রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নন বাঁকুড়ার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরেরা।
আজ বুধবার, বাঁকুড়া পুরসভার সমস্ত তৃণমূল কাউন্সিলরকেই আলোচনার জন্য তৃণমূল ভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পুরপ্রধান শম্পা দরিপার বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী অলকা সেন মজুমদার-সহ অনাস্থা আনা ৬ কাউন্সিলর ওই বৈঠকে যাবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ ফোন করে উপপুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদারকে জানান, বুধবার দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ১১ জন কাউন্সিলরের সঙ্গে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা নিয়ে আলোচনায় বসতে চান। অলকাদেবীরা ওই বৈঠকে যাবেন না বলে তাঁকে জানিয়ে দেন।
অলকাদেবী বলেন, “জেলা সভাপতি বৈঠকে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁকে জানিয়ে দিয়েছি, আগে পুরপ্রধান পদত্যাগ করুক। তার পর অন্য কথা।” তাঁর অভিযোগ, বহুবার বাঁকুড়া পুরসভার অচলাবস্থা সম্পর্কে দলের রাজ্যস্তরের নেতাদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। রাজ্য নেতৃত্ব এই সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাতে চায়নি। তাঁর ক্ষোভ, “গত বছর পুজোর আগে তৃণমূল ভবনে আমাদের দলের দখলে থাকা পুরসভাগুলির পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধানদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে দলের রাজ্য সভাপতির কাছে আমি পুরপ্রধানের ‘কর্মকাণ্ডে’র কথা জানিয়েছিলাম। পুরপ্রধানকে তিনি সতর্ক করলেও, পুরপ্রধান নিজেকে শোধরাননি। এখন শুধুমাত্র দলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কারও উপর ভরসা নেই।” শুধু তিনি ডাকলেই অলকাদেবীরা বৈঠকে যাবেন বলে জানিয়েছেন। জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ-র সঙ্গে চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। জেলা কার্যকরী সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “বুধবারের বৈঠক নিয়ে আমি পুরপ্রধানের বিক্ষুব্ধ ৬ কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তাঁরা যেতে রাজি নয়। আমি তাঁদের ক্ষোভের কথা দলকে জানাব।”
পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে ‘একনায়কতন্ত্রের’ অভিযোগ তুলে গত শনিবার তৃণমূলের ৬ কাউন্সিলর ও কংগ্রেসের ৪ কাউন্সিলর পুরপ্রধানের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। শম্পাদেবী বলেন, “পুরপ্রধান হওয়ার পর থেকেই আমার বিরুদ্ধে ওঁরা কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছেন। তবে দল আমার কাজে খুশি। রেলমন্ত্রী মুকুল রায় সম্প্রতি একটি অ্যাম্বুলেন্স এই পুরসভাকে দিয়েছেন। বুধবারের বৈঠকেও আমি থাকব। দল নির্দেশ দিলে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াব।” প্রসঙ্গত, বছর দু’য়েক আগে তৃণমূলের কাউন্সিলররা শপথ নেওয়ার পরেই অলকাদেবী শম্পাদেবীর উপর প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখান। সময় যত গড়িয়েছে দু’জনের দূরত্বও বেড়েছে। |