জংশন এলাকার মুদির দোকানের মালিক উত্তম কুণ্ডুর বাড়িতেই পাঁচমাস আগে নবীন মাসিক ৭০০ টাকায় একটি ঘর ভাড়া নেয়। তাঁরা দু’জন ছাড়া আর কেউ সেখানে থাকত না। নবীন মূলত বিভিন্ন সংস্থার গাড়ি চালত। নবীনও আগে বিয়ে করেছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে জানিয়েছেন। তবে তা কতটা সত্য তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, শিলিগুড়ি থানার আইসি পিনাকী মজুমদার-সহ বিভিন্ন পুলিশ কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। খুনের কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।
তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা জানিয়েছেন, রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত গায়ত্রীদেবীর দেহটি বিছানার উপরেই পড়ে ছিল। ওই ঘর থেকেই একটি নতুন ছুরি উদ্ধার হয়েছে। ছুরিটি দেখার পর খুনটি পূর্ব পরিকল্পনামাফিক হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। রাত ৯টা নাগাদ নবীন বাড়িতে ফেরে। গায়ত্রীদেবীকে ভাত রান্না করতে বলেন। তার পরে ১১টার পর তাঁরা খাবার খেয়ে ঘরের দরজাও বন্ধ করে দেন। ওই বাড়িতে মালিক উত্তমবাবু ছাড়াও আরও দুই ঘর ভাড়াটে রয়েছেন। সবাই ওই সময় শুয়ে পড়েন। রাত ৩টা নাগাদ গায়ত্রীদেবীর আর্ত চিৎকারে সকলে জেগে যান।
উত্তমবাবুর স্ত্রী সান্ত্বনাদেবী জানান, চিৎকার শুরু সবাই বাইরে বার হয়ে আসি। ওঁদের ঘর ভিতর থেকে বন্ধ করা ছিল। আলোও নেভানো ছিল। নবীনকে ডাকাডাকি করতে সে প্রথমে সাড়া দেয়নি। দরজা ধাক্কাধাক্কি করতেই খুলছি বলে জানায়। এর পরে আলো নেভানো অবস্থায় দরজা খোলে। কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করতেই নবীন এগিয়ে পাশের বাথরুমের দিকে যায়। এই সময় আমার স্বামী-সহ অন্যরা দেহটি দেখেই নবীনকে ধরতে যান। ততক্ষণে সে পাঁচিল টপকে পালায়। সান্ত্বনাদেবীর কথায়, “আরেকটু হলে আমার স্বামী ওঁর পা প্রায় দেওয়ালের উপর ধরেই ফেলেছিলেন। এত দিন নবীনের অস্বাভাবিক কোনও আচরণ দেখেনি। কেন ও খুন করল তা পরিষ্কার নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.