আইন বদলে বিরোধীদের সমর্থন চান পঞ্চায়েতমন্ত্রী |
কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত আইনে সংশোধন চায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এ জন্য রাজ্য বিধানসভার সর্বদল কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিধানসভায় পঞ্চায়েত বাজেট গৃহীত হয়েছে। সেখানেই এই প্রস্তাব দিয়েছেন সুব্রতবাবু। কেন পঞ্চায়েত আইনের সংশোধন চাইছেন তিনি, তার ব্যাখ্যা দিয়ে সুব্রতবাবু জানান, কেন্দ্রীয় আইন মেনে রাজ্যে যে সমস্ত অর্থ আসে তা পঞ্চায়েত স্তরে পৌঁছে যায়। কিন্তু এই স্তরে দুর্নীতি ঠেকাতে আইন থাকলেও তা খুবই জটিল। এর সরলীকরণ প্রয়োজন। এ জন্য আইন সংশোধন করতে হবে। কেন্দ্রের কাছে এই দাবি জানাতে বিরোধীদেরও সঙ্গে চাই। তাই সর্বদল কমিটি গঠনের দরকার। আগামী পঞ্চায়েত ভোটের আগে এটাই যে তাঁর শেষ বাজেট-বক্তৃতা, সে কথা স্মরণ করিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, “এ রাজ্যের নিজস্ব পঞ্চায়েত আইনটি তৈরি হয় ১৯৭৭-এ। পরে কেন্দ্র আইন তৈরি করে।” তিনি বলেন, “আমি চাই পঞ্চায়েত ভোটের পর স্পিকারের অনুমতি নিয়ে কমিটি গড়া হোক। তাতে বিরোধীরাও থাকবেন। কেন্দ্রীয় আইন সরল করার দাবি জানাতে সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়েই দিল্লি যেতে চাই।” সুব্রতবাবুর অভিযোগ, “বিরোধীরা বাজেটের বিরোধিতা করতে গিয়ে পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে আক্রমণ করেছেন। কিন্তু পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় নীচের তলায় যারা অপরাধ করছেন, তাদের আটকানো যাচ্ছে না। ফলে উন্নয়নের কাজ বাধা পাচ্ছে।” ১০০ দিনের কাজ নিয়ে প্রাক্তন পঞ্চায়েতমন্ত্রী আনিসুর রহমানের সমালোচনার জবাবে সুব্রতবাবু জানান, বিরোধীরা বতর্মান সরকারের ৩২ দিনের কাজের সাফল্যকে খাটো করে দেখাতে যে সব তথ্য দিচ্ছেন, তা ভুল। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা প্রকল্পে তাঁর সরকারের সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন সুব্রতবাবু।
|
অর্থসঙ্কটেও কিষান মান্ডি গড়বে রাজ্য |
রাজ্যে মোট ৯২টি কৃষক বাজার বা কিষান মান্ডি গড়ে তোলা হবে। কোথায় কোথায় বাজারগুলি গড়ে উঠবে, তার জায়গাও চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে বলে মঙ্গলবার বিধানসভায় জানান রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। রাজ্যের তীব্র আর্থিক অনটন চলছে। এই অবস্থায় বাজার গড়া হবে কী ভাবে? বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এই প্রশ্ন উঠলে মন্ত্রী জানান, অর্থসঙ্কট সত্ত্বেও কিষান মান্ডি প্রকল্প যাতে দ্রুত রূপায়ণ করা যায়, সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ৯২টির মধ্যে বেশ কিছু বাজার রাজ্য সরকার নিজেদের খরচেই গড়ে তুলবে। অন্যগুলি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নির্মাণ হবে। নদিয়ার ন’টি ব্লকের সঙ্গে সঙ্গে বর্ধমানের মেমারি, গলসি, কেতুগ্রাম ও ভাতারে কৃষক বাজার গড়ে উঠবে। রাজ্যে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ৩৫-৪০ শতাংশই সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। সিপিএম বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লার প্রশ্নের উত্তরে অরূপবাবু জানান, বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে জেলায় জেলায় হিমঘর গড়া হবে। যে-সব জেলায় হিমঘর নেই বললেই চলে, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সেখানেই প্রথমে বাজার প্রকল্প রূপায়ণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
|
আবাসন পর্ষদে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ |
কাজে দক্ষতা বাড়াতে আবাসন পর্ষদের কর্মীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ, বুধবার থেকে আবাসন ভবনে এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হবে। আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মঙ্গলবার মহাকরণে বলেন, “পর্ষদের প্রায় ৯০% কর্মীই কম্পিউটার জানেন না। আজকের যুগে কম্পিউটার না-জানলে কাজে খুবই অসুবিধে। সেটা মাথায় রেখেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি।” আবাসন দফতর সূত্রের খবর, কর্মীদের কম্পিউটার জানা থাকলে পর্ষদের খরচ কমবে। অনেক কর্মী কম্পিউটার না-জানায় অনেক কাজই বাইরের সংস্থাকে দিয়ে করাতে হয়। তাতে পর্ষদের খরচ অযথাই বেড়ে যায়। কাজের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখেই কম্পিউটার প্রশিক্ষণের পাঠ্যক্রম তৈরি করা হয়েছে। যেমন, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা অ্যাকাউন্টসের কর্মীদের প্রয়োজন ভিন্ন। সেই কারণে তাঁদের জন্য আলাদা পাঠ্যক্রম। সরকারি সংস্থা ওয়েবেল-এর তত্ত্বাবধানে চলবে কর্মীদের এই প্রশিক্ষণ।
|
হলফনামায় গ্রাহ্য হবে নোটারির সই |
রাজ্যের খাদ্য, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ-সহ কয়েকটি দফতর নোটারি পাবলিকের সই করা হলফনামা নিতে চাইছে না। ফলে নানা কারণে ওই সব দফতরে জমা দেওয়া সাধারণ মানুষের আবেদনপত্র বিবেচিতই হচ্ছে না। মঙ্গলবার এই নিয়ে মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত জানান, মামলা চললেও নোটারি পাবলিকের সই করা হলফনামা অগ্রাহ্য করা যাবে না। যে-সব দফতরের বিরুদ্ধে হলফনামা না-নেওয়ার অভিযোগ হয়েছে, তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়েই তাদের বক্তব্য জানাতে হবে। রাজ্য সরকারের বেশ কয়েকটি দফতরে বিভিন্ন কারণে আবেদন করতে হলে সাধারণ মানুষকে হলফনামা দিয়ে কিছু তথ্য জানাতে হয়। সেই সব হলফনামায় নোটারি পাবলিকের স্বাক্ষর লাগে। মিসরিলাল শাহ, শৈলেনমোহন চট্টোপাধ্যায়-সহ ১০ জন আবেদনকারী হাইকোর্টে মামলা করে বলেন, ১৯৫২ সালের নোটারি আইন অনুযায়ী ঠিক করা আছে, কোন কোন ক্ষেত্রে নোটারি পাবলিকের সই করা হলফনামা গ্রাহ্য হবে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি দফতর নোটারি পাবলিকের সই করা হলফনামা জমা নেবে না বলে জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে। আবেদনকারীরা রাজ্যের মুখ্যসচিব, বিচারসচিব, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ সচিব ও খাদ্যসচিবের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাঁদের আইনজীবী বলেন, আইন নস্যাৎ করে কিছু দফতর ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। যা নোটারি আইন অমান্য করেছে। অগস্টে চূড়ান্ত শুনানি হবে বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি। তাঁর নির্দেশ, এখন নোটারি পাবলিকের সই করা হলফনামা গ্রহণ করতে হবে। কয়েকটি দফতরের জারি করা সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞপ্তি আপাতত স্থগিত করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
|
পিছোল পলিটেকনিক কাউন্সেলিং |
জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের কাউন্সেলিং এখনও শেষ হয়নি। তাই পলিটেকনিক কলেজগুলিতে ভর্তির জন্য কাউন্সেলিংয়ের দিন পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। ২৬ জুন ওই কাউন্সেলিং হওয়ার কথা ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে পলিটেকনিকের কাউন্সেলিং শুরু হবে। মঙ্গলবার বিধানসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে কারিগরি শিক্ষা মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় জানান, উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাদবপুরের আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় পলিটেকনিক কলেজে কাউন্সেলিং হবে। রাজ্য সরকার কাকদ্বীপে একটি পলিটেকনিক কলেজ গড়বে। তার জন্য পাঁচ একর জমি চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। খুব শীঘ্রই কারিগরি শিক্ষা দফতর ওই জমি পেয়ে যাবে বলে প্রশ্নোত্তর পর্বে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, “দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় একটি আইটিআই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলা হবে।” |